আটলান্টিক মহাসাগরের কোল ঘেঁষে আফ্রিকার সবেচেয়ে পশ্চিম সীমান্তের দেশ মরক্কো। উত্তর দিকে মাত্র কয়েক কিলোমিটারের জিব্রাল্টার প্রণালী পেরুলেই ইউরোপ।
মরক্কোর দ্বিতীয় বৃহত্তম শহরের নাম মারাকেশ। মারাকেশকে অনেকে ‘রেড সিটি’ বা ‘রাঙা শহর’ নামেও ডাকেন। হাজার বছরের পুরনো এই শহরটি পর্যটকদের কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। বলা হয়, আসল ও ঐতিহ্যবাহী মরক্কো দেখতে হলে মারাকেশ আসতে হবে।
মারাকেশের উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থানের মধ্য রয়েছে, জিমা আল-ফানা, সুকস, শহরের দেওয়াল এবং ফটক, বাদি প্যালেস, রাজকীয় প্যালেস, বাহিয়া প্যালেস, কুতুবিয়া মসজিদ, বেন ইউসুফ মসজিদ, মোয়াসিন মসজিদ, সাদিয়ান মাজার শরীফ, সাত পীরের মাজার শরীফ, মারাকেশ জাদুঘর এবং মিউজিয়াম অফ ইসলামিক আর্ট। এখানকার হস্তশিল্প বিশ্বখ্যাত।
মারাকেশের অন্যতম আকর্ষণ কুতুবিয়া জামে মসজিদ। মসজিদটি বেশ দৃষ্টি-আকর্ষক ও সৌন্দর্যমণ্ডিত। প্রাচীন এই মসজিদটি মারাকেশের সবচেয়ে বড় মসজিদ। এ মসজিদের মিনার নির্মিত হয় খলিফা ইয়াকুব আল মনসুরের শাসনামলে ১১৮৪-১১৯৯)। এটি বিশ্বের সেরা মসজিদ-মিনারগুলোর একটি। এ মিনারের অনুকরণে স্পেনের সেভিলের গিরাল্ডা (বুরুজবিশেষ) ও আফ্রিকার রাবাতের হাসান বুরুজ নির্মাণ করা হয়।
মসজিদটি নির্মাণ করা হয় ঐতিহ্যবাহী আলমোহাদ স্থাপত্য ঘরানায় এবং এর বুরুজ বা মিনারে স্থান পেয়েছে চারটি তামার গোলক। বুরুজের উচ্চতা ৬৯ মিটার (২২১ ফুট) এবং পার্শ্বিক দৈর্ঘ্য ১২ দশমিক ৮ মিটার (৪১ ফুট)। মিনারটিতে একটির ওপর আরেকটি মোট ছয়টি কক্ষ স্থান পেয়েছে যেগুলোতে হেলানরীতিতে তৈরি করা হয়েছে সিঁড়ির পরিবর্তে বিশেষ পথ। এ পথ দিয়ে মুয়াজ্জিন ঝুল বারান্দায় উঠতে পারেন।
কথিত আছে, আদিতে মসজিদের গোলক ছিল তিনটি, যেগুলো ছিল খাঁটি সোনার তৈরী। চতুর্থ গোলকটি নির্মিত হয় ইয়াকুব আল-মনসুরের স্ত্রীর সৌজন্যে। তিনি রমজান মাসে একটি রোজা রাখতে ব্যর্থ হন। রোজা রাখতে ব্যর্থ হওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে তিনি তার স্বর্ণের অলঙ্করণ গলিয়ে চতুর্থ গোলকটি নির্মাণ করেন।
কুতুবিয়া মসজিদের নামকরণ করা হয়- আরবি শব্দ আল-কুতুবিয়ান থেকে যার অর্থ গ্রন্থাগারিক।
প্রতিদিন অনেক মুসল্লি কুতুবিয়া মসজিদে নামাজ আদায় করেন। এ মসজিদ পরিদর্শনেও আসেন অনেক মানুষ। কুতুবিয়া মসজিদ এই শহরের সবচেয়ে এক অন্যতম প্রধান আকর্ষণীয় স্থান।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘন্টা, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৫
এমএ/