ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইসলাম

একটি অবৈধ হত্যাই মানবজাতি হত্যার শামিল

এহসান বিন মুজাহির, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ২, ২০১৫
একটি অবৈধ হত্যাই মানবজাতি হত্যার শামিল

হত্যা-গুপ্তহত্যা জঘন্যতম একটি মহাপাপ। এটা ইসলাম ধর্মের আদর্শের সঙ্গে সাংঘর্ষিক।

হত্যা-গুপ্তহত্যা ইসলামে মহাপাপ। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআন কারিমে ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুসলমানকে হত্যা করবে, তার শাস্তি হবে চিরকাল জাহান্নাম। অর্থাৎ সে জাহান্নামে অনন্তকাল থাকবে। -সূরা আন নিসা: ৯৩

এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘যদি কোনো ব্যক্তি কোনো মানুষকে প্রাণের বিনিময়ে (লোভ-লালসা) অথবা দেশের মধ্যে কোনো অযথা ফেতনা-ফ্যাসাদ সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে হত্যা করে, সে যেন গোটা মানবজাতিকে হত্যা করলো। ’ –সূরা আল মায়েদা: ৩২

মহান রাব্বুল আলামিন কোরআন কারিমে ইরশাদ করেন, ‘যারা আল্লাহ এবং তার রাসূলের সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং দেশের মধ্যে কোনো ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে, তাদের শাস্তি হচ্ছে- তাদেরকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অথবা তাদের হাত-পা বিপরীতভাবে কেটে ফেলা কিংবা তাদেরকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া, আর এটা হচ্ছে দুনিয়ার শাস্তি। তবে আখেরাতের শাস্তি তার জন্য নির্ধারিত রয়েছে। ’ –সূরা আল মায়েদা: ১৪

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যদি আসমান জমিনের প্রত্যেকেই কোনো মুমিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে প্রত্যেককেই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। ’ -তিরমিজি শরিফ

হজরত ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘কিয়ামতের দিন সর্বপ্রথম মানুষের মধ্যে বিচার করা হবে খুন-হত্যা সম্পর্কে। ’ –সহিহ বোখারি ও মুসলিম

হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি বলেছেন, ‘কিয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীর চুলের মুঠো ও মাথা ধরে আল্লাহর দরবারে এমন অবস্থায় হাজির হবে যে, তখন তার রগসমূহ হতে রক্ত পড়তে থাকবে। সে ফরিয়াদ করবে, হে আমার প্রভু! এই ব্যক্তিই আমাকে হত্যা করেছে। এই বলতে বলতে সে আরশের নিকটবর্তী হয়ে যাবে। ’ –তিরমিজি

হজরত রাসূলুল্লাহ আরও ইরশাদ করেন, ‘দুনিয়াতে যে ব্যক্তি যাকে হত্যা করবে, সে ব্যক্তি কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে এসে সেই খুনি ব্যক্তি সম্পর্কে বলবে যে, সে আমার হত্যাকারী, আমি তার বিচার চাই। ’-মুসলিম শরিফ

হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘জুলুম কেয়ামতের দিন অন্ধকার হয়ে তোমার কাছে আসবে। ’ -ইবনে মাজা

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও ইরশাদ করেন, ‘ওই ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ মুমিন নয় যার মুখ ও হাত থেকে অপর কোনো মুমিন নিরাপদ নয়। ’ -বোখারি শরিফ

হজরত নবী করিম (সা.) আরও বলেন, ‘সে আমার উম্মত নয়, যে আমার অন্য কোনো উম্মতকে অবৈধভাবে হত্যা করে। ’ -আবু দাউদ শরিফ

উল্লেখিত কোরআনের আয়াত ও হাদিস দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় যে, একটি অবৈধ হত্যাকাণ্ড গোটা মানবজাতির হত্যার শামিল। যারা বৈধ কারণ ছাড়া আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রাণকে হত্যা করে তারা মহাপাপী। ইসলামের বিধান হলো- যে একটা প্রাণকে বাঁচাল সে যেন গোটা মানবজাতিকে বাঁচাল।

ইসলাম মতে গোনাহের মধ্যে সবচেয়ে বড় গোনাহ হলো, আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরিক করা এবং অন্যায়ভাবে, অবৈধ পন্থায় কাউকে হত্যা করা।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০২, ২০১৫
এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।