মুসি নদীর দক্ষিণ তীরে পুরোনো হায়দ্রাবাদ পর্যটক আকর্ষণের কেন্দ্র। এখানে রয়েছে বিখ্যাত সালার জং মিউজিয়াম (Salar jung Museum), চার মিনার, হাইকোর্ট, কুতুব শাহ গার্ডেনের মতো ঐতিহাসিক অনেক নিদর্শন।
সালারজং মিউজিয়ামটি আজও জীবন্ত। মিউজিয়ামটি গড়ে তোলেন নবাব মীর ইউসুফ আলী খান নামের এক সৌখিন মানুষ। তিনি সালার জং তৃতীয় নামে বিখ্যাত। নানান দুষ্প্রাপ্য আর অমূল্য জিনিস সংগ্রহ করা ছিল তার শখ। সারা জীবন তিনি যা সংগ্রহ করেছেন তার সব কিছুই আছে এখানে।
১৯৫১ সালে এই মিউজিয়ামটি নির্মিত হয়। ১৯৫৮ সালে ভারত সরকার মিউজিয়ামটি অধিগ্রহণ করে। বর্তমানে মিউজিয়ামটিতে ৩৮টি গ্যালারি আছে।
একদিনে দেখে শেষ করা যায় না এই মিউজিয়াম। দেশ-বিদেশের ঐতিহাসিক নানা অমূল্য সম্ভারের ভান্ডার এটি। এখানে ৪৩ হাজারের বেশি জিনিস আর ৫০ হাজারেরও বেশি বই রয়েছে। এটা ভারতের তৃতীয় বৃহত্তম জাদুঘর।
এই ঐতিহাসিক জাদুঘরে নতুনভাবে সংযুক্ত হচ্ছে, ইসলামিক আর্ট গ্যালারি। এই গ্যালারিতে কোরআন শরিফের বেশ কিছু দুর্লভ ও প্রাচীন পাণ্ডুলিপি প্রদর্শিত হবে। কোনো জাদুঘরের ইসলামি গ্যালারি হিসেবে ভারতে এটি প্রথম এবং বিশ্বে তৃতীয়।
সালার জং মিউজিয়ামের ইসলামিক আর্ট গ্যালারিতে থাকবে প্রাচীন ভারতের ইসলামি শিল্পের অনেক বিষয়। যেমন- পুরনো বিভিন্ন নকশার জায়নামাজ, মূঘল আমলে ব্যবহৃত তাসবিহ ও প্রাচীন আমলের নান্দনিক বিভিন্ন ক্যালিওগ্রাফি থেকে শুরু করে ইসলামি বইয়ের আড়াই হাজার দুর্লভ পাণ্ডুলিপি।
দুর্লভ পাণ্ডুলিপির মাঝে রয়েছে, হস্তলিখিত কোরআন শরিফ, কুফি, নাসখ, নাস্তালিক, রেইহান এবং ছালাছ বর্ণমালায় লিখিত কোরআন শরিফ। এসব পাণ্ডুলিপির অধিকাংশেই স্বর্ণ দ্বারা কাজ করা রয়েছে। তাই এসবের ঐতিহাসিক গুরুত্ব অনেক বেশি।
সালার জং মিউজিয়ামের ইসলামি গ্যালারিতে আরও থাকবে প্রাচীন একটি রেহেল, হরিণের চামড়ায় কুফি বর্ণমালায় লিখিত পবিত্র কোরআনের প্রাচীন কিছু পৃষ্ঠা, নবম হিজরিতে লিখিত কোরআন, ৩১ পাতার ওপর লেখা ২ সেন্টিমিটারের ক্ষুদ্র কোরআনের পাণ্ডুলিপি (এমন কোরআনের মাত্র দুইটি পাণ্ডুলিপি আছে। একটি আছে ইরানে অপরটি সালার জং মিউজিয়ামে) রয়েছে।
ইসলামি গ্যালারিটি এপ্রিল মাসে দর্শকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০৫৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৯, ২০১৭
এমএইউ/