এমন নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণকে কোনো ধর্মেই প্রশ্রয় দেওয়া হয়নি। কিন্তু চোরা না শোনে ধর্মের কথা।
ব্যস্ততা কিংবা পারিপার্শ্বিকতার চাপে বৃদ্ধ মা-বাবার খোঁজ রাখে না, দেখাশোনা করে না, বিশ্বে এমন মানুষের সংখ্যা একেবারে কম নয়। কিন্তু এখন থেকে এমন অমানবিক আচরণ করলে মাইনে থেকে কেটে নেওয়া হবে নির্দিষ্ট একটা অংশ। পরে সেই অর্থ বৃদ্ধ মা-বাবার কল্যাণে ব্যয় হবে।
ভিন্নধর্মী এমন একটি আইন করতে যাচ্ছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য আসাম।
রাজ্যের অর্থমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা সম্প্রতি বার্ষিক বাজেট বক্তৃতা দিয়েছেন। বক্তৃতায় সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের জন্য এমন একটি আইন প্রণয়নের ঘোষণা দেন তিনি। ২০১৭-১৮ অর্থবছর থেকেই নতুন আইনটি বাস্তবায়ন করা হবে বলেও জানান।
হিমন্ত বলেন, ‘বয়স্ক বাবা-মার যত্ন নেওয়া প্রত্যেক সন্তানের কর্তব্য। যদি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কেউ সেটা পালন না করেন, কর্তব্যে অবহেলা করেন, তবে রাজ্য সরকারই তার বেতন থেকে অর্থ কেটে নিয়ে সেই কর্তব্য পালন করবে। ’
প্রসঙ্গত, সন্তান বড় হলে নিজের মতো জীবনযাপন করা পশ্চিমা সমাজে সাধারণ একটি বিষয়। এজন্য সেসব দেশ বয়স্ক নাগরিকদের জন্য সামজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করেছে। প্রতিষ্ঠা করে বৃদ্ধাশ্রমের, প্রবর্তন করেছে বৃদ্ধ ভাতার।
সম্প্রতি ভারতীয় সমাজেও এ প্রবণতা প্রকট হয়ে উঠছে। আর্থিক সঙ্গতি থাকা সত্ত্বেও অনেকেই বয়স্ক মা-বাবার দেখভালে অপারগতা জানাচ্ছেন। ফলে জীবন সায়াহ্নে এসে এসব মানুষ অসহায় হয়ে পড়ছেন।
অনেক ক্ষেত্রে এমন অসহায় বাবা-মা আদালতেরও শরণাপন্ন হয়েছেন। কখনও কখনও কোর্টের রায়ে তারা সন্তানের বাড়িতে আবার ফিরে যাওয়ার অধিকার পেয়েছেন। কিন্তু সমস্যা দিন দিন বাড়ছে।
তাই আইন করে ক্রমবর্ধমান এ সামাজিক সমস্যা নিরসনে ব্যতিক্রমী উদ্যোগ নিয়েছে ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) নেতৃত্বাধীন আসাম সরকার। যা দেশটির ইতিহাসে প্রথম। তবে এ আইন বাস্তবে কতোটা প্রয়োগযোগ্য হবে- সেটাই এখন দেখার বিষয়।
-বিবিসি ও দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস অবলম্বনে
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ০৫০১ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১০, ২০১৭
এমএইউ/