সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সকাল পৌনে ৯টায় চরমোনাইর পীর আলহাজ হজরত মাওলানা মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করিম আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আগত লাখ-লাখ মুসল্লি আখেরি মোনাজাতে অংশ নেয়।
প্রতিবারের ন্যায় এবারও বিভিন্ন দেশের অসংখ্য ধর্মপ্রাণ ভক্ত-মুরিদান চমরমোনাই দরবারে হাজির হন। চরমনোই মাহফিলে অংশ নেওয়া প্রচুর নতুন মুসল্লি এই তরিকার বায়াত গ্রহণ করেছেন।
সোমবার বাদ ফজর আখেরি বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই বলেন, আল্লাহ এবং আল্লাহর রাসূলের তরিকা ও আদর্শ বাস্তবায়িত করতে হলে হাতপাখার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, মৃত্যুর পর মানুষের রাস্তা হলো- দু’টি। একটি জান্নাতের রাস্তা অপরটি জাহান্নামের। ঈমান মানে মুখে স্বীকার করা, অন্তরে বিশ্বাস করা এবং সে অনুযায়ী কাজ করা। মনে রাখবেন, কবরে চরমোনাইর পীরের মুরিদের পরিচয় কোনো কাজে আসবে না। সেখানে দেখা হবে আমল। আর দুনিয়া হলো- আখেরাতের কামাইয়ের জায়গা। আমল করার জায়গা।
পীর সাহেব চরমোনাই মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে বলেন, দুনিয়ার মামলায় একবার হেরে গেলে আবার উচ্চ আদালতে আপিল করে খালাসের আশা করা যায়। কিন্তু আখেরাতের মামলায় কোনো আপিল নেই, কোনো তদবির সেখানে কাজে আসবে না। একমাত্র কোরআন-হাদিস অনুযায়ী নিজের জীবন গঠন করে কবরে যেতে পারলে মুক্তির আশা করা যায়।
মোনাজাতপূর্ব বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই মানুষের কলব (হৃদয়) পরিষ্কারের প্রতি গুরুত্বারোপ করেন। তিনি বলেন, কলব পরিষ্কার করার একমাত্র ঔষধ হচ্ছে জিকির। বেশি বেশি আল্লাহতায়ালার জিকির করলে কলবের ময়লা দূর হয়। আর কলব পরিষ্কার হলে সেখানে পাপাচার-অনাচার বাসা বাঁধতে পারে না।
বাদ ফজর আখেরি বয়ানে পীর সাহেব চরমোনাই আরও বলেন, আমাদের দায়িত্ব হলো, ইসলামের কথা ও দাওয়াত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া। আমরা আপনাদের কাছে দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দিলাম; এটা মানা না মানা আপনাদের দায়িত্ব। যারা চরমোনাই এসেছেন তারা সব নির্দেশ মেনে চলবেন অন্যথায় চরমোনাই আসার দরকার নেই। কারণ আমরা পীর-মুরিদির ব্যবসা করি না। আমরা চাই, মানুষ বেশি বেশি দ্বীনের পথে চলুক, সৎভাবে জীবন কাটাক।
গত অগ্রহায়ণের মাসের মাহফিল থেকে শুরু করে সোমবার সকাল পর্যন্ত চরমোনাই তরিকার ৮ শতাধিক মুরিদ মৃত্যুবরণ করেছেন উল্লেখ করে পীর সাহেব চরমোনাই তাদের মাগফিরাতের জন্য সবাইকে মন খুলে দোয়া করার আহবান জানান।
বয়ান শেষে সকাল পৌনে ৯টায় আখেরি মোনাজাত শুরু করেন পীর সাহেব চরমোনাই। ২৫ মিনিটের মোনাজাতে তিনি মুসলিম উম্মাহর শান্তি ও নিরাপত্তা কামনা করেন। বিশেষ করে নির্যাতিত মুসলিম সম্প্রদায় ও রোহিঙ্গা মুসলমানদের শান্তির জন্য দোয়া কামনা করেন।
মোনাজাত শেষে আগত মুসল্লিরা শত শত বাস লঞ্চ ও ট্রলারযোগে নিজ গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওয়ানা করেন।
আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে মাহফিল স্থলের ৪টি মাঠ, নদীর তীর, আশপাশের বাগান ও ঘরবাড়ীর আঙিনায় মানুষ অবস্থান নেন।
আখেরি মোনাজাতে বরিশালের উপজেলা চেয়ারম্যান রিন্টু মিয়া, জেলা পরিষদের প্রশাসক মাইদুল ইসলাম, মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান গোলাম ফারুক টিপুসহ প্রশাসনের উচ্চপদস্থ অনেক কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৭
এমএইউ/