আরবি সাহিত্যে এমন শব্দের বহুল ব্যবহার রয়েছে। যেমন আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘অতপর আমি (নুহ) তাদেরকে উচ্চকণ্ঠে আহ্বান জানিয়েছি।
আল্লাহতায়ালা যে ক্ষমাশীল ও করুণাময় এমন কথা কোরআনে কারিমের অনেক আয়াতে নানাভাবে নানা প্রসঙ্গে বলা হয়েছে। ওইসব স্থানে বলা হয়েছে, আল্লাহতায়ালা অতিশয় ক্ষমাশীল ও মহা ক্ষমাকারী। বান্দা বার বার ভুল করে আল্লাহর দিকে ফিরে এসে ক্ষমা প্রার্থনা করলে, আল্লাহতায়ালা মাফ করে দেন। কারণ আল্লাহতায়ালা বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘হে নবী লোকদের বলে দাও, যদি তোমরা আল্লাহকে ভালোবাসো, তাহলে আমার অনুসরণ করো, আল্লাহ তোমাদের ভালোবাসবেন এবং তোমাদের গোনাহ মাফ করে দেবেন। তিনি বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়। ’ –সূরা আলে ইমরান: ৩১
অর্থাৎ যদি তারা আল্লাহর রাসূলের কর্মনীতিকে ভালোবেসে তা গ্রহণ করে তবে তাদের সব গোনাহ মাফ করে দেবেন। কারণ আল্লাহতায়ালা বড়ই ক্ষমাশীল ও করুণাময়। আল্লাহ এমনই করুণাময় গাফফার যে, চরম অপরাধের পর ফিরে এলে তিনি কাউকে ফিরিয়ে দেন না।
যেমন আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘ঈমানের নিয়ামত একবার লাভ করার পর পুনরায় যারা কুফরির পথ অবলম্বন করেছে, তাদের আল্লাহ হেদায়েত দান করবেন- এটা কেমন করে সম্ভব হতে পারে? অথচ তারা নিজেরা সাক্ষ্য দিয়েছে যে, রাসূল সত্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত এবং তার কাছে উজ্জ্বল নিদর্শন এসেছে। আল্লাহ জালেমদের হেদায়েত দান করেন না। তাদের ওপর আল্লাহ, ফেরেশতা ও সব মানুষের অভিশাপ, এটিই হচ্ছে তাদের জুলুমের সঠিক প্রতিদান। এই অবস্থায় তারা চিরদিন থাকবে। তাদের শাস্তি লঘু করা হবে না এবং তাদের কোনো বিরামও দেওয়া হবে না। তবে যারা তওবা করে নিজেদের কর্মনীতির সংশোধন করে নেয় তারা এর হাত থেকে রেহাই পাবে। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়। কিন্তু যারা ঈমান আনার পর আবার কুফরি অবলম্বন করে তার নিজেদের কুফরির মধ্যে এগিয়ে যেতে থাকে, তাদের তওবা কবুল হবে না। এ ধরনের লোকেরা পথভ্রষ্ট। ’ -সূরা আলে ইমরান: ৮৬-৯০
কোরআনে কারিমের অন্যত্র আল্লাহতায়ালা আরও বলেন, ‘হা-মীম এ কিতাব আল্লাহর পক্ষ থেকে নাজিলকৃত যিনি মহাপরাক্রমশালী, সবকিছু সম্পর্কে অতিশয় জ্ঞাত, গোনাহ মাফকারী, তওবা কবুলকারী, কঠোর শাস্তিদাতা এবং অত্যন্ত দয়ালু। তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। সবাইকে তার দিকে ফিরে যেতে হবে। ’ -সূরা মুমিন: ১-২
এখানে লক্ষণীয় যে, আয়াতে ক্রমানুসারে আল্লাহতায়ালার কতগুলো গুণাবলি উল্লেখ করা হয়েছে। প্রথম দু’টি গুণের পর ‘আল্লাহ গোনাহ মাফকারী ও তওবা কবুলকারী’ গুণটি বর্ণনা করার উদ্দেশ্য হচ্ছে- যারা এখন পর্যন্ত বিদ্রোহ করে চলেছে তারা যেন নিরাশ না হয় বরং একথা ভেবে নিজেদের আচরণ পুনর্বিবেচনা করে যে, এখনও যদি তারা এ আচরণ থেকে বিরত হয় তাহলে আল্লাহর রহমত লাভ করতে পারে।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘সাচ্চা ঈমানদার তো তারাই আল্লাহকে স্মরণ করা হলে যাদের অন্তর কেঁপে ওঠে। আর আল্লাহর আয়াত যখন তাদের সামনে পড়া হয়, তাদের ঈমান বেড়ে যায় এবং তারা নিজেদের রবের ওপর ভরসা করে। তারা নামাজ কায়েম করে এবং যা কিছু আমি তাদের দিয়েছি তা থেকে খরচ করে। এ ধরনের লোকেরাই প্রকৃত মুমিন। তাদের জন্য তাদের রবের কাছে রয়েছে বিরাট মর্যাদা, ক্ষমা ও উত্তম রিজিক। ’ -সূরা আনফাল: ২-৪
আল্লাহতায়ালা অতিশয় ক্ষমাশীল, মহাক্ষমাশীল। বান্দা জেনে অথবা না জেনে যত বড় অপরাধই করুক না কেন আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের কাছে ফিরে এলে তিনি ক্ষমা করে দেন। তিনি বান্দাদের ক্ষমাশীল দৃষ্টিতে দেখেন। সুতরাং কোনো অবস্থাতেই হতাশায় নিমজ্জিত নয়, সর্বাবস্থায় ভরসা রাখতে হবে আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের ওপর। তিনিই আমাদের শেষ আশ্রয়, তার দরবারই আমাদের চূড়ান্ত ঠিকানা।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২১৩০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৭
এমএইউ/