প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মোতাবেক হজ ব্যবস্থাপনায় অনিয়ম-দুর্নীতির রাহুমুক্ত ও দুর্ভোগ নিরসনের মাধ্যমে অতীতের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে নিবিড়ভাবে কাজ করছেন তিনি।
তার সময়ে সুষ্ঠুভাবে হজ পালন সম্পন্ন হওয়ায় বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে।
ডিজিটাল ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে হজের প্রাক নিবন্ধন সম্পন্ন করতে দিন-রাত পরিশ্রম করেছেন। মন্ত্রী মতিউর রহমান বলছেন, ডিজিটাল ব্যবস্থাপনায় এবার হজের প্রাক নিবন্ধন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। দেশের মানুষের আয় বাড়ছে।
একই সঙ্গে গত কয়েক বছর ধরে হজ পালনে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা বা অনিয়মের ঘটনা না ঘটায় এবারো সরকারি-বেসরকারি মিলে ১ লাখ ২৭ হাজার ৭৫৮ জন হজযাত্রী নিবন্ধন করেছেন।
এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় রয়েছে ১০ হাজার। আর গত বছরের প্রাক নিবন্ধিত হজযাত্রী রয়েছেন ৩৭ হাজার ৪৯৪ জন।
সম্প্রতি রাজধানীর মিন্টু রোডের বাসভবনে বাংলানিউজের সঙ্গে হজের প্রাক নিবন্ধন, ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন, অনলাইন সিস্টেম চালু, সরকারি খরচে হজব্রত পালনকারীদের তালিকা, প্রথমবারের মতো হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশসহ বিভিন্ন বিষয়ে খোলামেলা কথা বলেন মন্ত্রী।
ব্যাংকের মাধ্যমে প্রথমবারের মতো লেনদেনে নিজ মন্ত্রণালয়ের যুগান্তকারী উদ্যোগ সম্পর্কে ধর্মমন্ত্রী বলেন, হজকে নিরঙ্কুশ ও প্রশ্নাতীত করার জন্য ব্যাংকের মাধ্যমে লেনদেন করা হয়েছে। সৌদি সরকার ই-হজ ব্যবস্থা চালু করার পর আমরাও তাল মিলিয়ে সমন্বয় করেই হজ ব্যবস্থাপনাকে ডিজিটাল করেছি।
হজ ব্যবস্থাপনা ডিজিটাল করায় হজ যাত্রীদের জন্য সুফল বয়ে এনেছে। এর মাধ্যমে হজ্ব যাত্রীদের ভোগান্তি এবং হয়রানির অবসান হয়েছে মনে করেন তিনি।
প্রথমবারের মতো হজ্ব এজেন্সির তালিকা প্রকাশ প্রসঙ্গে ধর্মমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতেই দুই ধাপে হজ এজেন্সির তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় পর্যায়ে ১৯১টি হজ এজেন্সির নাম প্রকাশ করা হয়েছে। দেশের শীর্ষ স্থানীয় মিডিয়াতেও বিজ্ঞাপন দিয়ে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে।
হজ ব্যবস্থাপনায় কোনো প্রকার অনিয়ম মেনে নেওয়া হবে না জানিয়ে প্রিন্সিপাল মতিউর রহমান বলেন, এ ক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম দেখা গেলে দায়ী ব্যক্তি, এজেন্সি, কর্মকর্তা বা কর্মচারী যেই হোন না কেন, তাকে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।
প্রধানমন্ত্রীর প্রত্যক্ষ তত্ত্বাবধানে হজ ব্যবস্থাপনাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, হজযাত্রীরা হচ্ছেন আল্লাহর মেহমান। তাদের দেখভালের দায়িত্বটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ। আমাদেরকে অবশ্যই বাংলাদেশ ও সৌদি সররকারের নিয়ম নীতি মেনে চলতে হবে।
এবার প্রতিটি এজেন্সি দেড়শ’র বেশি হাজী রেজিষ্ট্রেশন করতে পারেনি, কোন প্রেক্ষাপটে এটা করা হয়েছে এমন প্রশ্নের জবাবে ধর্মমন্ত্রী বলেন, এজেন্সিগুলোর মাঝে অসম প্রতিযোগিতা ও অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধের জন্যই মূলত এ নিয়ম করা হয়েছে। এর মাধ্যমে প্রতিটি এজেন্সিকে কমপক্ষে ১৫০ জনের প্রাক-নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়।
সরকারিভাবে হজব্রত পালনে ইচ্ছুকদের তালিকা কোন মানদন্ডের ভিত্তিতে করা হয় এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারিভাবে যারা হজ পালন করেন তাদের তালিকা ধর্মমন্ত্রণালয় থেকে করা হয় এবং ব্যয়ভার বহন করা হয়।
এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতি ভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে কোঠা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। তার ওপর ভিত্তি করেই ধর্ম মন্ত্রণালয় সরকারি হজ তালিকা প্রণয়ন করে।
সরকারিভাবে গতবার হজ করতে যাওয়া একাধিক ব্যক্তি জানান, সরকারিভাবে হজ করতে গেলেও তাদের থাকার ব্যবস্থা হয় মক্কা শরীফ থেকে দূরবর্তী স্থানে। এ অভিযোগের ব্যাপারে ধর্মমন্ত্রী বলেন, সবার জন্য কাছাকাছি বাড়ি ভাড়া করা সম্ভব নয়। হজ প্রক্রিয়া শুরু হবার পরেই বিভিন্ন এজেন্সি সৌদি আরবে বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকে।
এ ক্ষেত্রে সরকারিভাবে যারা যান তাদের জন্য যে এলাকায় বাড়ি ভাড়া করা হয়ে থাকে তারা সেখানেই থাকেন। ইচ্ছাকৃতভাবে দূরে রাখার কারণ নেই, যোগ করেন প্রিন্সিপাল মতিউর।
হজ নিয়ে কোনো গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, অকারণে যদি এজেন্সি বা কেউ নিজের সুবিধার জন্য আমাদের উপর দায় চাপাতে চায় তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দৃঢ়তার সঙ্গে মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা অনুযায়ী হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেই হজ যাত্রীদের প্রাক-নিবন্ধন কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে।
তারা আমাদের সহযোগিতা করছে সবকিছু দুর্নীতিমুক্ত রাখতে। তাদের নিয়েই দিন-রাত আইনগতভাবে কাজ করছি।
বাংলাদেশ সময়: ১৬০০ ঘণ্টা, মার্চ ০২, ২০১৭
এমএএএম/বিএস