তারপরও সবকিছুতেই যেমন বিশেষত্ব থাকে আল্লাহর নিকট প্রার্থনারও একান্ত কিছু সময় আছে। সেগুলোকে হাদিসের ভাষায় আসমানের দরজা উম্মোচনের সময় বলে অভিহিত করা হয়েছে।
জোহরের পূর্বমুহূর্তে
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, নিশ্চয়ই আসমানের দুয়ারসমূহ খুলে দেওয়া হয় সূর্য মধ্যাকাশ থেকে পশ্চিমাকাশের দিকে হেলে পড়ার সময়। এরপর জোহরের নামাজ পর্যন্ত তা আর বন্ধ হয় না। -সহিহুল জামে: ১৫৩২
অর্থাৎ ঠিক দ্বিপ্রহরের পর থেকে জোহরের নামাজ পর্যন্ত সময়কে এখানে বুঝানো হয়েছে। এ সময়টি অতি গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) জোহরের ৪ রাকাত সু্ন্নত কখনও বাদ দিতেন না।
আজানের সময়
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, যখন আজান দেওয়া হয় আসমানের দুয়ারসমূহ খুলে দেওয়া হয় এবং দোয়া কবুল করা হয়। -সহিহুত তারগিব: ২৬০
এখানে আজান থেকে নিয়ে জামাত শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত এ সময়টিকে বুঝানো হয়েছে। এ সময়ে মনের যেকোন বাসনা আল্লাহর কাছে পেশ করার জন্য আদর্শ সময়।
এক নামাজের পর যখন অন্য নামাজের জন্য মানুষ অপেক্ষা করে
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, তোমরা সুসংবাদ গ্রহণ করো যে, তোমাদের রব আসমানের দুয়ার খুলে দিয়েছেন এবং তোমাদের নিয়ে ফেরেশতাদের সঙ্গে গর্ব করে বলছেন- ‘আমার বান্দারা আমার ধার্যকৃত ফরজ আদায়ের পর আরেক ফরজের জন্য অপেক্ষা করছে। ’ -ইবনে মাজা: ৮০১
রাতের শেষার্ধে
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, রাতের শেষার্ধ শুরু হলে একজন ঘোষক ঘোষণা দিতে থাকেন, কেউ কি কোনো আর্জি পেশ করার আছো? তার আর্জি গৃহীত হবে। কারও যাঞ্চা করার কিছু আছে? তা মঞ্জুর হবে। আছে কোনো বিপদগ্রস্থ? তার বিপদ দূর করা হবে। তখন পেশাদার ব্যভিচারীনী এবং ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অন্যায়ভাবে চাঁদাবাজি করা লোক ব্যতিত কোনো মুসলিমের দোয়া ব্যর্থ হয় না। -তারগিব: ৭৮৬
আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়ালহামদু লিল্লাহি কাসিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা- দোয়া পাঠের সময়
একদিন আমরা হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সঙ্গে নামাজ পড়ছিলাম। সে সময় সমাগত লোকদের থেকে এক লোক বলল, ‘আল্লাহু আকবার কাবিরা, ওয়াল হামদু লিল্লাহি কাসিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতান ওয়া আসিলা। ‘ (অর্থ: আল্লাহ মহান, অতি মহান, আল্লাহতায়ালার জন্য অনেক অনেক প্রশংসা এবং সকাল-সন্ধ্যা আমি আল্লাহর পবিত্রতা বর্ণনা করছি)
হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, এই কথা কে বলেছে? উপস্থিত লোকদের মাঝে এক লোক বলল, আমি হে আল্লাহর রাসূল! তিনি (নবী করিম সা.) বললেন, এ দোয়ায় আমি খুব আশ্চর্যান্বিত হয়েছি। এ বাক্যগুলোর জন্য আকাশের দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। ইবনে উমার (রা.) বলেন, হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কাছে আমি এ কথা শুনার পর থেকে কখনও তা পাঠ করা পরিহার করিনি। -সহিহ মুসলিম ও তিরমিজি
লেখক: প্রিচার অ্যান্ড ট্রান্সলেটর, পশ্চিম দাম্মাম ইসলামি সেন্টার, সৌদি আরব
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
এমএইউ/