ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

কাগতিয়া দরবারের মিরাজুন্নবী মাহফিল ও বার্ষিক ওরস পালিত

নিউজ ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
কাগতিয়া দরবারের মিরাজুন্নবী মাহফিল ও বার্ষিক ওরস পালিত কাগতিয়া দরবারের মিরাজুন্নবী মাহফিল ও বার্ষিক ওরস পালিত

চট্টগ্রাম রাউজান কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফে ভাবগম্ভীর পরিবেশে শেষ হয়েছে মিরাজুন্নবি (সা.) মাহফিল ও বার্ষিক ওরসে হজরত গাউছুল আজম (রহ.)।

সোমবার (২৪ এপ্রিল) ফজরের নামাজের পর খতম, মোরাকাবা, ঈসালে সওয়াব, মিলাদ ও মোনাজাতের পর খতমে কোরআন ও বোখারি শরীফের মধ্য দিয়ে শুরু হয় গাউছুল আজম (রহ.)-এর ওরসের কর্মসূচি।  

বার্ষিক ওরস উপলক্ষে দরবারের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল কোরআন-সুন্নাহর আলোকে একটানা দিন-রাতব্যাপী নানা কর্মসূচী।

আলোক সজ্জিত করা হয় মসজিদসহ পুরো দরবার শরিফ।  

কাগতিয়া দরবারের পক্ষ থেকে পূর্ব থেকেই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল ওরসে কারও কাছ থেকে গরু, মহিষ, ছাগল, টাকা, নজর-নেওয়াজ কিংবা এ ধরণের কোনো কিছু নেওয়া হবে না। চলবে না শরীয়ত পরিপন্থী কোনো কার্যকলাপ। শুধুমাত্র কোরআন-সুন্নাহর পূর্ণ অনুসরণে পালিত হবে যুগশ্রেষ্ঠ মনীষী গাউছুল আজম (রহ.)-এর বার্ষিক ওরস।  

এ মহা মনীষীর লাখো অনুসারী, ভক্ত, হাজার হাজার আলেম, হাফেজ, যুবক ও এলাকাবাসী থেকে শুরু করে সর্বস্তরের ধর্মপারায়ণ মুসলমান ভোর থেকেই টুপি ও তাসবিহ হাতে কেউবা পায়ে হেঁটে, আবার কেউবা গাড়িযোগে দলে দলে কাগতিয়া দরবারে আসতে শুরু করেন। প্রথমে জেয়ারত করে কোরআন তেলাওয়াত ও তাহলিল আদায় করতে থাকেন হাফেজ ও সাধারণ মুসলমানরা। আর আলেমরা আদায় করতে থাকেন খতমে বোখারি। ছোট শিশুরাও সমবেত হয়ে আল্লাহ আল্লাহ জিকির করতে থাকেন।  

শুধু দেশের নয়, সপ্তাহজুড়ে বাংলাদেশে আসা বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ মধ্যপ্রাচ্য, সৌদি আরব, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী কাগতিয়া দরবারের শত শত অনুসারী এতে অংশ নেন। জোহরের নামাজের পূর্ব পর্যন্ত চলতে থাকে এ কার্যক্রম।  

জোহরের নামাজের পর রওজা জেয়ারত শেষে শুরু হয় পবিত্র মিরাজুন্নবী (সা.) ও গাউছুল আজম (রহ.)-এর জীবনী শীর্ষক আলোচনা। এভাবে নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে চলতে থাকে ওরসের কাজ।  

বাদ এশা গাউছুল আজম (রহ.)-এর একমাত্র খলিফা মোর্শেদে আজম আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যে তিনি বলেন, কালজয়ী মনীষী গাউছুল আজম (রহ.)-এর কথা মানুষ কখনও ভুলবে না। ইসলামের মহান খেদমতগার, সুন্নতে মোস্তফার প্রচারক, যুগশ্রেষ্ঠ এ মনীষী ছিলেন- দেশ, জাতি ও মুসলিম মিল্লাতের পরম হিতাকাঙ্খী।

অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী আরও বলেন, বাল্যকালে এতিম হয়েও দৃঢ় মনোবলে শিক্ষাজীবনে অর্জন করেছিলেন সর্বোচ্চ ডিগ্রি, আর কঠোর ইবাদত-রিয়াজতের মাধ্যমে আধ্যাত্মিক সাধনায় অধিষ্ঠিত হয়েছিলেন বেলায়তের শীর্ষপদে। কর্ম-কীর্তিতে এ মনীষীর নাম ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে।

আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য রাখেন- মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশ ওলামা পরিষদের সভাপতি আল্লামা মুফতি মুহাম্মদ ইবরাহিম হানফি, সচিব আল্লামা মুফতি কাজী মুহাম্মদ আনোয়ারুল আলম ছিদ্দিকি, উপাধ্যক্ষ আল্লামা জাফর আহমদ ছিদ্দিকি, মুহাদ্দিস আল্লামা মুহাম্মদ আশেকুর রহমান, আল্লামা মুহাম্মদ এমদাদুল হক মুনিরি, মাওলানা ফরিদ আহমদ ছিদ্দিকী ও মাওলানা সেকান্দর আলী প্রমুখ।
  
মিলাদ, কিয়াম ও আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় বার্ষিক ওরসে হজরত গাউছুল আজম (রহ.)। মোনাজাত পরিচালনা করেন অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ আহমদী। মোনাজাতের সময় উপস্থিত মানুষের কান্না ও আমিন আমিন ধ্বনিতে চারিদিকে প্রকম্পিত হতে থাকে পুরো এলাকা। মোনাজাতে দেশ, জাতি ও মুসলিম উম্মাহর সমৃদ্ধি এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম (রহ.)-এর বিশেষ ফয়েজ কামনা করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৫, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।