ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

ইসলাম

শ্রমজীবীরা আল্লাহর বন্ধু

মাহফুজ আবেদ, অতিথি লেখক, ইসলাম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
শ্রমজীবীরা আল্লাহর বন্ধু ‘অতঃপর যখন নামাজ শেষ হবে, তখন তোমরা জমিনের বুকে ছড়িয়ে পড় এবং রিজিক অন্বেষণ কর’ -সূরা জুমা: ১০

মানুষ জীবন ধারণের জন্য যেসব কাজ করে, তাকে শ্রম বলে। মানুষ তার নিজের বেঁচে থাকার জন্য, পরিবারের ভরণ-পোষণের জন্য, অপরের কল্যাণে এবং সৃষ্টি জীবির উপকারে যে কাজ করে; তা-ই শ্রম।

মানুষের উন্নতির চাবিকাঠি হলো শ্রম। যে জাতি যত বেশি পরিশ্রমী, সে জাতি তত বেশি উন্নত।

সব ধরনের শ্রমিককেই মর্যাদা দিতে হবে। উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে শ্রমের মর্যাদা দেওয়া হয়, আমাদের দেশে সেভাবে শ্রমের মর্যাদা দেওয়া হয় না।

একজন দিনমজুরের শ্রম, কৃষকের শ্রম, শিক্ষকের শ্রম, অফিসারের শ্রম, ব্যবসায়ীর শ্রম- সবই সমান মর্যাদার অধিকারী। শ্রমের মর্যাদা সমাজের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে।

শ্রমের ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে নির্দেশ দিয়েছেন, ‘অতঃপর যখন নামাজ শেষ হবে, তখন তোমরা জমিনের বুকে ছড়িয়ে পড় এবং রিজিক অন্বেষণ কর। ’ -সূরা জুমা: ১০

মানুষের প্রয়োজনীয় কোনো কাজই তুচ্ছ নয়। মুচি জুতা সেলাই করেন, নাপিত চুল কাটেন, দর্জি কাপড় সেলাই করেন, ধোপা কাপড় পরিষ্কার করেন, জেলে মাছ ধরেন, ফেরিওয়ালা জিনিসপত্র বিক্রি করেন, তাঁতী কাপড় বুনেন, কুমার পাতিল বানান, নৌকার মাঝি মানুষ পারাপার করেন। এসব কাজ এতই জরুরি যে- কাউকে না কাউকে অবশ্যই কাজগুলো করতে হবে। এখন কেউ যদি এসব কাজ করতে এগিয়ে না আসতেন, তা হলে মানবজীবন অচল হয়ে পড়ত। কোনো কাজই নগণ্য নয় এবং যারা এসব কাজ করেন- তারাও হীন বা ঘৃণ্য নন।

ইসলামে শ্রমের মর্যাদা অত্যধিক। শ্রম দ্বারা অর্জিত খাদ্যকে ইসলাম সর্বোৎকৃষ্ট খাদ্য হিসেবে আখ্যা দিয়েছে এবং জীবিকা অন্বেষণকে উত্তম ইবাদত হিসেবে ঘোষণা দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘ফরজ ইবাদতের পর হালাল রুজি অর্জন করা একটি ফরজ ইবাদত। ’ –বায়হাকি

এ বিষয়ে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেছেন, ‘তিনি তোমাদের জন্য ভূমি সুগম করে দিয়েছেন। কাজেই তোমরা এর দিক-দিগন্তে বিচরণ কর এবং তার দেয়া রিযিক থেকে আহার কর। ’ -সূরা মুলক : ১৫

আমাদের প্রিয় নবী (সা.) শ্রমকে ভালোবাসতেন। তিনি নিজ হাতে জুতা মেরামত করেছেন, কাপড়ে তালি লাগিয়েছেন, মাঠে মেষ চরায়েছেন। নবী করিম (সা.) ব্যবসা পরিচালনাও করেছেন। খন্দকের যুদ্ধে নিজ হাতে পরিখা খনন করেছেন। বাড়িতে আগত মুসাফির কর্তৃক বিছানায় পায়খানা করে রেখে যাওয়া কাপড় ধৌত করে মানবতা ও শ্রমের মর্যাদা সর্বোচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শ্রমিকের মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘শ্রমজীবী আল্লাহর বন্ধু। ’ –বায়হাকি

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।