ঢাকা, শুক্রবার, ২১ আষাঢ় ১৪৩১, ০৫ জুলাই ২০২৪, ২৭ জিলহজ ১৪৪৫

ইসলাম

বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামিক জাদুঘর বানাবে সৌদি আরব

ইসলাম ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৩ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৭
বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামিক জাদুঘর বানাবে সৌদি আরব সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও মক্কা মিউজিয়ামের নকশা

মঙ্গলবার (০২ মে) আল আরাবিয়া টেলিভিশন চ্যানেলের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সৌদি আরবের ডেপুটি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ভবিষ্যতে দেশটির অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন।

দেশটির অর্থনৈতিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সৌদি আরব বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামিক জাদুঘর বানাবে বলে জানান ক্রাউন প্রিন্স।

ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সংস্কারের মূল শক্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

তার মতে, তেলের যাই হোক না কেন সৌদি আরবের অর্থনৈতিক সংস্কারের দিকে যেতেই হবে।

ক্রাউন প্রিন্স চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলেন, ২০২০ সালে যদি তেল বন্ধ হয়ে যায়- তাহলেও সৌদি আরব চলতে পারবে। প্রিন্স সালমান বলেন, অর্থনৈতিক দিক থেকে বর্তমানে সৌদি আরবের মানুষের জীবনযাত্রা পৃথিবীর সবচেয়ে উন্নত জীবনের মধ্যে অন্যতম।

‘কিন্ত সমস্যা হচ্ছে- মানুষের হাতে অর্থ থাকলেও সেগুলো খরচ করার কোনো জায়গা নেই দেশের ভেতরে। পৃথিবীর অনেক দেশের মানুষের উপার্জন সৌদি আরবের চেয়ে কম হওয়া সত্ত্বেও তাদের জীবনযাত্রার মান ভালো। কারণ সেসব দেশে বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের ব্যবস্থা আছে। সেসব দেশের নাগরিকদের উপার্জন কম হলেও তারা সে অর্থ খরচ করতে পারে এবং উপভোগ করতে পারে,’ -বলছিলেন সালমান।
ইসলামিক জাদুঘরটি মক্কার মানাফিয়া অঞ্চলে নির্মাণ করা হচ্ছে
তিনি মনে করেন, জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য বিনোদন এবং সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এ জন্য বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইসলামিক জাদুঘর গড়ে তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সৌদি কর্তৃপক্ষের। এ জাদুঘর যাতে ইউনেস্কো দ্বারা স্বীকৃত হয় সে বিষয়টিও নিশ্চিত করবে তারা।

সালমান বলেন, ‘পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইসলামিক দেশে একটি পূর্ণাঙ্গ ইসলামিক জাদুঘর নেই। এটা কীভাবে সম্ভব? যখন কোনো অমুসলিম সৌদি আরবে আসে তখন সে ইসলাম সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে না। কারণ সে কোনো জায়গা খুঁজে পায় না যেখানে গিয়ে ইসলাম সম্পর্কে জানতে পারে। ’

ইসলামিক জাদুঘরটি মক্কার মানাফিয়া অঞ্চলে নির্মাণ করা হচ্ছে। ‘মক্কা মিউজিয়াম’ নামে বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইসলামি জাদুঘরটি ২০৩০ সাল মেয়াদী সৌদি সরকারের মেগা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হবে।

জাদুঘর নির্মাণে সেরা নির্মাণ সরঞ্জাম এবং সর্বশেষ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। আন্তর্জাতিক মানের এ জাদুঘরটি প্রতিষ্ঠিত হলে- এটা হবে পর্যটক ও তীর্থযাত্রীদের অন্যতম প্রধান আকর্ষণের স্থান। এখানে এসে পর্যটকরা ইসলামের ইতিহাস, নতুন অভিজ্ঞতা এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কার্যক্রম উপভোগ করতে পারবেন।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ ইসলামি জাদুঘরটি ২০৩০ সাল মেয়াদী সৌদি সরকারের মেগা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্মাণ করা হবে
সৌদি সরকারের পরিকল্পনায় রয়েছে, এই জাদুঘরে মূল্যবান ঐতিহাসিক বস্তু এবং প্রাচীন ইসলামি যুগের জিনিস সংগ্রহ করে উপস্থাপন করার।  

আশা করা হচ্ছে, জাদুঘরটি ইতিহাসপ্রিয়, বিজ্ঞান গবেষক, মুসলিম পণ্ডিত, সুস্থ ইসলামি চিন্তাধারা লালনকারী ও ইসলামি সংস্কৃতির অনুসারীদের মনোযোগ আকর্ষণে সক্ষম হবে। বৃহৎ এই জাদুঘরে থাকবে সমৃদ্ধ একটি পাঠাগার ও গবেষণার জন্য আলাদা বিভাগ।

সৌদি কর্তৃপক্ষ আশা করছেন, আগামী ১৫ বছরের মধ্যে সৌদি আরব এমন একটি দেশে পরিণত হবে- যেখানে আগত গবেষকরা ইচ্ছা করলে- ইসলামের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সম্পর্কে পরিপূর্ণভাবে অবহিত হতে পারবেন।  

এই জাদুঘরে পুরনো মুসলিম ঐতিহ্য এবং ঐতিহাসিক জিনিসসমূহ, আধুনিক এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে উপস্থাপন করা হবে।

উল্লেখ্য, সৌদি আরবে মোট ১৩২টি জাদুঘর আছে। এর ত্রিশটি রয়েছে মক্কায়।

-আরব নিউজ অবলম্বনে

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, মে ০৩, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।