প্রায় আড়াইশ’ বছরের পুরনো নয়াবাদ মসজিদটি ধ্বংসের দাঁড় প্রান্তে দাঁড়িয়ে থেকেও রমজানে মাসব্যাপী সেহেরি, ইফতার ও তারাবি নামাজের আয়োজন করেছে।
এরই মধ্যে রমজানের তারাবিসহ অন্য নামাজ আদায়ের জন্য সব ধরনের পরিষ্কার- পরিচ্ছন্নতার কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে।
নয়াবাদ নূরানী হাফিজিয়া মাদরাসা ও এতিমখানার উদ্যোগে রমজানের প্রতিদিন ৩০ থেকে ৩৫ জন রোজাদারে জন্য আয়োজন করা হয়েছে সেহেরি ও ইফতারের।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, প্রায় আড়াইশ’ বছর আগে সম্রাট দ্বিতীয় শাহ আলমের রাজত্বকালে ১৭৯৩ সালের দিকে ১ দশমিক ১৫ বিঘা জায়গার ওপর নির্মাণ করা হয় নয়াবাদ মসজিদ।
মসজিদের বিশাল তিনটি গম্বুজ রয়েছে। গম্বুজগুলোই মসজিদের সৌন্দর্য। মসজিদের চার কোণে ১২ দশমিক ৪৫ মিটার ও ৫ দশমিক ৫ মিটার আকারের চারটি অষ্টভূজ মিনার এর বড়তি আকর্ষণ।
নির্মাণকালে মসজিদের দেওয়ালে ব্যবহার করা হয়েছে পোড়ামাটির টেরাকাটা কারুকাজ। যা সংস্কারের অভাবে ধসে বিলুপ্ত প্রায়।
এদিকে প্রাচীন এ মসজিদটির দক্ষিণ অংশ দেবে যাওয়া ও বিভিন্ন অংশ ধসে পড়ায় স্থানীয় ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা মসজিদের ভেতরে আতঙ্কে বেশি সময় অবস্থান করে না। আর এ জন্য এবার পবিত্র রমজান মাসে মুসল্লির সংখ্যা কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
দিনাজপুর জেলার কাহারোল উপজেলার রামচন মসজিদের ইউনিয়নের নয়াবাদ মিস্ত্রিপাড়ায় অবস্থিত নয়াবাদ মসজিদ কমিটির সভাপতি মো. আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে জানান, মসজিদটির সঠিক ইতিহাস এখনও জানা সম্ভব হয়নি।
রমজান উপলক্ষে মসজিদটির ভেতর ও বাইরে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ শেষ হয়েছে। মুসল্লিরা এবার হাফেজ মো. জাহিদুল হাসানের (৩০) পেছনে তারাবির নামাজ আদায় করবেন। জাহিদুল দীর্ঘ ছয় বছর থেকে এই মসজিদে তারাবি পড়ান।
রমজান মাসের মসজিদের সব ধরনের খরচ স্থানীয় মুসল্লিদের অনুদানে চলে। সরকারিভাবে মসজিদটিতে কোনো প্রকার আর্থিক অনুদান পাওয়া যায় না।
স্থানীদের অনুদানের জমাকৃত অর্থ থেকে মসজিদের নামে চার বিঘা জমি ক্রয় করা হয়। যার আয়ের অর্থ মসজিদের কাজে ব্যয় করা হয়।
দিনাজপুর জেলার প্রাচীনতম এই মসজিদটি আজ ধ্বংসের দাড় প্রান্তে। যেকোনো সময় ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। ধীরে ধীরে মসজিদের দেওয়ালের নকশাগুলো ধসে পড়ছে। হালকা বৃষ্টিতেই ছাদ থেকে পানি পড়ে। এলাকাকাসীর দাবি, অবিলম্বে ঐতিহাসিক নয়াবাদ মসজিদটির সংস্কার করা হোক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৫ ঘণ্টা, মে ২৭, ২০১৭
এএটি/এমএইউ/