দিনটি মুসলিমদের প্রথম কেবলা ‘বায়তুল মুকাদ্দাস’ পুনরুদ্ধারের দাবিতে আল-কুদস দিবস হিসেবেও পালিত হয়। ১৯৬৮ সালে ইসরায়েলি আগ্রাসনে মুসলিমদের হাতছাড়া হয় মসজিদে আল আকসা খ্যাত বায়তুল মুকাদ্দাস।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) রমজানের শেষ দশক ইতিকাফ করতেন। এ ছাড়া শুক্রবারে অারও বিশেষ কিছু ইবাদত করতেন। যেহেতু এখন চলছে রমজান মাস, আর আজ শুক্রবার, তদুপরি রমজানের শেষ শুক্রবার তাই মুসলমানরা এ দিনে নফল নামাজ আদায়, বিশেষ দোয়া ও মোনাজাত করেন দিবসটি পালন করবেন।
প্রতি বছরের মতো এবারও জুমাতুল বিদা উপলক্ষে রাজধানীর বায়তুল মোকাররমে অতিরিক্ত মুসল্লিদের নামাজ আদায়ের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে জানানো হয়, প্রতি বছর জুমাতুল বিদার দিন জুমার নামাজে লাখো মুসল্লি অংশ নেন। এবারও লক্ষাধিক মুসল্লি জুমার নামাজে অংশ নেবেন বলে আশা করছেন তারা।
পবিত্র রমজানের শেষের দিকে আখেরাতে বিশ্বাসী ও জান্নাতপ্রত্যাশী মানুষ সাধনা এবং আত্মপর্যালোচনা নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন। কোন কোন ইবাদত কী পরিমাণ করার পরিকল্পনা ছিল, সে পরিকল্পনার কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে আর কতটুকু বাকি আছে, সবাই সেই হিসাব কষছেন। এটা আমলের হিসাব। কেননা, আমলের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হয়ে থাকলে তা অর্জনে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। হাতে আছে আর মাত্র কয়েকটা দিন, যা করার এর ভেতরেই করতে হবে। অন্তত ইবাদতে বেশি সওয়াব লাভের সুযোগ শেষ হয়ে যাবে।
মহানবী (সা.) ইরশাদ করেছেন, ওই ব্যক্তির নাক কাটা যাক, যার কাছে আমার আলোচনা করা হলো; কিন্তু সে আমার ওপর দরুদ পড়ল না। ওই ব্যক্তির নাক কাটা যাক, যে রমজান মাস পেল এবং মাস শেষ হলো; কিন্তু তার গুনাহ ক্ষমা হলো না। ওই ব্যক্তির নাক কাটা যাক, যে ব্যক্তি পিতা-মাতাকে বার্ধক্যে পেয়েও জান্নাত লাভ করতে পারল না। -সুনানে তিরমিজি: ৩৫৪৫
একজন ঈমানদার বান্দার জন্য ওই হাদিসটি বেশ ভাবনার। রমজান মাস লাভ করার পরও যদি কোনো ব্যক্তি মাগফিরাত লাভ করতে না পারে, নিজের জীবনের গুনাহ মাফ করাতে না পারে, আল্লাহকে সন্তুষ্ট করতে না পারে, তাহলে তার পরিণতি কী হবে?
মহানবী (সা.) নিজের পবিত্র মুখে তার জন্য শক্ত কথা বলেছেন। নাক কাটা যাওয়ার ব্যবহারিক অর্থ হলো- ভাগ্য মন্দ হওয়া। আল্লাহর রাসূল (সা.) যদি কারও ব্যাপারে মন্তব্য করেন যে, তার ভাগ্য মন্দ হোক, তবে এ মন্দ যে কত ভয়াবহ ও গভীর হবে; তা কল্পনা করলেও ভয়ে শরীর শিহরিত হয়।
এখনও যে ক’দিন বাকি আছে, আমরা যদি সতর্ক হই, গুনাহ ছেড়ে দিই, বিশেষ করে চোখের, কানের ও জিহ্বার গুনাহ ছেড়ে দিই, অতীতের জন্য অনুতপ্ত হয়ে ইফতারের সময়, সাহরির সময় আল্লাহর কাছে মন থেকে মাফ চাই, তবে দয়ালু প্রভু অবশ্যই আমাদের মাফ করবেন। আমাদের প্রতি সদয় হবেন।
মাগফিরাত লাভের জন্য রমজানের শেষ দিনগুলোর প্রতিটি মুহূর্তকে কাজে লাগাই। ঈদের কেনাকাটায়, ঈদের প্রস্তুতিতে সময় কম দিই ইবাদতে সময় বেশি দিই। কেননা, আমি যদি রমজান মাসকে ব্যবহার করে মাগফিরাত লাভ করতে না পারি, তবে আর আমার ঈদ কিসের? প্রভুর মাগফিরাতবিহীন ঈদ সে তো ঈদ নয়, সে তো কান্না আর কান্না। রমজান শেষ হওয়ার পর সত্যিকার ঈদ তো তার, নিখিল সৃষ্টিজগতের সুমহান অধিপতির দরবার থেকে যে ব্যক্তি মাগফিরাত পেয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৪৫ ঘণ্টা, ২৩ জুন, ২০১৭
এমএইউ/