যারা শহর ছেড়ে গ্রামে কর্মরত তারা শহরমুখো। দুই ঈদে মানুষ আপনজনের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পান।
এ সময় যানবাহনের ওপর চাপ বাড়ে। এর সুযোগে পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের কাছ থেকে নানা অপকৌশলের আশ্রয় নিয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন। প্রশাসনের তরফ থেকে প্রতিবারই উদ্যোগ নেওয়ার ঘোষণা করা হয়। পরিবহন মালিক শ্রমিকদের পক্ষ থেকেও অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়ার কথা বলা হয়ে থাকে। কিন্তু কারুর কথার সঙ্গে বাস্তবতার মিল থাকে না। এবারও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে সংশ্লিষ্টরা তা স্বীকার করতে চান না। যাত্রীরা ঘরে ফেরার স্বার্থে বাধ্য হয়েই অতিরিক্ত ভাড়া দিয়ে টিকিট কেনেন। কেউ কেউ অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের কথা প্রকাশও করেন না।
অতিরিক্ত অর্থ দিলেই যাত্রা নিরাপদের হবে তার নিশ্চয়তা নেই। সকালের গাড়ি আসে বিকেলে। বিকেলেরটা পরদিন সকালে। তাও গাড়ি হয় লক্কড়ঝক্কড় মার্কা। যেদিন বাড়ি পৌঁছার কথা তা আর হয় না। কখনও কখনও গাড়ি গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে ঈদের দিন সন্ধ্যা হয়ে যায়। এমনকি ঈদের পরের দিন সকাল হয়ে যাবার ঘটনাও ঘটে। তখন আর ঈদের আনন্দ থাকে না। ক্লান্তি আর মনোকষ্ট নিয়ে একদিন পরেই আবার ফিরবার পালা শুরু। এমনই বিড়ম্বনাময় হয় অনেকের ঈদযাত্রা ও ঈদানন্দের দিনকয়েক।
এবারও এর ব্যতিক্রম হবে বলে মনে হয় না। এছাড়া দুর্ঘটনা ঘটে। প্রাণহানির মতো বেদনাদায়ক ও মর্মান্তিক ঘটনাও দেখতে হয় এমন আনন্দের দিনে। এবার অন্তত দুর্ঘটনা ও দুর্বিপাক যেন না ঘটে এমনই আমরা প্রত্যাশা করি।
রাস্তায় রাতে ডাকাতি ও ছিনতাইয়ের ঘটনাও ঘটে। এজন্য বাস, লঞ্চ, ট্রেন সবরকমের যানবাহন চালাতে সংশ্লিষ্টদের খুব সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
ঢাকা থেকে রওয়ানা দিয়ে যমুনা ব্রিজ যেতেই ৭ থেকে ৮ ঘন্টা লেগে যাচ্ছে বলে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে লাইভ ব্রডকাস্ট হচ্ছে প্রায়শ। এ অবস্থার অবসানে কার্যকার ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী নিশ্চয় অন্যায্য হবে না।
আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ, ট্রাফিক পুলিশ, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও পরিবহনের লোকেরা আন্তরিক হলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রীদের ভোগান্তি লাঘব করা অসম্ভব কিছু নয়।
যাই হোক, সকলের যাত্রা শুভ হোক। ঈদ হয়ে উঠুক আনন্দঘন ও শান্তিময়। অন্তত পবিত্র এই খুশির দিনে হিংসাবিদ্বেষ যাতে কারুর মনে স্থান না পায়। সম্প্রীতি আর সৌহার্দে যেন সবার মন ভরে থাকে। আশপাশের গরিব-দুঃখী মানুষও যাতে ঈদে বেদনাভারাক্রান্ত না থাকেন সেদিকে সামর্থবানদের নজর রাখতে হবে।
ঈদের আগেই সদকাতুল ফিতর গরিব মানুষের মাঝে বিতরণ করার নিয়ম। এবার সরকার কর্তৃক নির্ধারিত জনপ্রতি সর্বনিম্ন ফিতরা ৬৫ টাকা করা হয়েছে। তবে ইচ্ছে করলে সামর্থবানরা কিসমিস, খেজুর, খুরমা বা পনিরের দামেও ফিতরা আদায় করতে পারেন। এতে গরিব মানুষ বেশি উপকৃত হবেন নিঃসন্দেহে।
ঈদশেষে সবাই আবার নিজ নিজ কর্মস্থলে ফিরে আসুন সহিসালামতে এই কামনা রইল। শুভ হোক সবার ঈদযাত্রা এবং অনাবিল হয়ে উঠুক ঈদের আনন্দ। সবাইকে আগাম ঈদ মোবারক, ঈদ মোবারক আস সালাম।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৩ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৭
এমএইউ/