ঢাকা, শনিবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

যে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ১, ২০১৭
যে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয় যে নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জিত হয়

নামাজ আমরা অনেকেই পড়ি। কিন্তু সব নামাজের মান সমান নয়। কেউ নামাজ পড়েন মালিকের প্রতি কৃতজ্ঞতার মানসিকতায়, কেউ পড়েন গুরুদায়িত্ব মনে করে, কেউ পড়েন ঝামেলামুক্ত হওয়ার জন্য।

ইমাম ইবনু ক্বাইয়্যিম আল জাওযিয়া (রহ.) বলেন, নামাজ আদায় করতে যেয়ে মানুষ ৫ শ্রেণিতে বিভক্ত হয়।

১. আল্লাহর তিরস্কারপ্রাপ্ত: যার নামাজের কারণে সে আল্লাহর তিরস্কার ও শাস্তির উপযুক্ত হয়।

২. আল্লাহর জবাবদিহিতার মুখোমুখি: যার নামাজের ব্যাপারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে।

৩. ক্ষমাপ্রাপ্ত: যার নামাজের বিনিময়ে আল্লাহতায়ালা তার পাপরাশী ক্ষমা করে দেন।

৪. সওয়াব অর্জনকারী: যে তার নামাজের বিনিময়ে আল্লাহর কাছ থেকে সওয়াব বা পুণ্য অর্জন করে।

৫. আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত: যে তার নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করে।

আল্লাহর তিরস্কারপ্রাপ্ত মুসল্লি হলেন তিনি, যে নামাজের বিষয়ে যত্নশীল না। পবিত্রতা অর্জন এবং নামাজের রোকন, ওয়াজিব ও শর্তসমূহ যথানিয়মে পালন করেন না। তিনি নামাজের মাধ্যমে তিরস্কার ও সাজার উপযুক্ত হন।

আল্লাহর জবাবদিহিতার মুখোমুখি হবেন সে মুসল্লি, যিনি নামাজের রোকন, ওয়াজিব এবং শর্তসমূহ যথাভাবে পালন করেন ঠিক; কিন্তু শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নামাজে যা বলেন বা করেন তিনি সবই অবচেতন মনে। সালাম ফেরানো পর্যন্ত পুরো সময়জুড়ে তিনি অন্য জগতে বিচরণ করে বেড়ান। বরং কোনো কাজের তাগাদায় নামাজ থেকে নিষ্কৃতি লাভের জন্য ছটফট করতে থাকেন।

সেই মুসল্লি তার নামাজের মাধ্যমে ক্ষমাপ্রাপ্ত হন, যার নামাজের রোকন ওয়াজিব ও শর্ত সবই ঠিক থাকে।

নামাজ শুরুর পর থেকে তিনি প্রবৃত্তি ও শয়তানের সঙ্গে লড়াই করে মনযোগ ধরে রাখার চেষ্টা করেন। আপ্রাণ চেষ্টা অব্যাহত রাখেন যেন শয়তান তার নামাজ নষ্ট করতে না পারে। এক কথায় তিনি নামাজের মান সুন্দর রাখার জন্য নফসের সঙ্গে জিহাদে অবতীর্ণ হন। এ ধরণের নামাজি নামাজের বিনিময়ে আল্লাহর কাছ থেকে ক্ষমাপ্রাপ্ত হন।

নামাজের বিনিময়ে ক্ষমার পাশাপাশি বিশেষ সওয়াব অর্জনকারী মুসল্লি হলেন তিনি, যে আরকান, ওয়াজিবাত ও শর্তসমূহ এবং মনোযোগের সঙ্গে নামাজ আদায় করতে সক্ষম হন।

সর্বোচ্চ শ্রেণির মুসল্লি হলেন, যার নামাজের মাধ্যমে তিনি আল্লাহর নৈকট্য অর্জন করতে সক্ষম হন। এই শ্রেণির মুসল্লিরা নামাজের রোকন ওয়াজিব এবং শর্ত ও খুশু (মনযোগ) পূর্ণরূপে পালনের পাশাপাশি আল্লাহকে হাজির-নাজির জেনে ইবাদত করেন।

চতুর্থ প্রকার মুসল্লির সঙ্গে এই প্রকার মুসল্লির ব্যবধান এখানে। তাদের খুশু থাকে কিন্তু ‘যেন আল্লাহকে দেখছেন’ সেই ধ্যান ও কল্পনা নিয়ে নামাজ আদায় করতে পারেন না।

পক্ষান্তরে শেষ প্রকারের মুসল্লি অন্যসব যথাযথভাবে পালনের সঙ্গে সঙ্গে আল্লাহকে ‘সম্মুখে জেনে’ ইবাদত করেন। আর সে কারণে তাদের নামাজ  আল্লাহর নৈকট্য এনে দেয়।

-ইবনে ক্বাইয়্যিম আল জাওযিয়া রচিত আল ওয়াবিলুস সায়্যিব অবলম্বনে

ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ০১, ২০১৭
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।