সৌদি আরব প্রবর্তিত এই আইন নিয়ে অনেকেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তাদের বক্তব্য, সৌদি কর্তৃপক্ষ হজপালনকারীদের কাছ থেকে বেশি রোজগারের জন্য এমন আইন করছেন।
তবে দেশটির হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য, অনাকাঙ্খিত ভীড় এড়াতে এবং দ্বিতীয়বার হজ পালনে মানুষকে নিরুৎসাহী করতে এ আইন করা হয়েছে।
এই বিতর্কের মাঝেই আরেকটি নুতন ঘোষণা এলো। নতুন ঘোষণামতে সৌদি আরবের নাগরিকদের হজের খরচ বেড়েছে ৪ গুণ। অর্থাৎ সৌদি আরবের নাগরিকদের হজ করতে এবার আগের চেয়ে ৪ গুণেরও বেশি অর্থ খরচ করতে হবে।
যেখানে গত বছরও সৌদি নাগরিকদের হজ পালনের জন্য খরচ হতো মাত্র সাড়ে তিন হাজার রিয়াল। সেখানে এবার সৌদির নাগরিকদের হজপালনে খরচ হবে প্রায় ১৪ হাজার সৌদি রিয়াল। বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৩ লাখ ৪ হাজারের মতো। সৌদি গেজেটে প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব জানা গেছে।
দেশটির হজ ও ওমরা মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে গণমাধ্যমটি জানায়, এবার মোট ২ লাখ ৩৯ হাজার সৌদি নাগরিক হজ করার সুযোগ পাবেন। সে লক্ষ্যে দেশটির ২৫০ হজ এজেন্সির মধ্যে মোট ১১৪টি এজেন্সিকে লাইসেন্স প্রদান করা হয়েছে।
নতুন নিয়মে এবার থেকে সৌদির নাগরিকরা মক্কায় আবাসন, পরিবহন ও ট্রেন ব্যবহার করতে পারবেন। আগে অবশ্য অভ্যন্তরীণ হজযাত্রীরা নিজ দায়িত্বে মক্কায় থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করতেন।
মন্ত্রণালয় থেকে হজযাত্রীদের ভিআইপি সুবিধা দেওয়ার বিষয়েও বেশ কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। এমনকি এরকম সুবিধা দেওয়া অনেক এজেন্সির লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে। এজেন্সিগুলো অবৈধভাবে ভিআইপি সুবিধার কথা বলে ও আকর্ষণীয় তাঁবুর ছবি দিয়ে বিজ্ঞাপন প্রচার করেছিলো।
এই হজ মৌসুমে ভর্তুকি দিয়ে ২৩ হাজার ৪৭৭ জনকে হজ করার সুবিধা দেওয়া হবে। এর মধ্যে ১০ হাজার বিশেষ সুবিধাপ্রাপ্ত বলে প্রতিবেদনটিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
সুবিধাপ্রাপ্তদের অধিকাংশই রাজকীয় মেহমান হিসেবে হজ পালন করবেন। এর মধ্যে মিসর ও ফিলিস্তিনের ১ হাজার করে ২ হাজার শহিদ পরিবারের সদস্য রয়েছেন। এ ছাড়াও থাকবেন বিভিন্ন মুসলিম দেশের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রী ও সরকারের উচ্চ পর্যায়ের কমকর্তা থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন এমন গুণীজন।
গত ১০ বছরের তুলনায় গত মৌসুমে সব থেকে কম মানুষ হজপালন করেছেন। ২০১৬ সালে মোট ১৮ লাখ ৬০ হাজার জন হজপালন করেছেন। এর মধ্যে ১৩ লাখ ২৫ হাজার ৩৭২ বিদেশি এবং ৫ লাখ ৩৭ হাজার ৫৩৭ জন অভ্যন্তরীণ।
আর ২০১২ সালে এই দশকের সব চেয়ে বেশি মানুষ হজপালন করেছেন। ওই বছর প্রায় ৩১ লাখ ৬০ হাজার হজযাত্রী হজপালন করেছেন।
বিদেশিদের মধ্যে হজপালনের ক্ষেত্রে সৌদি সরকার যে কোটা বেঁধে দিয়েছিল সম্প্রতি তা তুলে নেওয়ায় এ বছর বাংলাদেশসহ সব দেশ থেকে অন্তত ২০ শতাংশ বেশি মানুষ হজ করার সুযোগ পাবেন।
হজপালনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার কোটা সবচেয়ে বেশি। ওই দেশ থেকে প্রায় ২ লাখ ২০ হাজার মানুষ প্রতি বছর হজে যান। এই সংখ্যা মোট হজযাত্রীর প্রায় ১৪ শতাংশ।
এরপরেই রয়েছে পাকিস্তান (১১%), ভারত (১১%) আর বাংলাদেশের (৮%) অবস্থান। এবার বাংলাদেশ থেকে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মোট ১ লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জন হজযাত্রী হজপালনের জন্য সৌদি আরব যাবেন।
হজপালনের ক্ষেত্রে নাইজেরিয়া, ইরান, তুর্কি ও মিসর থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজারের মতো হজযাত্রী হজপালনের নিমিত্তে সৌদি যাবেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০১৭
এমএইউ/