বর্তমানে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্মভিটাকে বানানো হয়েছে একটি লাইব্রেরি। আর ইসলামের দুশমন আবু জাহেলের ভিটাকে করা হয়েছে টয়লেট।
শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) ৫৭১ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা আবদুল্লাহ, মাতা আমেনা। নবী করিম (সা.) জন্মগ্রহণ করেন কাবাঘরের সন্নিকটে তার পিতৃভূমিতে। কারও কারও মতে, স্থানটি সাফা পর্বতের কাছে অবস্থিত। যদিও অবস্থানগতভাবে দু’টো বাড়িই কাবার কাছাকাছি। সাফার কাছে কাবা, কাবার কাছে সাফা আর কাবা ও সাফার কাছে নবীর বাড়ি।
বর্তমানে নবী করিম (সা.)-এর জন্মস্থান হিসেবে যে বাড়িটি চিহ্নিত করা আছে, সেটা আদতে ছিলো নবী করিম (সা.)-এর পূর্বপূরুষ হাশেম ইবনে আবদে মানাফের মালিকানাধীন। পরে উত্তরাধিকার সূত্রে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর পিতা আবদুল্লাহর ভাগে পড়ে। নির্ভরযোগ্য ঐতিহাসিকদের অনুসন্ধান ও বর্ণনামতে, এ ঘরে হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর জন্ম হয়। এমনকি হজরত খাদিজা (রা.)-এর সঙ্গে বিয়ের আগ পর্যন্ত তিনি এ ঘরেই বসবাস করতেন।
কালের পরিক্রমায় প্রাচীন বাড়িটি নষ্ট হয়ে গেলে শায়েখ আব্বাস কাত্তান এখানে নতুন ইমারত নির্মাণ করেন এবং তাতে ‘মাকতাবায়ে মক্কা’ নামে একটি পাবলিক লাইব্রেরি স্থাপন করেন।
এখন অবশ্য লাইব্রেরিটি বন্ধ। বাড়িটি দেখতে প্রতিদিন প্রচুর মানুষের ভিড় হয়। বাড়িটি মসজিদে হারামের সীমানা সংলগ্ন দক্ষিণ-পূর্বদিকে অবস্থিত।
সেখানে সৌদি সরকারের সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ বিভাগের একটি অফিস রয়েছে। তারা এখানে দর্শনার্থীদের আসতে বারণ করে। তাদের যুক্তি, এই স্থানটি নবীর জন্মস্থান- এর নির্ভরযোগ্য কোনো প্রমাণ নেই। তারা এ সংক্রান্ত কিছু প্রচারপত্রও ঝুলিয়ে রেখেছে। সেখানে লেখা আছে, এ স্থানটি নবী করিম (সা.)-এর জন্মস্থান মর্মে কোনো প্রমাণাদি পাওয়া যায় না।
তাদের একজনকে বললাম, তোমরা তো অনেক কিছুই ভেঙে ফেলেছো, এ বাড়িও ভেঙে ফেলো? সে আর আমার সঙ্গে কথা বললো না।
বাড়ির দেয়ালে মানুষজন অনেক কিছু লিখে রেখেছে। এসব লেখার অধিকাংশই মনোবাসনা পূরণ বিষয়ক। অনেককে লেখতেও দেখলাম অন্য আরও স্থানের ন্যায়। অনেকে মোনাজাত করছে, আবার কেউ নামাজ পড়ছে।
আর অদূরে আবু জেহেলের বাড়ি হাজার হাজার মানুষ টয়লেট সারছে। যুগে যুগে ইসলাম বিদ্বেষী ও ইসলামের শত্রুদের পরিণতি এমনই হয়। আবু জেহেলের বাড়ি যার অন্যতম উদাহরণ।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০১৭
এমএইউ/জেডএম