তবে সচ্চরিত্রের কিছু দিক রয়েছে, যা সবার কাছে কাঙ্খিত। কোরঅান-হাদিস চয়ন করে অভিজ্ঞতার আলোকে ইসলামি স্কলাররা বেশ কিছু গুণের কথা বলেছেন।
ব্যবহারে বিনয়ী হতে হবে এবং কোনোরূপ গর্ব করলে চলবে না। কোনো আস্থার আসনে বসানো হলে, সেই আস্থা অক্ষুন্ন রাখাতে হবে। সর্বদা সত্য কথা বলতে হবে, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে সবার প্রতি স্নেহ-মায়া-মমতা, দয়া ও শ্রদ্ধা প্রদর্শন করতে হবে।
যার সহায়তা প্রয়োজন তাকে সাহায্য করা এবং সাহায্য না চাইলেও দুঃস্থকে সহায়তা দেওয়া। ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের আসনে থেকে ক্ষমা করতে শেখা। অপরের সৎ চিন্তাকে মূল্যায়ন করা। অন্যের প্রতি বন্ধুসুলভ হওয়া এবং তাদের সঙ্গে বন্ধুর মতো ব্যবহার করা।
কেউ পরামর্শ চাইলে আন্তরিকভাবে পরামর্শ দেওয়া, যে যার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নয়; তার সঙ্গে সে ব্যাপারে কথা না বলা। বেশি প্রয়োজন না হলে অন্যের কাছ থেকে কোনো কিছু না চাওয়া। কৃত ওয়াদা অক্ষুন্ন রাখা।
রাগ প্রশমিত করে জীবন চলা, কোনো বিষয়ে অযথা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেওয়া বা দেখানো থেকে বিরত থাকা।
সর্বদা ধৈর্যশীল হওয়া। আগে যার সঙ্গে ঝগড়া-বিবাদ হয়েছে এমন কাউকে সম্ভাষণ জানিয়ে আন্তরিকতা প্রদর্শন করা। দায়িত্বদানকারী অথবা কোনো কাজে নিয়োগকারীর পরিবার ও আত্মীয়ের কল্যাণ নিশ্চিত করা। পরনিন্দা না করা। মিতচারী হওয়া।
জীবনে আল্লাহতায়ালা যা দিয়েছেন, তা নিয়ে সন্তুষ্ট ও পরিতৃপ্ত হওয়া। তুচ্ছ বিষয় ছেড়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোনিবেশ করা। দুষ্ট লোকদের মোকাবেলায় দূরদর্শীতার পরিচয় দেওয়া। অন্যের সঙ্গে উপহার বিনিময় করা।
যে ভালো কাজ করতে চায় তাকে ভালো কাজের দিকে যেতে সহায়তা করা, মন্দচারীকে ভালো কাজের জন্য উৎসাহ দেওয়া।
সম্ভব হলে বিবাদমান পক্ষসমূহের মধ্যে মধ্যস্থতা করা। কোনো কাজ করার আগে ওই কাজের ফলাফল সম্পর্কে চিন্তা ভাবনা করে নেওয়া। অন্যের প্রতি সদয় হওয়া। অন্যান্যরা তাকে যা গোপন করতে বলে সেটা এবং অন্যদের ব্যাপারে সে যা জানতে পেরেছে তা গোপন রাখা।
কোনো মুসলমান মনোক্ষুন্ন হয়েছে, এমন কাজ করলে সেজন্য ক্ষমা প্রার্থন করা। যে দুর্ব্যবহার করেছে তাকে ক্ষমা করে দেওয়া। কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে আনন্দচিত্তে সাক্ষাৎ করা।
ভালো লোক হলে তাদের সঙ্গে মেলামেশা করা, অন্যথায় নির্জনতা অবলম্বন করা শ্রেয়। কারো অনুপস্থিতিতে সমালোচনা করা হলে তার পক্ষে কথা বলা।
যে পথ হারিয়েছে তাকে পথ দেখানো বিশেষতঃ ক্ষীণ দৃষ্টিসম্পন্ন লোকদেরকে পথ দেখানো। সেই সঙ্গে দুর্বলের প্রতি সদয় এবং পিতামাতার প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া।
সহজভাবে জীবন কাটানো, তবে সহজ মানে এটা নয় যে, বুদ্ধি বিবেচনাহীন হয়ে যেতে হবে। দানশীল হতে হবে, তবে অমিতব্যয়ী হওয়া যাবে না।
বর্ণিত গুণগুলো মানুষকে সচ্চরিত্রবান হিসেবে গড়ে তুলে। তাই প্রত্যেক মানুষের উচিৎ এসব বৈশিষ্ট্য নিজের মাঝে ধারণ করে সে মোতাবেক জীবন পরিচালনা করা।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৬ ঘণ্টা, ৩১ অক্টোবর, ২০১৭
এমএইউ/