ফুরকান শব্দের অর্থ হচ্ছে- সত্য-মিথ্যা ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য নির্ণয়কারী। সূরা ফুরকানের ১ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘অশেষ মঙ্গলময় তিনি, যিনি তার বান্দার জন্য কোরআন অবতীর্ণ করেছেন যাতে তা সমস্ত সৃষ্টির জন্য সতর্ককারী হতে পারে।
আসলে পবিত্র কোরআন হচ্ছে সবসময়ের জন্য কল্যাণের উৎস। যারা পবিত্র কোরআনকে মেনে চলে তারা এ পবিত্র গ্রন্থের মাধ্যমে অশেষ কল্যাণ লাভ করতে পারে। কোরআন কিয়ামত পর্যন্ত আল্লাহর বান্দাদের জন্য কল্যাণের উৎস হিসেবে কাজ করবে। যারা কামনা করবে তারাই পবিত্র কোরআনের কাছ থেকে সুফল লাভ করতে পারবে।
আমরা জানি, সত্য-মিথ্যা এবং ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য নির্ণয় করা একটি কঠিন কাজ। কারণ একদিকে সত্য-মিথ্যা তথা ন্যায়-অন্যায়কে নির্ণয়ের বিষয়ে মানুষের তথ্য ও জ্ঞান সীমাবদ্ধ ও অপরিপূর্ণ এবং অন্যদিকে নানা ধরণের চাহিদা ও লোভ-লালসা মানুষকে অন্যায় পথে পরিচালিত করে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে মানুষ সিদ্বান্তহীনতায় ভুগতে থাকে। কিন্তু পবিত্র কোরআন সর্বজ্ঞানী আল্লাহর দেওয়া গ্রন্থ। তিনি নিজের অসীম জ্ঞানের আলোকে মানুষের কাছে পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে মানুষের জীবনের নানা পর্যায়ের ন্যায়-অন্যায়ের প্রতি ইঙ্গিত করেছেন এবং ন্যায়-অন্যায়কে চিনে নিয়ে ন্যায়ের পথে চলার দিক-নির্দেশনা দিয়েছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.) নিজেও কোরআনের ভিত্তিতে মানুষকে সৎপথ থেকে দূরে সরে না যেতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং সৎপথ পরিহারের পরিণতির বিষয়ে সতর্ক করেছেন।
হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর সতর্কবাণী শুধুমাত্র রাসূলের যুগের মানুষের জন্য নয়; বরং সব যুগের সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য।
ইসলামি স্কলারদের মতে বর্ণিত আয়াত থেকে যেসব শিক্ষণীয় দিকগুলো বের করেছেন তাহলো-
ক. পবিত্র কোরআন হচ্ছে আল্লাহর গ্রন্থ এবং তা মানুষের কল্যাণের উৎস হিসেবে নাজিল হয়েছে।
খ. বিভিন্ন বিষয়ে ন্যায়-অন্যায় এবং সত্য-মিথ্যা চেনার সর্বোত্তম মাধ্যম হলো- পবিত্র কোরআন।
গ. হজরত রাসূলুল্লাহ (সা.)-এর দিক-নির্দেশনা কোনো নির্দিষ্ট গোত্র বা জাতির জন্য নির্ধারিত নয় বরং গোটা বিশ্বের জন্য প্রযোজ্য।
আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক মুসলমানকে এ আয়াতের শিক্ষার আলোকে জীবন কাটানোর তওফিক দান করুন। আমিন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৯, ২০১৭
এমএইউ/