ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

বিশ্ব ইজতেমার ক্রমবিকাশ

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
বিশ্ব ইজতেমার ক্রমবিকাশ ১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীতে ইজতেমা আয়োজন শুরু হয়

১৯২৭ খ্রিস্টাব্দে মাওলানা ইলিয়াস (রহ.) ভারতের উত্তর প্রদেশের সাহরানপুর এলাকায় ইসলামি দাওয়াত তথা তাবলিগের প্রবর্তন করেন এবং একইসঙ্গে এলাকাভিত্তিক তাবলিগি সাথীদের সম্মেলন বা ইজতেমার আয়োজন করেন। 

এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে তাবলিগের কাজ। দিনে দিনে বাড়তে থাকে তাবলিগের প্রচার-প্রসার ও ব্যাপকতা।

তাবলিগের সাথী সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে ১৯৬৬ সাল থেকে টঙ্গীতে ইজতেমা আয়োজন শুরু হয়।  

বাংলাদেশে তাবলিগ
১৯৫০-এর দশকে বাংলাদেশে তাবলিগের দাওয়াতি কাজ শুরু হয়। পরে তা ১৯৪৬ সালে ঢাকার রমনা পার্ক সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদকে কেন্দ্র করে তাবলিগের কাজ চলতে থাকে। তৎকালীন সময়ে মাওলানা আবদুল আজিজ (রহ.) বাংলাদেশে তাবলিগের হাল ধরেন। তখন থেকেই বাংলাদেশে তাবলিগ জামাতের কেন্দ্রীয় মারকাজ বা প্রধান কেন্দ্র কাকরাইল মসজিদ থেকে ইজতেমাও কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালনা শুরু হয়।  

ফিরে দেখা
১৯৪৬ সালে ঢাকার রমনা পার্ক সংলগ্ন কাকরাইল মসজিদে প্রথমবারের মতো তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বা ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়।  

২ বছর অতিক্রম হওয়ার পর ১৯৪৮ সালে চট্টগামে তৎকালীন হাজী ক্যাম্পে দ্বিতীয়বারের মতো তাবলিগের সম্মেলন বা ইজতেমার আয়োজন করা হয়।  

তার ১০ বছর পর ১৯৫৮ সালে বর্তমান নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়। তৎকালীন সময়ে তাবলিগের এ সম্মেলন শুধুমাত্র ইজতেমা নামেই প্রচার ও পরিচিত ছিল।  

বিশ্ব ইজতেমা
তাবলিগের প্রচার-প্রচারণা দিন দিন প্রসারিত হতে থাকে। বাড়তে থাকে তাবলিগের সাথী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের সংখ্যা। এ কারণে ৮ বছর পর ১৯৬৬ সালে টঙ্গীর পাগাড় গ্রামের খোলা মাঠে ইজতেমা আয়োজন করা হয়। সে বছর স্বাগতিক বাংলাদেশ ছাড়াও বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে তাবলিগের এ ইজতেমায় ধর্মপ্রাণ মুসলমান ও তাবলিগের সাথীরা অংশগ্রহণ করেন। আর সে বছর থেকেই এ ইজতেমাকে বিশ্ব ইজতেমা হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। দুনিয়াজুড়ে ‘বিশ্ব ইজতেমা’ হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে থাকে এ ইজতেমা।  

১৯৬৬ সালের পর থেকে প্রতি বছর তুরাগ নদীর উত্তর-পূর্ব তীর সংলগ্ন ডোবা-নালা, উঁচু-নিচু জমি মিলিয়ে রাজউকের হুকুম দখলকৃত ১৬০ একর জায়গার বিশাল মাঠে অনুষ্ঠিত হয় এ ইজতেমা। যা বিশ্ব ইজতেমা নামে বর্তমানে বিশ্বব্যাপী সমধিক পরিচিত।  

সে হিসাবে ২০১৮ সালে ৫৩তম বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। দিন দিন ইজতেমায় অংশ নেওয়া বিদেশি মেহমান ও রাষ্ট্রের সংখ্যা বাড়ছে। চলতি ইজতেমার প্রথম পর্বে ১০১টি দেশে তাবলিগের সাথীরা অংশ নেন।  

উল্লেখ্য, ২০১১ সালের আগে একসঙ্গে তিন দিনব্যাপী বিশ্ব ইজতেমা অনুষ্ঠিত হতো। স্থান সংকট এবং জনদুর্ভোগের বিষয়টি চিন্তা করে মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি, আইন-শৃ্ঙ্খলার উন্নতি ও নিরাপত্তা প্রদানের নিমিত্তে তাবলিগের শুরা সদস্যদের পরামর্শের ভিত্তিতে তিন দিন করে দুই ধাপে ইজতেমা আয়োজনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।  

দুই ধাপে ইজতেমা আয়োজনের পরও মানুষের ব্যাপক উপস্থিতি হওয়ায় ২০১৬ সাল থেকে প্রতিবছর ৩২ জেলার অংশগ্রহণে দুই পর্বে বিশ্ব ইজতেমা আয়োজন শুরু হয়। নতুন এ সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিটি জেলা এক বছর পর পর টঙ্গীর তুরাগ তীরে বিশ্ব ইজতেমায় অংশ নেওয়ার সুযোগ পায়।  

যে সব জেলা টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে পারবে না, তাদের জন্য জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক ইজতেমার আয়োজনের ব্যবস্থা রয়েছে। সে আলোকে গত দুই বছর ধরে জেলাভিত্তিক আঞ্চলিক ইজতেমা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৯, ২০১৮
এমএইউ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।