ভাষা সম্পর্কে কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘দয়াময় আল্লাহ, শিক্ষা দিয়েছেন কোরআন। সৃজন করেছেন মানুষ।
ভাষা মানুষের জন্মগত অধিকার। এ প্রসঙ্গে কোরআনে কারিমে বলা হয়েছে, ‘তার আরও এক নিদর্শন হচ্ছে নভোমণ্ডল ও ভূমণ্ডলের সৃজন এবং তোমাদের ভাষা ও বর্ণের বৈচিত্র্য। নিশ্চয় এতে জ্ঞানীদের জন্য নিদর্শনাবলি রয়েছে। ’ -সূরা আর রুম: ২২
আমাদের মাতৃভাষা বাংলা। বাংলা ভাষায় আমরা কথা বলি, মনের ভাব ভাষায় ফুটিয়ে তুলি। মাতৃভাষা খোদার সেরা দান। কোনো জাতি সফল হতে হলে তার মাতৃভাষাকেই গুরুত্ব দিতে হবে। যতদিন পর্যন্ত কোনো জাতির মাতৃভাষা সাহিত্য তার স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর হয়ে উঠতে না পারে ততদিন পর্যন্ত সে জাতি পূর্ণ স্বাধীন হতে পারে না।
মাতৃভাষার চেতনা যে কোনো জাতিকে উন্নতির সিঁড়িতে আরোহণ করাতে পারে। দ্বীনি এবং দুনিয়ারি সবদিকেই মাতৃভাষার ব্যবহার নিশ্চিত করা জরুরি। আমাদের মাতৃভাষা যেহেতু বাংলা, তাই এ ব্যাপারে কারও উদাসীন থাকা বা অবহেলা প্রদর্শন করা কোনোভাবেই উচিত নয়।
ইসলাম মাতৃভাষার প্রতি যথার্থ গুরুত্ব দিয়েছে। মাতৃভাষাকে মর্যাদার উচ্চমানে সমাসীন করেছে। ইসলামের প্রচার-প্রসার লিখনীর ক্ষেত্রেও মাতৃভাষাকেই প্রাধান্য দিতে হবে। আল্লাহতায়ালা যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রাসূলকে আসমানী কিতাবসহ স্বজাতির ভাষায় পৃথিবীতে প্রেরণ করেছেন। যেমন হজরত দাউদকে (আ.) তার নিজ ভাষা গ্রিকে যাবুর কিতাব নাজিল করেছেন। হজরত মূসাকে (আ.) তাওরাত হিব্রু ভাষায়, হজরত ঈসাকে (আ.) ইঞ্জিল সুরিয়ানি ভাষায়।
আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদের (সা.) ওপর পবিত্র কোরআনে কারিম নাজিল করেছেন আরবের ভাষা আরবিতে। এ প্রসঙ্গে আল্লাহতায়ালা কোরআনে কারিমে ইরশাদ করেন, ‘আমি প্রত্যেক নবীকে (আ.) তাদের স্বজাতির ভাষায় প্রেরণ করেছি তাদের সম্প্রদায়ের নিকট, যাতে তারা জাতিকে সুস্পষ্ট ভাষায় বোঝাতে সক্ষম হন। ’ -সূরা মারইয়াম: ৯৭
ইসলাম প্রচার-প্রসারের অন্যতম একটি মাধ্যম হলো- মাতৃভাষা। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকেও মাতৃভাষায় অনেক গুরুত্ব রয়েছে। ইসলাম প্রচারে মাতৃভাষার কোনো বিকল্প নেই। সে হিসেবে প্রত্যেক মুসলমান, বিশেষ করে আলেম-ওলামাদের কর্তব্য হলো- মাতৃভাষা চর্চায় মনোযোগী হওয়া।
লেখক: প্রিন্সিপাল, শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল, কালিঘাট রোড, শ্রীমঙ্গল, মৌলভীবাজার
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১২০৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২০, ২০১৮
এমএইউ/