শ্রীলঙ্কায় বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যায় বেশি হলেও শ্রীলঙ্কাজুড়ে ছড়িয়ে আছে প্রচুর মসজিদ।
রাজধানী কলম্বোর জামিউল আলফার মসজিদের বয়স ১১০ বছেররও বেশি।
শ্রীলঙ্কার মোট জনসংখ্যার ৭০ দশমিক দুই শতাংশ মানুষ বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। হিন্দু ধর্মের অনুসারীদের হার ১২ দশমিক ছয় শতাংশ। আর ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের হার ৯ দশমিক সাত। শতকরা হিসেবে মুসলিমদের সংখ্যাটা খুব বেশি না হলেও পুরো শ্রীলঙ্কায় ছড়িয়ে আছে আড়াই হাজারের বেশি মসজিদ।
শুধু রাজধানী কলম্বোতে রেজিস্টার্ড মসজিদের সংখ্যা শতাধিক।
জামিউল আলফার মসজিদটি কলম্বো শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত। ১৭-১৮ শতকে দক্ষিণ ভারত থেকে মুসলিম ব্যবসায়ীরা আসেন শ্রীলঙ্কায়। তাদের নামাজ, ইবাদত-বন্দেগি ও বিশ্রামের তাগিদ থেকে ১৯০৮ সালে নির্মাণ করা হয় মসজিদটি।
মসজিদটি তৈরি করেন দক্ষিণ ভারতীয় এক স্থপতি। এটির নকশা তৈরির সময় তিনি ডালিমকে মূল নকশায় রাখেন। এই মসজিদের মিনারগুলোর আকৃতি হুবহু ডালিমের মতো। শুধু তাই নয়, ডালিমের লাল এবং সাদাকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মসজিদের রঙে। এর প্রতিটি ইটে আলাদাভাবে লাল এবং সাদা রং করা হয় নিয়মিত।
শুরুতে ছোট পরিসরে নির্মাণ করা হলেও পরে অনেকটাই বড় করা হয়েছে এর আয়তন।
ছয় তলা বিশিষ্ট এই মসজিদটি শ্রীলঙ্কার সবচেয়ে বড় মসজিদ। পুরো মসজিদটিই ব্যবহৃত হয় নামাজের জন্য। এই মসজিদের ধারণ ক্ষমতা ১৬ হাজার। জুমার দিন প্রায় ১২ হাজার মুসল্লি একত্রে নামাজ আদায় করতে পারেন এখানে।
মসজিদটি পরিচালিত হয় দক্ষিণ ভারতীয় ট্রাস্টি বোর্ডের মাধ্যমে। দু’জন তত্ত্বাবধায়ক এর দেখভাল করেন। যার একজন ভারতীয় এবং অন্যজন শ্রীলঙ্কান।
সম্ভবত শ্রীলঙ্কাই হচ্ছে একমাত্র অমুসলিম দেশ, যেখানে টেলিভিশন এবং রেডিওতে ৫ ওয়াক্ত নামাজের আজান সম্প্রচার করা হয়। শ্রীলঙ্কার মুসলমানরা মুর নামে পরিচিত। যারা দেশটিতে তৃতীয় বৃহত্তম জাতিগত সম্প্রদায়।
সাম্প্রতিক সময়ে চলা শ্রীলঙ্কার মুসলিমবিরোধী সহিংস ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে শ্রীলঙ্কার পর্যটন শিল্পে। ৩৭ বছরের গৃহযুদ্ধের পর পর্যটক খাত উন্নয়নে সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি এই সহিংসতা বড় আঘাত হেনেছে বলে স্থানীয়রা মনে করছেন।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৫১১ ঘণ্টা, মার্চ ১১, ২০১৮
এমএইউ/