শুক্রবার (১১ মে) গুলশানের শ্যুটিং ক্লাবে সেন্টার ফর যাকাত ম্যানেজমেন্ট (সিজেডএম) আয়োজিত ৬ষ্ঠ যাকাত মেলা ২০১৮-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
মন্ত্রী বলেন, পৃথিবীর সূচনালগ্ন থেকেই প্রতিটি বিষয়ের সফলতা বিপ্লবের মাধ্যমে এসেছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, যাকাতের কথা বলা মানে ইবাদতে অংশগ্রহণ করা। যারা ধনী তাদের সম্পদের উপর গরীবের হক রয়েছে। কোরআন-হাদীসে তার সুস্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে। এখন শুধু আমাদের প্রচারণা বাড়াতে হবে। আর ইসলাম একটি বিপ্লব, তা বিশ্বের সবাই অকপটে স্বীকার করে। তাহলে আমরা কেন এই বিপ্লবের ধারাকে কাজে লাগাবো না।
সিজেডএম'র উপদেষ্টা লে. জেনারেল (অব.) এম নুরুদ্দিন খানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির সাবেক মহাপরিচালক মুস্তফা জামান আব্বাসী, ইসলামী ব্যাংক'স কনসালটেটিভ ফোরামের ভাইস চেয়ারম্যান এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল, পরমাণু বিজ্ঞানী অধ্যাপক ড. এম শমসের আলী, সিজেডএম'র সদস্য সচিব এ এম এম নাসির উদ্দিন, সভাপতি নিয়াজ রহিমসহ প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, যাকাত আদায়ের ক্ষেত্রে আমরা কাপড় বা অন্যান্য জিনিস দেই। কিন্তু তাতে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতে কোনো ভূমিকা বা অবদান রাখে না। তাই বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাকাত দিলে তা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখবে। কেননা গুরুত্বপূর্ণ ৮টি খাতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানগুলো যাকাত প্রদান করে থাকে। তাতে করে যাকাত প্রদানকারীদের অর্থগুলো সঠিকভাবে ব্যবহার হয়। এছাড়া একসঙ্গে যাকাত আদায় করতে গিয়ে অনেক মানুষ হতাহত হওয়াসহ বিভিন্ন সহিংসতার ঘটনা ঘটে। অনেকের যাকাতের প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও চাইতে পারে না বা সঠিক লোক যাকাত পায় না। আবার দেশের সামগ্রিক উন্নয়নের জন্য শিক্ষাসহ কিছু গুরুত্বপূর্ণ খাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রয়োজন, তা যাকাতের মাধ্যমে খুব সহজে হতে পারে। এদিকে যাকাত আদায়কারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে যাকাত দিলে এ সব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব।
বক্তারা আরও বলেন, সম্পদ দান করলে কমে না বরং বাড়ে। আর যাকাত ইসলামের পঞ্চস্তম্ভের একটি। তাই যাকাত দেয়া আমাদের অবশ্যই কর্তব্য। বর্তমানে দেশ দারিদ্রসীমার উপরে উঠে গেছে। অনেক বড় আকারে বাজেট হচ্ছে। কিন্তু তাতেও দেশের কিছু জনগোষ্ঠী পিছিয়েই থাকছে। তাদের এগিয়ে নিতে ইসলামের সুন্দর বিধান অনুসারে আমরা এগিয়ে আসতে পারি।
এসময় বক্তারা যাকাতকে হিসাবানুসারে করের অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেন। এবং পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তুফা কামাল এই সুপারিশের বিপরীতে বলেন, যাকাতকে করের আওতায় আনা যাবে না। এটা সামাজিক ও ধর্মীয় দায়বদ্ধতার বিষয়। আর করের ক্ষেত্রে অনেক সময় অনেক পরিবর্তন, পরিমার্জন ও কখনও মওকুফও করা হয়। কিন্তু যাকাতের ক্ষেত্রে তো তা সম্ভব না।
উদ্বোধন শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী ২ দিনব্যাপী এ যাকাত মেলাটির ২০টি স্টল ঘুরে দেখেন। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত মেলার গেট খোলা থাকবে।
২০১৩ সাল থেকে শুরু হওয়া যাকাত মেলার এবারের মূল আকর্ষণ হিসেবে রয়েছে যাকাত সংক্রান্ত পরামর্শ ডেস্ক, বিভিন্ন ইসলামিক বই, যাকাত ভিত্তিক বিভিন্ন কার্যক্রম উপস্থাপনসহ যাকাত আদায় কাজে সংযুক্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম তথ্য সংবলিত স্টল।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩৫ ঘণ্টা, মে ১১, ২০১৮
এমএএম/এসএইচ