সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গতবছর প্রকল্পটি জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন পায়। কিন্তু এখনও সৌদি আরবের সহায়তা পাওয়া যায়নি।
সূত্র জানায়, এ প্রকল্পের প্রস্তাবিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৯ হাজার ৬২ কোটি টাকা। এর মধ্যে সৌদি আরবের বাদশাহ সালমান বিন আব্দুল আজিজ আল সৌদের অনুদান দেওয়ার কথা ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা। এর মধ্যে মাত্র ৮২ কোটি টাকা দিয়েই বেকে বসেছে দেশটি। এ অবস্থায় হতাশ মসজিদ বাস্তবায়ন সংস্থা ইসলামিক ফাউন্ডেশন।
এ পর্যায়ে প্রকল্পটি সংশোধনের জন্য মঙ্গলবার (২৬ জুন) জাতীয় একনেক সভায় উত্থাপন করা হবে। কর্মকর্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ বিষয়ে যেভাবে নির্দেশনা দেবেন সেই মোতাবেক প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে।
যোগাযোগ করা হলে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সচিব কাজী নূরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এখনও সৌদির অনুদান পাওয়া যাচ্ছে না, পাওয়ার আশাও নেই। আপাতত দেশীয় অর্থায়নেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে হবে অথবা নতুন উন্নয়ন সহযোগী খুঁজতে হবে।
‘ধীরে ধীরে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবো, সৌদি সহযোগিতা পাওয়ার চিন্তা আপাতত বাদ। তারা (সৌদি) ৮ হাজার ৯২৬ কোটি টাকা দেওয়ার কথা দিয়েছিলো অথচ দিয়েছে মাত্র ৮২ কোটি। ফলে প্রকল্পটি একনেক সভায় সংশোধনের জন্য উপস্থাপন করা হবে। ’
জানা যায়, প্রকল্পটি ২০১৭ সালের এপ্রিল থেকে ২০১৯ সালের ডিসেম্বর মেয়াদে বাস্তবায়নের কথা। এখন এ মেয়াদ ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর প্রস্তাব করা হবে।
দেশের সব জেলা, সিটি করপোরেশন ও উপজেলায় মসজিদগুলো নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ৬৪টি জেলায় ও উপকূলীয় এলাকায় ১৬টি চারতলা মসজিদ নির্মাণ করা হবে। বাকিগুলো হবে তিনতলা। এসব মসজিদে দৈনিক চার লাখ ৪০ হাজার ৪৪০ জন পুরুষ ও ৩১ হাজার ৪০০ জন নারীর নামাজের ব্যবস্থা থাকবে।
তিন ক্যাটাগরির এসব মসজিদের মধ্যে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে ৬৮টি চারতলা মডেল মসজিদে লিফটও থাকবে। এগুলো নির্মিত হবে ৬৪টি জেলা শহরে এবং চারটি সিটি করপোরেশন এলাকায়। এগুলোর আয়তন হবে দুই লাখ ৮১ হাজার ৫৮৪ বর্গমিটার।
আর এক লাখ ৬৪ হাজার ৭৪২ বর্গমিটার আয়তনের হবে ‘বি’ ক্যাটাগরির ৪৭৬টি মসজিদ হবে। আর সি ক্যাটাগরির ১৬টি মসজিদের আয়তন হবে ৬১ হাজার ২৫ বর্গমিটার।
র্কমকর্তারা জানান, মডেল মসজিদগুলোতে লাইব্রেরির সুবিধাও থাকবে। প্রতিদিন ৩৪ হাজার পাঠক একসঙ্গে কোরআন ও ইসলামিক বই পড়তে পারবেন।
এসব মসজিদে প্রতিবছর ১৪ হাজার হাফেজ তৈরির ব্যবস্থাও থাকবে। থাকবে ইসলামিক নানা বিষয়সহ প্রতিবছর এক লাখ ৬৮ হাজার শিশুর প্রাথমিক শিক্ষার ব্যবস্থা।
এসব মসজিদে দুই হাজার ২৪০ জন দেশি-বিদেশি অতিথির আবাসন ব্যবস্থাও গড়ে তোলা হবে প্রকল্পের আওতায়। এছাড়া পবিত্র হজব্রত পালনের জন্য ডিজিটাল নিবন্ধনের ব্যবস্থাও থাকবে মডেল মসজিদগুলোতে।
থাকবে ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের কথা মাথায় রেখে উপকূলীয় এলাকার মসজিদগুলোর নিচতলা ফাঁকা থাকবে।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৫ ঘণ্টা, জুন ২৬, ২০১৮
এমআইএস/এমএ