বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, মূলত আধুনিক ও উন্নত চিকিৎসা থেকে বঞ্চিত আমেরিকান বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য একটি ক্লিনিক চালু করে তারা এ চিকিৎসাসেবার ব্যবস্থা করেন।
ফুলটন কাউন্টি হেলথ সেন্টারের মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক ড. সুলাইমান আবাভি বলেন, আমাদের প্রতিবেশীদের দেখাশোনা ও চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য এ ক্লিনিকটির প্রতিষ্ঠা ও পথচলা।
শুরুর দিকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার নির্ধারিত কোনো স্থান না থাকায় ডাক্তাররা গৃহহীনদের কাছে গিয়ে তাদের চিকিৎসাসেবা দিতে শুরু করেন। এরপর উত্তর টলেডোর মসজিদ আল-ইসলামে একটি অনিয়মিত ক্লিনিক চালু করা হয়। পরে মুসলিম চিকিৎসা বিজ্ঞানী ড. মাহমুদ মুসা তার ব্যক্তি মালিকানাধীন হালিম ক্লিনিকের কিছু অংশ স্বেচ্ছাসেবী চিকিৎসকদের জন্য বরাদ্দ দেন।
টলেডোর একটি মেডিকেল ইউনিভার্সিটিতে অধ্যয়নরত সাবিন সিদ্দিকি বলেন, আমরা জানি মানবদেহে সুস্বাস্থ্যের গুরুত্ব কতটুকু। সুস্থতা থেকে বঞ্চিত ব্যক্তি বলতে গেলে পার্থিব জীবনে সর্বপ্রকার আরাম-আয়েশ থেকে বহুদূরে। তাই এ উদ্যোগটি খুবই প্রশংসার দাবিদার।
হাসপাতালটির কর্তৃপক্ষের এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বের বুকে আদর্শ পুরুষ মুহাম্মাদ (সা.) এর উন্নত চরিত্র-ঔদার্যের প্রায়োগিক বাস্তবায়নে এবং রোগীদের মাঝে কার্যপোযোগী ও উন্নত সেবা দিতে তারা এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন।
ড. আবাভি আশা ব্যক্ত করে বলেন, উদ্যোগটি ইসলামী ধর্মবিশ্বাসের প্রচারের পাশাপাশি সবার মাঝে মুসলমানদের সত্যিকার ভাবমূর্তিও তুলে ধরবে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকের মতো আমরাও এ সম্প্রদায়ের একটি অংশ। হাসপাতালটির মাধ্যমে প্রতিবেশী সর্বসাধারণের সেবা করা আমাদের উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে আমাদের প্রতিভা ও কার্যদক্ষতাও ফুটিয়ে তোলা যাবে।
প্রসঙ্গত মুসলিম চিকিৎসকদের বিনামূল্যে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার বিষয়টি নতুন নয়; ২০১৮ সালের এপ্রিলে আমেরিকার ফিলাডেলফিয়ায় দরিদ্র্য ও দুস্থদের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে মুসলিমরা একটি হাসপাতাল চালু করেন। এছাড়াও আমেরিকার দক্ষিণে ক্যারিলোনা শহরে এ ধরনের একটি ক্লিনিকে কয়েক বছর যাবত ফ্রি চিকিৎসার মৌলিক ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা রয়েছে।
২০১২ সালে একটি মুসলিম গ্রুপ নিউইয়র্কের সিরাকুস শহরে হতদরিদ্রদের সম্পূর্ণ বিনামূল্যে চিকিৎসা দেওয়ার লক্ষ্যে রাহমা ক্লিনিক চালু করে। এর আগে ২০১১ সালের শুরুর দিকে সেন্ট লুইস ইউনিভার্সিটির বিলাল মসজিদে প্রতি রোববার ‘দ্য এসোসিয়েশন অব ফিজিশিয়ান্স অব পাকিস্তানি ডিসেন্ট’ এমন একটি হাসপাতাল চালু করেন। সেখানে চক্ষুরোগ ও শিশুরোগসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করা হয়।
একই শহরে ২০১৮ সালের অক্টোবরে সেন্ট লুইসের ইসলামিক ফাউন্ডেশন বিনামূল্যে চিকিৎসা দিতে স্বেচ্ছাসেবী মেডিসিন বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে আরো একটি ক্লিনিক চালু করে। আর এভাবেই তারা মহৎকাজে জড়িত রয়েছেন।
লেখক, শিক্ষক, বক্সমাহমূদ দারুল উলুম কারিমীয়া মাদরাসা, ফেনী।
ইসলাম বিভাগে লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৩, ২০১৯
এমএমইউ