রোববার (২৩ জুন) জাপানের ইয়োকাকিচি পৌর সরকারের একজন কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ভবিষ্যতে মুসলিম শিশুদের সংখ্যা বাড়তে পারে। তাই বিবেচনা করে আমাদের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।
ইয়োকাকিচিতে বাংলাদেশি দম্পতির অভিযোগের ভিত্তিতে স্কুলগুলোতে এমন ব্যবস্থার সিদ্ধান্ত হয়। কারণ, বাংলাদেশি শিক্ষার্থীর বাবা-মা লক্ষ্য করেন যে, তাদের মেয়েকে শুয়রের মাংসের সঙ্গে ভাজা নুডলস পরিবেশন করা হচ্ছে।
ওই মেয়ের বাবা বলেন, আমাকে সবসময় বলা হয়েছে যে, শুয়রের মাংস সরিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু এ ব্যাপারে সম্মতি জানানোর আমার কোনো ধরনের সুযোগ নেই। অভিযোগ করার পর শুকরের মাংসে ভাজা নুডলসের পরিবর্তে তারা অর্ধ-কলা ও স্যুপ দিতে শুরু করেন। তবে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যাকগ্রাউন্ডের শিশুরা স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে না পারাটা অবশ্যই বৈষম্য।
ইন্দোনেশিয় ও পাকিস্তানের বংশোদ্ভুত জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে জাপানের চুবুর ২০টি শহরে শিক্ষার্থীদের খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন পরিবর্তন এসেছে। ২০১৭ সালের অভ্যন্তরীণবিষয়ক ও যোগাযোগ মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক মূল্যায়ন ব্যুরোর একটি জরিপ অনুসারে, শিক্ষাবোর্ড ১৪টি প্রাথমিক এবং জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের জন্য তাদের নিজস্ব ধর্মসম্মত খাবার আনার অনুমতি দেয়।
মিনাতো-নিশি শহরের নার্সারি স্কুলগুলোর ১৬ শতাংশ শিক্ষার্থী মুসলিম। সেখানকার শিশুদের জন্য মাংসের পরিবর্তে মাছ ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও তাদের জন্য আলাদা পাত্রে রান্না করা হয়।
মিউ ইউনিভার্সিটির মানবিক, আইন ও অর্থনীতি অনুষদের অধ্যাপক মিউকি ইনারি নার্সারি কর্মী এবং রাষ্ট্রীয় কর্মকর্তাদের ধর্মীয় বৈচিত্র্যের ওপর শিক্ষিত হতে আহ্বান জানান।
২৩ বছর আগে ইসলামে রূপান্তরিত হওয়া নাগোগা শিশু ও নারী ইসলামিক অ্যাসোসিয়েশনের প্রধান মেরিম রায়োকো তোতানি বলেন, জাপান আরো বহুজাতিক ও জনপ্রিয় খাদ্যে আরও বৈচিত্র্যময় হয়ে উঠেছে। তবে বিদেশী লোকজন জাপানে আসতে পছন্দ করবে না, যতক্ষণ না জাতিকে বিভিন্ন নিয়ম-বিধিসহ সঠিকভাবে বোঝা না যায়।
আরো পড়ুন: জাপানে হালাল পণ্য জনপ্রিয় হয়ে উঠছে
জাপানে নতুন নতুন ক্রমবর্ধমান হালাল বাজার তৈরি হচ্ছে। সে দেশের ব্যবস্থাপকরা হালাল খাবারের নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা খুঁজছে। পাশাপাশি হালাল খাবারের স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজার ধরার চেষ্টা করছে। বিশেষত এখন জাপান ২০২০ সালের অলিম্পিকের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে মনোনীত হওয়ায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মুসলিম খেলোয়াড়, ক্রীড়াবিদ ও পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণে নানান পদক্ষেপ নিচ্ছে।
জাপানের মুসলমান পর্যটকদের সংখ্যা বৃদ্ধি হওয়া, খাবার সরবরাহকারী এবং ট্রাভেল এজেন্টের খাদ্য সরবরাহের ফলে হালাল খাবার সার্টিফিকেশন পেয়েছে। অন্যদিকে বিভিন্ন হোটেল-মোটেল ও দর্শনীয় স্থানে নামাজঘরও তৈরি হচ্ছে।
জাপানে ইসলামের ইতিহাস তুলনামূলকভাবে সংক্ষিপ্ত। ১৯ শতকের আগে জাপানে মুসলমানরা বিচ্ছিন্ন ছিলেন। তবে বর্তমানে জাপানে অভিবাসীদের পাশাপাশি ছোট ছোট জাপানি জাতিগোষ্ঠী ইসলামে দীক্ষিত হচ্ছে। পিউ রিসার্চ সেন্টার পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১০ সালে জাপানে মুসলিমদের সংখ্যা ছিল ১ লাখ ৮৫ হাজার।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ১৮৪৭ ঘণ্টা, জুন ২৪, ২০১৯
এমএমইউ