ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

মহানবী (সা.) শিশুদের ভালোবাসতে শিখিয়েছেন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৮ ঘণ্টা, জুলাই ২১, ২০১৯
মহানবী (সা.) শিশুদের ভালোবাসতে শিখিয়েছেন ছবি : প্রতীকী

রাসুল (সা.) শিশুদের ভালোবাসতেন। প্রিয় নাতিদের সঙ্গে খেলা করতেন। তাঁদের আদর করতেন। কারণ শিশুরাই একটি জাতির ভবিষ্যৎ। চরিত্রবান ও সুস্থ শিশু সুস্থ জাতি বিনির্মাণের পূর্বশর্ত। তাদের মানসিক ও চারিত্রিক বিকাশ ঘটাতে হবে ভালোবাসা দিয়ে; শুধু শাসন করে তা কোনো দিনও সম্ভব নয়। হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক বেদুইন রাসুল (সা.)-এর কাছে এসে বলল, আপনারা কি শিশুদের চুমু দেন? আমরা শিশুদের চুমু দিই না। রাসুল (সা.) বলেন, আল্লাহ যদি তোমার অন্তর থেকে দয়ামায়া তুলে নেন, তাহলে তোমার জন্য আমার কী করার আছে? (বুখারি, মুসলিম, ইবনে মাজাহ)

শিশুরা আল্লাহর উপহার। তাদের সঠিকভাবে পরিচর্যা করা আমাদের দায়িত্ব।

তাদের সময় দেওয়া, ধীরে ধীরে ইসলামের বিভিন্ন রীতি-নীতি শিক্ষা দেওয়া, পারিবারিক ও সামাজিক বিভিন্ন বিষয়ে আস্তে আস্তে সচেতন করা অত্যন্ত জরুরি। পাশাপাশি ছোট ছোট সুরা শেখানোর চেষ্টা করা যেতে পারে। কারণ সন্তানকে সঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে মহান আল্লাহ আমাদের দুনিয়া ও আখিরাত, উভয় জাহানে সম্মানিত করবেন। রাসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, যে ব্যক্তি কোরআন পড়বে এবং সেই মোতাবেক আমল করবে, তার পিতা-মাতাকে কিয়ামতের দিন মুকুট পরানো হবে। (আবু দাউদ)

শিশুরা স্বভাবতই বিভিন্ন বিষয়ে বায়না ধরে। তারা হঠাৎ কোলে উঠতে চায়, কখনো কোনো খাবারের জন্য বায়না ধরে (যদিও খাবার এনে দিলে সে খুব বেশি খাবে না)। এতে বিরক্ত হওয়া উচিত নয়; বরং সেই খাবার ঘরে না থাকলে তাদের অন্য কিছু দিয়ে বোঝানোর চেষ্টা করা উচিত। খাওয়ার সময়, কাপড় পরার সময় বিভিন্ন সুন্নতের অনুশীলন করানো উচিত। তাদের জন্য খরচ করলে তা বিফলে যায় না।

হজরত মিকদাম ইবনে মাদীকারিব (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে বলতে শুনেছেন, তুমি নিজেকে যা খাওয়াও তা তোমার জন্য সদকা, তোমার সন্তানকে তুমি যা খাওয়াও তা-ও তোমার জন্য সদকা, তোমার স্ত্রীকে তুমি যা খাওয়াও তা-ও তোমার জন্য সদকা এবং তোমার খাদেমকে যা খাওয়াও তা-ও তোমার জন্য সদকা।        (আবু দাউদ)

এক মহিলা আয়েশা (রা.)-এর কাছে এলে তিনি তাকে তিনটি খেজুর দেন। সে তার ছেলে দুটিকে একটি করে খেজুর দেয় এবং নিজের জন্য একটি রেখে দেয়। তারা খেজুর দুটি খেয়ে তাদের মায়ের দিকে তাকাল এবং অবশিষ্ট খেজুরটি পেতে চাইল। সে খেজুরটি দুই টুকরা করে প্রত্যেককে অর্ধেক অর্ধেক দিল। রাসুল (সা.) ঘরে এলে আয়েশা (রা.) তাঁকে বিষয়টি অবহিত করেন। তিনি বলেন, এতে তোমার বিস্মিত হওয়ার কি আছে। সে তার ছেলে দুটির প্রতি দয়াপরবশ হওয়ার কারণে আল্লাহ তার প্রতি দয়াপরবশ হয়েছেন। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)

ছেলে-মেয়ে, নাতি-নাতনি মানুষের আত্মার আত্মীয়। তাদের জন্য বেশি বেশি দোয়া করা আমাদের সবার কর্তব্য। এটা প্রিয় নবী (সা.)-এর শিক্ষা। হজরত বারাআ (রা.) থেকে বর্ণিত, আমি রাসুল (সা.)-কে দেখেছি যে হাসান তাঁর কাঁধের ওপর আসীন অবস্থায় তিনি বলছেন, হে আল্লাহ! আমি একে ভালোবাসি। অতএব, তুমিও একে ভালোবাসো। (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি, নাসায়ি)

লেখক: সাংবাদিক ও ফতোয়া-গবেষক

সৌজন্যে: দৈনিক কালের কণ্ঠ

ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৯১৭, জুলাই ২১, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।