তুরস্কের প্রভাবশালী সংবাদমাধ্যম আনাতোলিয়া নিউজ এজেন্সিতে প্রকাশিত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে (শুক্রবার, ১৬ নভেম্বর) কোরআন অবমাননার দুঃখজনক ঘটনার পর নরওয়ের মুসলিমরা রাস্তায় রাস্তায় সাধারণ নাগরিকদের ফুল উপহার দিচ্ছে। বিভিন্ন পার্কের পাশাপাশি কোরআন অবমাননার সেই স্থানে সাউন্ড বক্সে কোরআনের সুমুধুর তেলাওয়াত বাজাচ্ছে।
ফুল বিতরণ ও কোরআন তেলাওয়াত
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম ও ইউটিউবে প্রকাশিত ছবি এবং ভিডিওতে দেখা গেছে, তাদের ফুল বিতরণ ও কোরআন তিলাওয়াত বাজাতে। কোরআন তিলাওয়াত শুনতে জড়ো হয়েছে বিভিন্ন শ্রেণির বহু সাধারণ নরডিক। মুসলিম আয়োজকরা তখন তাদের হাতে প্রীতি ও ভালোবাসার স্বারক গোলপ তুলে দেন। তাদের এমন উদ্যোগে সাধারণ নরডিকরা আনন্দ-উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও প্রকাশ পেলেও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের বরাতে জানা গেছে, গেল সপ্তাহে নরওয়ের ‘ইসলামবিদ্বেষী’ সংগঠন ‘স্টপ ইসলামাইজেশন অব নরওয়ে’ (এসআইএন) ক্রিস্টিয়ানস্যান্ড শহরে ইসলামবিরোধী বিক্ষোভের আয়োজন করে। এতে কোরআন অবমাননা করে তাতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। তখন পাকিস্তানি বংশোদ্ভুত যুবক ওমর ইলিয়াস তাত্ক্ষণিক এই ঘটনার প্রতিবাদ করে অগ্নিসংযোগকারীকে বাধা দেন। পরে পুলিশ ওমর ইলিয়াসকে আটক করে নিয়ে যায়।
মুসলিমদের সমবেদনা জানালেন নরওয়ের অমুসলিমরা
এই ঘটনার পরে মুসলিম সম্প্রদায়ের সদস্যরা নরওয়ের জনসাধারণের কাছ থেকে দারুণ সমবেদনা ও সমর্থন পেয়েছেন। শুক্রবার (২৩ নভেম্বর) জুমার নামাজের সময় ক্রিস্টিয়ানস্যান্ডের একদল লোক মসজিদের বাইরে একত্র হয়ে মুসলমানদের প্রতি সংহতি ও সমবেদনা জানান।
তাদের প্লেকার্ডগুলোতে লেখা ছিল, ‘তারা মুসলিম হলেও আমরা ও তারা একসঙ্গে থাকি। ’ এছাড়াও ক্রিস্টিয়ানস্যান্ডের মেয়র হারাল্ড ফুরে এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন এবং নগরীর মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করেছেন।
ক্রিস্টিয়ানস্যান্ডের মেয়র যা বলেছেন
নরওয়ের জাতীয় সম্প্রচারক এনআরকেকে একটি সাক্ষাত্কারে তিনি বলেছেন, ক্রিশ্চিয়ানস্যান্ড সবার শহর। বৈচিত্র্য তৈরি করার জন্য পদ্ধতিগতভাবে কাজ করি। কিন্তু এই ধরনের কাজ হতাশাজনক ও ‘পরিকল্পিত উস্কানিমূলক’। ভাগ্রক্রমে পুলিশ ঘটনাটি দ্রুত সমাধান করেছে।
অন্যদিকে ক্রিস্টিয়ানস্যান্ডের মুসলিম ইউনিয়নের সিনিয়র নেতা তালাল ওমর বলেছেন, স্থানীয় মুসলিম সম্প্রদায় নরওয়ের লোকদের কাছ থেকে প্রচুর সমর্থন পাচ্ছে। এই অঞ্চলের মুসলিম সম্প্রদায়ের পক্ষে বিপুল সংখ্যক লোক যারা সমর্থন দেখিয়েছেন তাদের মধ্যে রাজনীতিবিদ, খ্রিস্টান বিভিন্ন নেতা ও সাধারণ নাগরিক রয়েছেন।
ওমর আরও বলেন, উগ্রবাদী সংগঠন ‘সিআইএন’ নরওয়ের প্রতিনিধিত্ব করে না। এখানে মুসলিমদের সংখ্যা খুব কম হলেও সামগ্রিকভাবে নরওয়ের খ্রিস্টান ও অন্যরা আমাদের সঙ্গে রয়েছেন।
এঘটনায় দোষীর শাস্তি ও মুসলিম যুবকের মুক্তি দাবি করে মুসলিমবিশ্ব থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পাশাপাশি এধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে নরওয়ে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণও করা হয়েছে।
ইসলাম বিভাগে আপনিও লিখতে পারেন। বিষয়ভিত্তিক লেখা ও জীবনঘনিষ্ঠ প্রশ্ন পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]
বাংলাদেশ সময়: ২০৪৩ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৬, ২০১৯
এমএমইউ