ঢাকা, শুক্রবার, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইসলাম

আখেরি মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি-ঐক্য কামনা

মো. রাজীব সরকার, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
আখেরি মোনাজাতে মুসলিম উম্মাহর শান্তি-ঐক্য কামনা

টঙ্গীর তুরাগ তীর থেকে: মুসলিম বিশ্বের শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনার মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব। আগামী শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) আবার শুরু হবে দ্বিতীয় পর্ব। 

আখেরি মোনাজাতে লাখ লাখ মুসল্লির আমিন আমিন ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয় টঙ্গীর তুরাগ নদের তীর। রোববার (১২ জানুয়ারি) সকাল ১১টা ০৮ মিনিটে শুরু হয় আখেরি মোনাজাত, শেষ হয় ১১টা ৪৬ মিনিটে।

 

এবারের মোনাজাত পরিচালনা করেন তাবলীগ জামাতের শীর্ষস্থানীয় মাওলানা জোবায়ের।  মোনাজাতের আগে হেদায়েতি বয়ান করেন তিনি।

শীতের তীব্রতা উপেক্ষা করে টঙ্গীর তুরাগ তীরে সমবেত হয়ে অশ্রুভেজা চোখে মুসল্লিরা দেশ জাতি এবং মুসলিম উম্মাহর শান্তি এবং সমৃদ্ধি কামনা করেন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ইজতেমার মোনাজাতে অংশ নেন।  

এর আগে রোববার ফজরের নামাজের পর শুরু হয় নির্দেশনামূলক বয়ান। ১১টার পর জনসমুদ্রে হঠাৎ নেমে আসে নীরবতা, এরপরই শুরু হয় আখেরি মোনাজাত।

বিশ্ব ইজতেমায় গভীর আবেগপূর্ণ আখেরি মোনাজাতে গোটা দুনিয়ায় পথভ্রষ্ট মুসলমানের সঠিক পথের দিশা এবং তাবলীগের কাজে সবাইকে নিয়োজিত হওয়ার তওফিক কামনা করে মহান আল্লাহর রহমত, মাগফিরাত ও নাজাত প্রার্থনা করা হয়।  

পড়ুন>>​ আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে টঙ্গীমুখী মুসল্লিদের স্রোত

ইহলৌকিক ও পারলৌকিক কল্যাণ কামনায় দেশ-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লি স্রষ্টার শাহি দরবারে কান্নাকাটি করে অশ্রু ঝরান। আবেগঘন লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হয় রাহমানুর রাহিম আল্লাহর মহত্ব ও শ্রেষ্ঠত্ব।  

এ সময় ‘আমিন, আল্লাহুম্মা আমিন’ ধ্বনিতে মধ্যাহ্নের আকাশ-বাতাস কাঁপিয়ে মহামহিম ও দয়াময় আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের আশায় লাখ লাখ মুসল্লি আকুতি জানান।  

ইজতেমা ময়দান ও আশপাশে অবস্থান নিয়ে আল্লাহর দরবারে দুই হাত তুলে প্রতিপালকের কাছে ক্ষমা চেয়ে কান্নার বুক ভাসান মুসল্লিরা।  

এর আগে আখেরি মোনাজাতে অংশ নিতে ভোর থেকে ঢাকা-গাজীপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে হাজার হাজার মুসল্লি পায়ে হেঁটে ইজতেমাস্থলে আসেন।  

সবারই প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিল দেশে-বিদেশের লাখ লাখ মুসল্লির সঙ্গে মোনাজাতে শরিক হয়ে নিজের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করা। তবে মোনাজত শুরু হওয়ার আগেই ইজতেমা ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়।  

ময়দানে জায়গা না পেয়ে মুসল্লিরা আশে-পাশের অলি-গলি, ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক, ফুট ওভার ব্রিজ, বাসা বাড়ি, কল-কারখানা, মার্কেট ও যানবাহনের ছাদে এবং তুরাগ নদে নৌকায় অবস্থান নেন।  

আখেরি মোনাজাতের জন্য আশে-পাশের শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান, কল-কারখানাসহ বিভিন্ন অফিস-আদালতে ছুটি ঘোষণা করা হয়।  

গত বৃহস্পতিবার (৯ জানুয়ারি) বাদ মাগরিব ভারতের মাওলানা ইব্রাহিম দেওলার আম বয়ানের মধ্যে দিয়ে শুরু হয় ইজতেমার আনুষ্ঠানিকতা।  

এরপর শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) বাদ ফজর আম বয়ান করেন পাকিস্তানের মাওলানা ওবায়দুল্লাহ খুরশিদ। পরে বাংলায় বয়ান তরজমা করেন বাংলাদেশি মাওলানা আব্দুল মতিন।  

আগামী শুক্রবার (১৭ জানুয়ারি) শুরু হবে ৫৫তম বিশ্ব ইজতেমার দ্বিতীয় পর্ব। ১৯ জানুয়ারি আখেরি মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হবে এবারের বিশ্ব ইজতেমা।  

এবার বিশ্ব ইজতেমার প্রথম পর্ব পরিচালনা করেন মাওলানা জোবায়েরের অনুসারী মুরুব্বিরা। দ্বিতীয় পর্ব পরিচালনা করবেন সাদ অনুসারীরা।  

বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ১২, ২০২০
আরএস/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।