তবে আশার কথা হলো কোনকালেই ইসলাম পরাজিত হয়নি, পরাভূত হয়নি। এখলাসের নিশানা যতবার তাক করেছে প্রতিবারই বিজয়ের সানাই বেজেছে, ষড়যন্ত্রকারীরা পরাভূত হয়েছে।
কাগতিয়ার নিভৃতপল্লি থেকে যে তরিক্বতের সূচনা হয়েছিল তা আজ বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। এতদূর আসার পথ কোনকালেই কুসুম কোমল ছিল না। নিন্দুকের নিন্দাবাদ কিংবা কারো জিন্দাবাদ এই তরিক্বতের যাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারেনি। এই তরিক্বত চলেনা দুনিয়ার কোন শক্তিমত্তায়, কারো অর্থবিত্তের দানশীলতায়, এই তরিক্বত চলে না আলেমের এলেমে কিংবা লেখকের কলমে, শায়েরের শায়েরীতে কিংবা বুদ্ধিজীবীর বুদ্ধিতে।
এই তরিক্বত চলে খোদার দয়াতে, নবীজির ফুয়ুজাতে গাউছুল আজমের এখলাস আর অশ্রুর বদলাতে। গাউছুল আজম একবিংশ শতাব্দিতে নবী (দঃ) এর একটি উপহার, যার ছোঁয়াতে ছায়াতে লাখ লাখ পথহারা মানুষ পেয়েছে নূরে মোস্তফার সন্ধান। গাউছুল আজমের বক্ষে নবী (দঃ) যে নূর আল্লাহ পাক আমানত রেখেছেন তার ব্যাপারে পবিত্র কোরআনুল কারীমে এসেছে ওরা আল্লাহর নূরকে ফুৎকারে নিভিয়ে দিতে চায় কিন্তু আল্লাহ তার নূরকে পূর্ণ করবেনই। সুতরাং নিরাশা নয় আশার বাতিঘর হয়ে নবী (দঃ) এর দয়ায় এ তরিক্বত সামনে যাচ্ছে যাবে ইনশাআল্লাহ। এখানে সবচেয়ে বড় বিষয় হলো এখলাসের সঙ্গে নিজেদেরকে স্থির রাখা, গাউছুল আজম যে পথ মত আদর্শকে নবীর কাছ থেকে পেয়েছেন সে অনুযায়ী আমল করা সবর ও শোকরের সঙ্গে পথচলা। আল্লাহর মেহেরবানীতে নবীর উসিলায় দু’জাহানে কামিয়াবী হবেই। ’
সোমবার (২০ জানুয়ারি) চট্টগ্রাম নগরীর বায়েজিদের গাউছুল আজম সিটিতে ঐতিহাসিক তরিক্বত কনফারেন্সে প্রধান অতিথির বক্তব্যে কাগতিয়া আলীয়া গাউছুল আজম দরবার শরীফের মোর্শেদ আওলাদে রাসূল হযরতুলহাজ্ব আল্লামা অধ্যক্ষ শায়খ ছৈয়্যদ মুহাম্মদ মুনির উল্লাহ্ আহমদী মাদ্দাজিল্লাহুল আলী এসব কথা বলেন।
কনফারেন্সে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ও মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা ইসলামী আরবী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আহসান উল্লাহ, নানুপুর মাজহারুল উলুম গাউছিয়া ফাযিল মাদরাসার অধ্যক্ষ হযরতুলহাজ্ব আল্লামা মুছলেহ উদ্দিন আহমদ মাদানী, এলবিয়ন গ্রুপ’র প্রধান উপদেষ্টা আলহাজ মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন, হাটহাজারী উত্তর মাদার্শা উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদ সভাপতি আলহাজ মোহাম্মদ নূর খান প্রমুখ।
বক্তব্য রাখেন হাফেজ মাওলানা মুহাম্মদ আবু বকর, মাওলানা মুহাম্মদ রকিব উদ্দিন, মুহাম্মদ সালাউদ্দীন, মাওলানা মুহাম্মদ এরশাদুল হক, মাওলানা মুহাম্মদ জসিম উদ্দীন নূরী প্রমুখ।
অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জালাল আহমদ, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন জালালবাদ ওয়ার্ড কাউন্সিলর আলহাজ মোহাম্মদ সাহেদ ইকবাল বাবু, মুনিরীয়া যুব তবলীগ কমিটি বাংলাদেশের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি মুহাম্মত সালাহ উদ্দীন, মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ সরোয়ার কামাল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ চাঁদপুর জেলা শাখার সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা সিদ্দিকুর রহমান।
কনফারেন্সে যোগদানের উদ্দেশ্যে সকাল থেকেই চট্টগ্রামের আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকেও কাগতিয়া দরবারের হাজার হাজার অনুসারী ও মুসলমানেরা উপস্থিত হন।
কনফারেন্সে যোগদানের জন্য শুধু দেশের নয়, বহির্বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকেও কাগতিয়া দরবারের অনুসারী সপ্তাহখানেক আগে থেকে বাংলাদেশে আসেন।
শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক আলোকসজ্জিত করা হয় এবং চট্টগ্রামের প্রায় সব প্রবেশমুখে ও বিভিন্ন উপজেলায় উত্তোলন করা হয় তোরণ।
মাগরিবের আগেই কনফারেন্সস্থল গাউছুল আজম কমপ্লেক্সের বিশাল ময়দান কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে জনসমুদ্রে রূপ নেয়।
মিলাদ ও কিয়াম শেষে প্রধান অতিথি দেশ, জাতি ও বিশ্ব মুসলিম উম্মাহ ঐক্য, সুখ, শান্তি ও সমৃদ্ধি, অসহায় নির্যাতিত মুসলমানদের হেফাজত এবং দরবারের প্রতিষ্ঠাতা গাউছুল আজম রাদ্বিয়াল্লাহু আন্হুর ফুয়ুজাত কামনা করে বিশেষ মুনাজাত পরিচালনা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২০, ২০২০
এএটি