ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে রোববার (১২ জুলাই) সচিবালয়ে অনলাইনে এক আন্তঃমন্ত্রণালয় সভায় এ সিদ্ধান্ত হয় বলে জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসাইন।
তিনি বাংলানিউজকে বলেন, করোনা ভাইরাসের কারণে ঈদুল ফিতরের মতো ঈদুল আজহার নামাজের জামাত উন্মুক্ত স্থানে না করে মসজিদে আদায়ের সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ধর্ম সচিব মো. নূরুল ইসলামের সভাপতিত্বে সভায় দেশের বরেণ্য ওলামায়ে কেরামরা উপস্থিত ছিলেন।
এবছর করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি বিবেচনায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ঈদের প্রধান জামাত জাতীয় ঈদগাহ এর পরিবর্তে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে অনুষ্ঠিত হবে।
সভায় জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় ঈদুল আজহার নামাজের জামাত ঈদগাহ বা উন্মুক্ত স্থানের পরিবর্তে নিকটস্থ মসজিদে আদায়ের জন্য মুসল্লিদের অনুরোধ করা হয়েছে।
সভায় যথাযোগ্য মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য এবং আনন্দমুখর পরিবেশে ঈদুল আজহা উদযাপনে বিভিন্ন কর্মসূচি প্রণয়ন ও সুষ্ঠুভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বাণী দেবেন।
এ উপলক্ষে সরকারি-বেসরকারি ভবন ও বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে এবং ‘ঈদ মোবারক’ খচিত ব্যানার ঢাকা মহানগরীর গুরুত্বপূর্ণ ট্রাফিক আইল্যাণ্ডে প্রদর্শনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ঈদুল আজহা দিনগত রাত্রিতে নির্দিষ্ট সরকারি ভবনে এবং সামরিক গুরুত্বপূর্ণ ভবনে আলোকসজ্জা করা হবে।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, সারাদেশের বিভাগ, জেলা, উপজেলা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগ, বেসরকারি সংস্থার প্রধান জাতীয় কর্মসূচির আলোকে নিজ নিজও কর্মসূচি প্রণয়ন পূকরে ঈদুল আজহা উদযাপন করবে। বাংলাদেশ টেলিভিশন, বাংলাদেশ বেতার ও বেসরকারি গণমাধ্যমের যথাযথ গুরুত্ব সহকারে বিশেষ অনুষ্ঠান প্রচার করবে এবং সংবাদপত্রে বিশেষ সংখ্যা প্রকাশ করা হবে।
ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে দেশের সব হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, বৃদ্ধনিবাস, মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে উন্নতমানের খাবার পরিবেশন করা হবে। বিদেশে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস ও মিশনে যথাযথভাবে ঈদুল আজহা উদযাপন করা হবে।
এ উপলক্ষে সারাদেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রক্ষার্থে বিশেষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কোরবানি পরবর্তীসময়ে কোরবানি করা পশুর রক্ত বা বর্জ্যে যাতে পরিবেশ দুর্গন্ধময় না হয় সে বিষয়ে সব প্রকার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদুল আজহার পূর্ববর্তী জুমার খুতবায় এ বিষয়ে মুসল্লিদের সচেতন করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা ও বিজ্ঞাপন প্রচার করা হবে।
ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক মো. আনিছুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, স্বরাস্ট্র, স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ, স্থানীয় সরকার,পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়, তথ্য, জনপ্রশাসন, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন, ইসলামিক ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর সংস্থার প্রতিনিধিরা ভার্চ্যুয়াল সভায় অংশ নেন।
সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের পক্ষে আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ, আল্লামা মুফতি রুহুল আমিন, মাওলানা আনাস মাদানী, মুফতি দিলাওয়ার হোসাইন, মাওলা নুরুল আমিন, হাফেজ মাওলানা আব্দুল আলিম রিজভী, মুফতি মাওলানা সাজিদুর রহমান, মাওলানা ড. কাফিলুদ্দীন সরকার সালেহী, মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক, মাওলানা মোসাদ্দিক বিল্লাহ আল মাদানী প্রমুখ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে অংশ নিয়ে তাদের মতামত দেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭২০ ঘণ্টা, জুলাই ১২, ২০২০
এমআইএইচ/এএ