সাতক্ষীরা: ঘূর্ণিঝড় আম্ফানের ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার আগেই ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে ফের লণ্ডভণ্ড হয় সাতক্ষীরার আশাশুনি উপজেলার প্রতাপনগর ইউনিয়ন।
জলোচ্ছ্বাসের প্রভাবে খোলপেটুয়া ও কপোতাক্ষের বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয় পুরো এলাকা।
ঠিক এমনি এক পরিস্থিতিতে পানিতে ডুবে থাকা প্রতাপনগর হাওলাদার বাড়ি জামে মসজিদে সাতার কেটে গিয়ে প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায় করতেন ইমাম হাফেজ মইনুর ইসলাম। তার এই সাতার কেটে মসজিদে যাওয়ার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
ভিডিওটি দেখে এগিয়ে আসে ডু সামথিং ফাউন্ডেশন। স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন হিউম্যানিটি ফার্স্টের মাধ্যমে তারা ইমাম হাফেজ মইনুর ইসলামের যাতায়াতের সুবিধার্থে একটি নৌকা উপহার দেয়।
নৌকা দেওয়ার কিছুদিন পরেই এগিয়ে আসে আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন। সংগঠনটি এলাকাবাসীর কথা চিন্তা করে প্রতাপনগরের হাওলাদার বাড়ি ভাঙন পয়েন্টে একটি ভাসমান মসজিদ তৈরি করে দিয়েছে।
বুধবার (০৬ অক্টোবর) জোহরের নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে ভাসমান মসজিদটি উদ্বোধন করা হয়।
আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মসজিদটির উদ্বোধন করেন।
প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভাসমান মসজিদটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশন মসজিদে নুহ (আঃ)’। হাওলাদার বাড়ি জামে মসজিদের কমিটিই ভাসমান মসজিদটি পরিচালনা করবে।
৫৫ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থ বিশিষ্ট একটি নৌকার ওপর নির্মিত ওই ভাসমান মসজিদে একসঙ্গে ৬০-৭০ জন নামাজ আদায় করতে পারবেন।
ভাসমান এই মসজিদে রয়েছে মিনি অজুখানা, টয়লেট, সোলার লাইট, সাউন্ড সিস্টেম, কোরআন শরীফসহ বুক শেলফ।
এছাড়া ভাসমান মসজিদে মুসল্লিদের যাতায়াতের জন্য দেওয়া হয়েছে একটি ছোট নৌকা।
আলহাজ্ব শামসুল হক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন জানান, প্রতাপনগরের মানুষ বিপন্ন হতে চলেছে। সেই সঙ্গে এখানকার ঘরবাড়ি, স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদ্রাসা সব শেষ হয়ে যাচ্ছে। মানুষ মসজিদে গিয়ে আল্লাহকে ডাকার সুযোগটুকুও হারাতে বসেছে। এজন্য এই ভাসমান মসজিদের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৬, ২০২১
এসআইএস