ঢাকা: বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদের উদ্যোগে সাভারের দারুল উলুম কলমা মাদরাসায় জাতীয় হুসনে সাওত তিলাওয়াতুল কুরআন হদর প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান হয়েছে।
শনিবার (১১ ডিসেম্বর) অনুষ্ঠিত এ প্রতিযোগিতায় বৃহত্তর ঢাকা বিভাগের ৩৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
এ প্রতিযোগিতায় বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন হুফফাজুল কুরআন ফাউন্ডেশনের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক হাফেজ মাওলানা ইমরান নুরুদ্দিন এবং প্রশিক্ষক হাফেজ কারি হাসিবুল্লাহ।
প্রতিযোগিতার প্রথম রাউন্ডে তাহফিজুল কুরআন বিভাগের প্রায় দুইশ’ শিক্ষার্থী অংশ নেয়। সেখান থেকে ফাইনাল রাউন্ডের জন্য নির্বাচিত হন ২২ জন। ফাইনাল রাউন্ডে চূড়ান্তভাবে প্রথম স্থান অধিকারী হন বায়তুল হিকমাহ মাদরাসার শিক্ষার্থী ফাহিম বিন শহিদুল্লাহ। দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন মাদরাসাতুল কুরআন ওয়াস সুন্নাহ ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার শিক্ষার্থী মুহাম্মদ নাজমুল হাসান। তৃতীয় স্থান অধিকার করেন মানহালুত তাহফিজ বাংলাদেশের শিক্ষার্থী সানীম মাহমুদ তাসনীম। এ তিনজন বাদেও ১৯ জনকে বিশেষ পুরস্কার দেওয়া হয়।
পুরস্কার বিতরণ করেন সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শাইখুল হাদিস আল্লামা মুহিউদ্দীন রাব্বানী। এছাড়াও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেশের শীর্ষস্থানীয় ওলামায়ে কেরামের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন দারুল উলুম মাদানীনগর মাদরাসার নাজিমে তারবিয়াত মাওলানা মাহমুদুল হাসান, মাদরাসাতুল কাউসার আল ইসলামিয়ার প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা সাইদুর রহমান সাইদ, দারুল উলুম বাইতুল জান্নাত মাদরাসার শায়খুল হাদিস মাওলানা নুরুল্লাহ, বিশ্বের অন্যতম প্রধান কারি শাইখ আহমদ বিন ইউসুফ আল আযহারী, জামিয়া ইসলামিয়া মোহাম্মদী আশরাফুল মাদারিসের শিক্ষা সচিব মাওলানা আশরাফ মাসরুর, জামিয়াতুল মানহাল মাদরাসার উস্তাযুল হাদিস মুফতি আদনান মাসউদ, বিশিষ্ট আলোচক ও গবেষক ড. মুফতি জাকারিয়া নূর, দারুল উলুম কলমা মাদরাসার শিক্ষা সচিব মাওলানা আবরার মাহফুজ প্রমুখ।
সভাপতি তার বক্তব্যে বলেন, পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ গ্রন্থ আল কুরআন। যার ওপর কুরআন নাযিল হয়েছে, তিনি শ্রেষ্ঠ মানব। যেই স্থানে নাযিল হয়েছিল, সেই স্থান শ্রেষ্ঠ স্থান। যেই মাসে নাযিল হয়েছিল, সেই মাস শ্রেষ্ঠ মাস। যেই রাতে নাযিল হয়েছে, সেই রাত শ্রেষ্ঠ রাত। যেই উম্মতের ওপর নাযিল হয়েছে, সেই উম্মত শ্রেষ্ঠ উম্মত। যারা এ কুরআন পড়ান এবং পড়েন, তারা শ্রেষ্ঠ শিক্ষক এবং ছাত্র। যারা এর সংশ্রবে এসেছেন, তারাই দামি হয়েছেন। তাই এ কুরআনের প্রতিযোগিতা শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগিতা এবং যারা প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে, তারাও শ্রেষ্ঠ প্রতিযোগী।
তিনি আরও বলেন, এ কোমলমতি শিশুরা আমাদের আগামীর ভবিষ্যৎ। তারা যদি শুদ্ধভাবে কুরআন তেলাওয়াত শিখে এবং সেই অনুযায়ী আমল করে, তাহলে তাদের তেলাওয়াতে সমাজ অনুপ্রাণিত হবে। এর ফলে আমাদের আগামীর সমাজ কুরআনময় সমাজ হবে ইনশাআল্লাহ।
পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ আইম্মাহ্ পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য মাওলানা আহসান মাহবুব, মুফতি সুহাইল আহমাদ, মাওলানা ফরিদ আনসারী, মুফতি আম্মার মনসুর প্রমুখ।
আয়োজক সংগঠনের পক্ষ থেকে সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আফসার মাহমুদ উক্ত আয়োজনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে আরও বলেন, পুরো মুসলিম বিশ্বে 'হুসনে সাওত' শিরোনামে ভালো মানের আয়োজন থাকলেও বাংলাদেশে সম্ভবত 'বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ'ই প্রথম এর সূচনা করেছে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, আগামীতে আমাদের এ প্রতিযোগিতায় বহির্বিশ্বের আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পরিচিত ব্যক্তিত্বরা বিচারকের আসন অলংকৃত করবেন ইনশাআল্লাহ! বাংলাদেশ আইম্মাহ পরিষদ এ বিষয়ে সুদূর প্রসারী পরিকল্পনা করছে।
সভাপতির দোয়ার মাধ্যমে জাতীয় হুসনে সাওত তিলাওয়াতুল কুরআন হদর প্রতিযোগিতা-২০২১ এর প্রতিযোগিতা ও পুরস্কার বিতরণী পর্বের সমাপ্তি হয়। তিনি দোয়ায় সদ্য প্রয়াত হেফাজত মহাসচিব আল্লামা নুরুল ইসলাম রহ. এর মাগফিরাত কামনা করেন এবং দেশের জনগণ ও বিশ্ববাসীর জন্যও দোয়া করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৩১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১২, ২০২১
এমএইচ/এসআই