ক’দিন যেতে না যেতেই শেয়ালের কাছে নানান অভিযোগ আসতে শুরু করলো। খরগোশ এসে কেঁদে কেঁদে বললো, শেয়াল ভাই, কুকুর আমার ছোট ভাইটিকে ধরে নিয়ে গেছে।
দুই.
একটু পরেই গেল এক খট্টাস। সে চোখের জলে বললো, একি শুরু হয়েছে বনে? কুকুরের ভয়ে আমরা বাড়িছাড়া।
ওরা আমাদের যেখানে পায় সেখানেই খাবলে ধরে। আমার ছেলের একটা পা ভেঙে ফেলেছে তারা। আমরা তো আর টিকে থাকতে পারছিনে ভাই।
এসব কথা শুনে এক শেয়াল গেল কুকুরের কাছে। কুকুর ছিল ক্ষুধার্ত। শেয়ালটি কাছে যেতেই তাকে খপ করে ধরে কামড়িয়ে রক্তাক্ত করে ফেলল। সে কোনোমতে দৌড়ে চলে এলো। কুকুরের ভয়ে বন কম্পমান।
সব পশু-পাখি গেল এক মুরুব্বি শেয়ালের কাছে।
তারা বললো, তোমরা কোন লোভে পড়ে এ হিংস্র আর ভয়ংকর কুকুরকে এ বনে থাকতে দিয়েছ? এখন তো এ বনে আর থাকা নিরাপদ নয়। কুকুরের পেটে যাওয়ার আগে তাড়াতাড়ি একটা ব্যবস্থা করো নইলে পালাও।
এসব কথা শুনে শেয়ালের কান গরম হয়ে গেল। শেয়ালেরা পরামর্শ করে পরের দিন কুকুরের কাছে গিয়ে বললো, এ বনে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য তোমাদের থাকতে দিয়ে কি আমরা অপরাধ করেছি? কই তোমাদের শান্তি? তোমরা বনে অশান্তি সৃষ্টি করছ। এভাবে চলতে পারে না। কী চাও বলো।
কুকুরি শান্ত গলায় বললো, শান্তি যদি চাও তো কুকুর মশাইকে বনের রাজা বানাতে হবে। রাজা না হয়ে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা যায় না। শেয়ালেরা বলল, এতোদিন তো আমরা বনের রাজা ছাড়াই মেলা সুখে শান্তিতে ছিলাম। এখন রাজা বানাতে হবে কেন?
কুকুরি বললো, সেটা তোমাদের ব্যাপার ভাই। শান্তি চাও তো রাজা বানাও।
তারা মুখ চাওয়া-চাওয়ি করে কুকুরকে বললো, আচ্ছা ঠিক আছে, এ বনের রাজা বানালাম তোমাকে। এবার হলো তো?
কুকুরি মুচকি হেসে বলে, তাহলে আমি হলাম গিয়ে তোমাদের রানী। কী, আমি রানী না?
শেয়ালেরা খুব কষ্ট করে বললো, হ্যাঁ তুমি হলে আমাদের রানী। মানে রানীমা।
কুকুর বললো, তোমরা এবার আমাদের কুর্ণিশ করে চলে যাও। আগামীকাল বিকেল বেলা ওই মাঠে সবাই উপস্থিত থাকবে। ঠিক আছে?
সবাই নতুন রাজা আর রানীকে কুর্নিশ করে যার যার ঘরে চলে গেল।
চলবে...