ঢাকা, শনিবার, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

পলাশের ইচ্ছাপূরণের গল্প

সোহেনা আলী আফিফা | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৪০ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৩, ২০১০
পলাশের ইচ্ছাপূরণের গল্প

৪র্থ শ্রেণীর ছাত্র ছোটন ও পলাশ। দুজনেই একসঙ্গে পড়াশোনা করে, একসঙ্গে খেলাধুলা করে, একসঙ্গেই তাদের সবকিছু।

তবে তাদের মধ্যে পার্থক্যটা কোথায়? হ্যাঁ পাথর্ক্য অবশ্য একটা আছে। তা হল ছোটনদের বাসার ‘হেল্পিং হ্যান্ড’ হিসেবে কাজ করে পলাশ। আর এ কাজটি সে দুই বছর ধরে করছে।

পলাশরা তিন ভাই-বোন। ভাই-বোনদের মধ্যে পলাশ হচ্ছে মেজো। পলাশের বাবা নেই। মা অন্যের বাসায় কাজ করে যে টাকা পায় তা দিয়ে সংসার চালানো অসম্ভব। তাই বাধ্য হলে পলাশকেও একই পথ বেছে নিতে হয়েছে।

ছোটনদের বাড়িতে কাজ করতে আসার পর পলাশ দেখে তার সমবয়সী ছোটন পড়াশোনা করে। তা দেখে পলাশেরও পড়াশোনা করার ইচ্ছে জাগে। কিন্তু অভাবের তাড়নায় তার ইচ্ছে পূরণ হবে না ভেবে সে মনের মধ্যেই তার ইচ্ছেটা লুকিয়ে রাখে।

ছোটনের বাবা-মা দুজনেই চাকরিজীবী। পলাশ তাদের হেল্পিং হ্যান্ড হলেও কখনো কেউ তার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেনি। পলাশ সবসময় ছোটনের সঙ্গে থাকতো। একসময় ছোটনের ছোট মনে হঠাৎ প্রশ্ন জাগে, আমি পড়াশোনা করি কিন্তু পলাশ কেনো করে না। আমি যদি করতে পারি তবে পলাশও করতে পারবে। ছোটন তার এই আবদার নিয়ে ওর বাবা-মার কাছে গেল। বাবা-মা প্রথমে মেনে না নিলেও শেষে রাজি হয়।

বর্তমানে এখন তারা কদমতালা উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে। ছোটন জানায়, পলাশ আমার মতোই একটা ছেলে। আমি পড়াশোনা করতে পারলে ও পারবে না কেন?

মনের ইচ্ছা পূরণ হওয়ায় পলাশও খুব খুশি। পলাশ জানায়, কদমতলা বস্তিতে থেকে সে কখনো ভাবতেই পারেনি সে পড়াশোনা করবে। পড়াশোনা শেষ করে ভাল চাকরি করে মার কষ্ট দূর করবে এটাই তার স্বপ্ন।

পলাশ পড়াশোনা করে বড় হতে চায়। তবে তার মনে কেবলই চিন্তা জাগে ‘শেষ পর্যন্ত সে কি পারবে তার ইচ্ছা পূরণ করতে?’

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।