ঘুমালে আমাদের শরীরে কোনো সাড়া থাকে না। আমরা জানতে পারি না শরীরের ভেতর কি ঘটছে।
আমাদের শরীরে রয়েছে অসংখ্য কোষ। এই কোষগুলো আবার অনেক সময় ঝিমিয়ে পড়ে। আমাদের ঝিমিয়ে পড়া কোষগুলোকে চাঙ্গা করে তুলে জীবনীশক্তি ফিরিয়ে আনতেই মূলত আমাদের শরীরের ঘুমের প্রয়োজন হয়।
বিজ্ঞানীদের মতে মাথার মধ্যে ঘুমের একটা কেন্দ্র রয়েছে। আমাদের রক্তে রাসায়নিক চুন জাতীয় এক রকম পদার্থ থাকে। এর বৈজ্ঞানিক নাম ক্যালসিয়াম আয়ন। আয়নের অন্যতম কাজ হলো ঘুমের কেন্দ্রকে নিয়ন্ত্রণ করা।
আমাদের মস্তিষ্কের স্নায়ুমণ্ডলীতে ঘুমের কেন্দ্রে প্রয়োজনমাফিক আয়ন যখন ঢুকে পড়ে তখন আমাদের ঘুম পায়।
গবেষণায় দেখা গেছে, এই ক্যালসিয়াম যদি সরাসরি রক্তে মিশিয়ে দেওয়া যায়, তবে আমাদের ঘুম পাবে না।
তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়াচ্ছে এই যে আমরা পরিশ্রান্ত হয়ে পড়লে নানা রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় আমাদের ঘুমের কেন্দ্রকে ভালোমতো সংবেদনশীল করে তোলার পর ক্যালসিয়াম আয়ন তার কাজ আরম্ভ করে আমাদের ঘুম পাড়িয়ে দেয়।
ঘুমের মধ্যে শরীরে দুটো কাজ হতে থাকে। প্রথমত, আমাদের মস্তিষ্কের কাজ একদম বন্ধ করে দেওয়া যাতে আমাদের ইচ্ছে, চেতনা, এরা সবাই অকেজো হয়ে পড়ে। দ্বিতীয়ত, শরীরের অধিকাংশ কলকব্জাদের ঘুম পাড়িয়ে দেওয়া।
সাধারণত একজন মানুষ ঘুমন্ত অবস্থায় প্রায় বিশ থেকে চল্লিশ বার পাশ ফেরে। রক্ত চলাচল নিজের নিয়মে চালু থাকে, হৃদস্পন্দন কিছুটা কমে যায়। হজমের কাজ স্বভাবিক চলতে থাকে। লিভার আর কিডনী তাদের স্বাভাবিক কাজ চালিয়ে যায়।
ঘুমালে শব্দ, গন্ধ, আলো, ঠাণ্ডা, গরম এদের বোধশক্তি সমান থাকে। তবে শরীরের তাপমাত্রা প্রায় এক ডিগ্রী সেন্টিগেড কমে যায়। ঘুমানোর সময় শরীরের কোষগুলো সঞ্চিত খাদ্য থেকে বর্জ্য আলাদা করতে থাকে।
বাংলাদেশ সময়: ০৯১৮ ঘণ্টা, মার্চ ২০, ২০১৩
সম্পাদনা: আসিফ আজিজ, বিভাগীয় সম্পাদক, ইচ্ছেঘুড়ি[email protected]