ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

গল্পে গল্পে অঙ্ক শিখি

হাকিম জেলের জাদু

ইমরুল ইউসুফ, কন্ট্রিবিউটিং এডিটর | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৩
হাকিম জেলের জাদু

সকালে ঘুম থেকে উঠে দীপন তো অবাক। তাদের বাড়ির সামনের পুকুরটি বৃষ্টির পানিতে ভরে গেছে।

পুকুরের পাড় ছাপিয়ে পানি চলে যাচ্ছে বিলের দিকে। পানির সঙ্গে চলে যাচ্ছে মাছ। এই দৃশ্য দেখে দীপন দৌড়ে তার বাবার কাছে গেল। বলল, বাবা পুকুর থেকে মাছ চলে যাচ্ছে। শিগগির মাছ ঠেকানোর ব্যবস্থা করো। তা না হলে পুকুরে আর একটি মাছও থাকবে না। দীপনের বাবা এই কথা শুনে কপাল কুঁচকালেন। বললেন, কাল রাতে এত বৃষ্টি হয়েছে যে পুকুর ভরে গেছে! চল তো দেখি পুকুরের কী অবস্থা!

বাবার হাত ধরে পুকুর পাড়ে এলো দীপন। পুকুরের এমন অবস্থা দেখে দীপনের বাবা অস্থির হয়ে উঠলেন। জোর গলায় ডাকলেন তাদের বাড়ির কাজের ছেলে কালামকে। বললেন, কালাম শিগগির হাকিম জেলকে খবর দে। মাছ যা যাওয়ার গেছে। বাকি মাছগুলো তো ধরতে হবে।

খবর পেয়ে চলে এলো হাকিম জেলে। দীপনের বাবা প্রয়োজনীয় মাছ রেখে বাকি মাছগুলো জেলের কাছে বিক্রি করে দিলেন। মাছ নিয়ে বাজারে গেল হাকিম জেলে। হাকিম জেলের হাতে যে জাদু আছে একথা তার খুব ঘনিষ্ঠ এমন দুই একজন জানত। বন্ধুরা, চলো হাকিম জেলে কেমন জাদু জানে তা জেনে নিই।

হাকিম জেলে বাজারে এসে বসার সঙ্গে সঙ্গে এক ক্রেতা এলো তার কাছে। ক্রেতা দরদাম করে দেখে শুনে মোট ১৬টি মাছ কিনল। মাছগুলো বিক্রির পর জেলে হাত রাখল তার মাছের পাত্রে। সঙ্গে সঙ্গে পাত্রে রাখা মাছের সংখ্যা দিগুণ হয়ে গেল। এরপর আরেকজন অর্থাৎ দ্বিতীয় ক্রেতাও তার কাছ থেকে গুনে গুনে ১৬টি মাছ কিনল।

দ্বিতীয় ক্রেতা চলে যাওয়ার পর হাকিম জেলে এদিক-ওদিক তাকাল। দেখল তার দিকে কেউ তাকিয়ে আছে কি না। সে দেখল তার দিকে কেউ তাকিয়ে নেই। তখন সে তার মাছের পাত্রে চুপি চুপি আবার হাত রাখল। সঙ্গে সঙ্গে পাত্রে থাকা মাছের সংখ্যা হয়ে গেলো দ্বিগুণ।

কিছুক্ষণ পর তৃতীয় ক্রেতা এলো তার কাছ থেকে মাছ কিনতে। তৃতীয় ক্রেতাও তার কাছ থেকে ১৬টি মাছ কিনল। মাছ বিক্রির পর জেলে মাছের পাত্রে আবার হাত রাখল। সঙ্গে সঙ্গে পাত্রে থাকা মাছের সংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে গেল। হাকিম জেলে ভাবল- আজ আর মাছ বিক্রি করবে না।

এমন সময় দেখল একজন ক্রেতা তার দিকে এগিয়ে আসছে। তার কাছে এসে বলল, তোমার পাত্রে কতোটা মাছ আছে? আমি সবগুলো মাছ কিনতে চাই। জেলে বলল, আমি আজ আর মাছ বিক্রি করব না। যা আছে আমার বাড়ির জন্য লাগবে। ক্রেতা বলল, আমি কোনো কথা শুনতে চাই না। বাড়িতে মেহমান এসেছে। মাছ আমার লাগবেই।

জেলে মন খারাপ করে বলল, আচ্ছা ঠিক আছে। তখন সে তার মাছের পাত্রে আবার হাত ছোঁয়াল। সঙ্গে সঙ্গে পাত্রের অবশিষ্ট মাছ দ্বিগুণ হয়ে গেল। চতুর্থ ক্রেতাও তার কাছ থেকে ১৬টি মাছ কিনল। ক্রেতা চলে যাওয়ার পর জেলে মাছের পাত্রে হাত দিয়ে দেখল পাত্রে আর একটি মাছও অবশিষ্ট নেই। সে ভেবেছিল- খাওয়ার জন্য কিছু মাছ বাড়িতে নিয়ে যাবে। কিন্তু তা আর হলো না।

বন্ধুরা, তোমাদের এখন মাথা খাটিয়ে বলতে হবে হাকিম জেলে দীপনের বাবার কাছ থেকে কতোটি মাছ কিনেছিল?

উত্তর মিলিয়ে নাও: হাকিম জেলে দীপনের বাবার কাছ থেকে মোট ৩০টি মাছ কিনেছিল। কারণ প্রথম ক্রেতা ১৬টি মাছ কেনার পর পাত্রে মাছ ছিল ১৪টি। এই ১৪টি মাছ দ্বিগুণ হয়ে ২৮টি হওয়ার পর দ্বিতীয় ক্রেতা তা থেকে কিনেছিল ১৬টি মাছ। এতে জেলের মাছের পাত্রে মাছের সংখ্যা কমে দাঁড়ায় ১২টিতে। ১২টি মাছ আবার দ্বিগুণ হয়ে ২৪টি হওয়ার পর তৃতীয় ক্রেতা তা থেকে ১৬টি মাছ কিনলো। জেলের পাত্রে তখন মাছ থাকলো ৮টি। এই ৮টি মাছ দ্বিগুণ হয়ে ১৬টি হওয়ার পর চতুর্থ ক্রেতা যখন ১৬টি মাছ কিনলো তখন জেলের মাছপাত্রে আর একটি মাছও অবশিষ্ট থাকলো না।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৬, ২০১৩
এএ/আরকে[email protected]

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।