অবশেষে ঈদটা কিন্তু এসেই গেল। ছোটবেলায় দিন গুণতাম কবে আসবে ঈদ।
ঈদ আজ দু’ভাগে বিভক্ত। এক ভাগ একালের, আরেক ভাগ সেকালের। সময় বদলে গেছে। বদলে গেছে অনেক কিছু। ঈদ পালনের ধরন, সেটাও গেছে বদলে।
আগে চাঁদ ওঠার পর বাবার কাছে বায়না ধরতাম গরু কেনার জন্য। বাবা আজ-কাল বলে বলে ঈদের ঠিক দু’দিন আগে গরু কিনতেন। তারপর থেকে সব কিছু ছেড়ে সেই গরুর পিছনে।
ঈদের দিন সকালে গরুকে গোসল দেওয়ার পর থেকেই মনটা খারাপ হয়ে যেত। এখনো বুঝিনি কি করে নীরিহ প্রাণীটি দু’দিনে পোষ মানতো।
অনেক মজার আর উৎসাহ-উদ্দীপনার ছিল সেকালের ঈদ। একালের ঝুলিতে আর কিছুই নেই...
ঝুলি পুরো ফাঁকা। আজ বাবা নেই। নাগরিক সভ্যতা আর জীবন-জীবিকার টানাপোড়েনে সংসারের সব দায়িত্ব আমাকেই পালন করতে হয়। সেকালের সব কিছু আজ দেওয়ালে টাঙানো সাদাকালো অতীত।
ওই দূর আকাশে ঈদের চাঁদ উঁকি দেওয়া শুরু করলো। ব্যস্ততার কারণে এক নজর চাঁদটি দেখারও সময় পেলাম না। সংবাদমাধ্যমের ব্রেকিং নিউজে দেখলাম ঈদের চাঁদের খবর। মা ফোন করে বলল, বাবা ঈদের চাঁদ উঠলো। তোর প্রস্তুতি কত দূর। কি করবি এবার। বললাম, দেখি!
ফোনটা রেখে লাইটটা বন্ধ করে বসে বসে ভাবতে লাগলাম। হঠাৎ এক কণ্ঠস্বর ভেসে উঠলো। বাবা, গরু কখন কিনবি? নিঃশ্বাস বন্ধ হয়ে আসছিল। হঠাৎ মনে পড়লো বাবা আমার কাছে আজ রাতের স্বপ্নের বস্তুর মতো।
এখন সব সময় চিন্তা করি কেন যে বড় হলাম! ছোট হতে খুব ইচ্ছে করে ! কিন্তু যে পারি না ! এবার তাহলে ছোট্টটা হয়েই যাই! আলাদিনের প্রদীপটা কি আমাকে ছোটবেলায় ফিরিয়ে দেবে!
তারপর আবার বাবার কাছে বায়না ধরবো সবার আগে গরু কেনার জন্য।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪২ ঘণ্টা, অক্টোবর ১২, ২০১৩
এএ/এসআরএস[email protected]