ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

তোমাদের গল্প

ছেলেটার জন্য ভালোবাসা

অরূপ চক্রবর্তী | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৩১ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১০
ছেলেটার জন্য ভালোবাসা

অর্কর মনটা আজ খারাপ। সকালে উঠতে গিয়ে দেরি হওয়ায় মা খুব বকেছে।

ওরই বা কী দোষ? স্বপ্নটা যে শেষ হচ্ছিল না। স্বপ্নটা ছিল খুবই সুন্দর। চারদিকে সবুজ, কত ফুল ফুটেছে। সাথে সাথে মা’র ডাক, ‘অর্ক ওঠ্! তোকে নিয়ে আমি আর পারি না। প্রতিদিন একই ঝামেলা!’  ইস্। স্বপ্নটা শেষই হলো না। তার ভাবনা, প্রতিদিনই কেন স্কুলে যেতে হবে? আস্তে আস্তে গিয়ে ব্রাশটা তুলে নেয় অর্ক। আজও দেরি হয়ে যায় রেডি হতে। সবশেষে অর্ককে তার মা স্কুল বাসে উঠিয়ে দেন। শব্দ করে ছুটে চলে বাস। মাঝে মাঝে থামে, আবার চলে। স্কুলে পৌঁছার পর সবাই খুব হুড়োহুড়ি করে বাস থেকে নামে। কিন্তু অর্ক নামে একটু নামে ধীরে ধীরে। নামার পরই অর্কের সাথে দেখা মেলে হাফপ্যান্ট পড়া ১০-১২ বছরের এক ছেলের।

ছেলেটা : ভাইয়া কিছু টাকা দিবেন? ভাত খাবো।
অর্ক : আমার কাছে তো টাকা নেই।
ছেলেটার মুখ একটু বিষন্ন হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে ছেলেটা অন্যদিকে চলে যেতে থাকে। কাসের ঘন্টা পড়ে গেছে। অর্ক পা চালায় কাসের দিকে। কাসে মন নেই অর্কর। হাফপ্যান্ট পড়া ছেলেটির কথা বারবার মনে হয় অর্কর। ছেলেটা কী ভাত খেয়েছে?

অর্ক! তোমার পড়ায় মনোযোগ নেই কেন ? আচমকা সে ফিরে আসে বাস্তব জগতে।
না স্যার! মানে, আমি...মানে।
কাসে মনোযোগী হও, বুঝেছ...
হ্যাঁ, স্যার।
আজ স্কুল ছুটির সময় অর্কর মা আসবে। মাকে বললে মা নিশ্চই কিছু টাকা দেবে। কিন্তু ছেলেটা থাকবে তো? নানা ভাবনা তার মনে উকি দেয়। স্কুল ছুটির আগ পর্যন্ত মনে মনে প্রার্থনা করতে থাকে, ছেলেটা যেন থাকে।

ছুটির ঘন্টা পড়েছে। বাইরে এসে দেখে মা দাঁড়িয়ে আছে। মাকে ওই ছেলেটার কথা বলে অর্ক। ছেলের এরকম মনোভাব মাকে বিষ্মিত করে। কিন্তু ছেলেটা কোথায়? ‘ওই যে কোণায় দাঁড়িয়ে আছে। ’ অর্ক আনন্দে চিৎকার করে উঠে।

অর্কর মা ছেলেটাকে একটি ৫০ টাকার নোট দিয়ে মাথায় হাত বুলিয়ে দেন। ৫০ টাকা পেয়ে ছেলেটার মন আনন্দে ভরে উঠে। সেই হাসি এক মুহূর্তেই ভালো করে দেয় অর্কর মন।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।