ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

দেশের সবেচেয়ে বড় ভাস্কর্য ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’

ইচ্ছেঘুড়ি ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২৩১ ঘণ্টা, মার্চ ৭, ২০১৪
দেশের সবেচেয়ে বড় ভাস্কর্য ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’

বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ভাস্কর্যটির নাম ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’। বাঙালির ইতিহাসে ৫২’র ভাষা আন্দোলন থেকে স্বাধীনতা অর্জন পর্যন্ত সমস্ত বীরত্বগাথাকে ধারণ করে নির্মিত এ ভাস্কর্য।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোডে সলিমুল্লাহ হল,জগন্নাথ হল ও বুয়েট সংলগ্ন সড়ক দ্বীপে স্বাধীনতা সংগ্রাম ভাস্কর্যটি স্থাপিত। ভাস্কর শামীম শিকদার ১৯৮৮ সালে ফুলার রোডে অবস্থিত সেকেলে বাংলো স্টাইলের বাড়ির (বর্তমানে প্রোভিসির ভবন) সামনে পরিত্যক্ত জায়গায় ‘অমর একুশে’ নামে একটি বিশাল ভাস্কর্য নির্মাণ শুরু করেন।

১৯৯০ সালের ফেব্রুয়ারিতে এক ঘরোয়া পরিবেশে প্রয়াত অধ্যাপক আহমদ শরীফ এটি উদ্বোধন করেন। ১৯৯৮ সালে ওই স্থানে উদয়ন স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ শুরু হলে ভাস্কর্যটি স্থান্তরের প্রয়োজন হয়। ভাস্কর্যটি শেষমেষ সড়কদ্বীপে এনে রাখা হয়। পরে ভাস্কর শামীম শিকদার ওই ভাস্কর্যটির অবয়ব পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করে ‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ নাম দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের আলোকে নতুনভাবে নির্মাণ করেন। একইসঙ্গে সড়ক দ্বীপটিকেও তিনি নিজের মনের মতো গড়ে তোলেন। ১৯৯৯ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এটি উদ্বোধন করেন।

‘স্বাধীনতা সংগ্রাম’ ভাস্কর্যটি বাঙালি জাতির গৌরবোজ্জ্বল সংগ্রামের ইতিহাসকে ধারণ করে নির্মিত। এ ভাস্কর্যটি মহান ভাষা অন্দোলন থেকে শুরু করে ৬৬’র স্বাধিকার আন্দোলন, ৬৯’র গণঅভ্যুত্থান, ৭১’র ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা সংগ্রামের আহ্বান, ২৫ মার্চের কালরাত্রি, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতা ঘোষণা, ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের বিষয় তুলে ধরা হয়েছে।

প্রতিটি আন্দোলনে নিহত হয়েছেন এমন ১৮ জন শহীদের ভাস্কর্য দিয়ে পুরো ভাস্কর্য নির্মিত। সবার নীচে ভাষা শহীদের ভাস্কর্য এবং সবার উপরে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য। এ ভাস্কর্যে আরো তুলে ধরা হয়েছে লক্ষ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার প্রতীক আমাদের লাল সবুজ পতাকা।

মূল ভাস্কর্য স্বাধীনতা সংগ্রামকে ঘিরে আরো অনেক ভাস্কর্য নির্মিত হয়েছে এ সড়কদ্বীপে। এখানে মোট ভাস্কর্য ১১৬টি। সবগুলোই শামীম সিকদারের গড়া। সবগুলোর রং শ্বেত শুভ্র। মূল ভাস্কর্য ছাড়া অন্য ভাস্কর্যগুলোর গড় উচ্চতা তিন থেকে চার ফুট। ত্রিভূজাকৃতির এই দ্বীপটির তিন কোণে তিনটি ভাস্কর্য রয়েছে। বাকিগুলো ফুলগাছ আর পাতাবাহর গাছের সারির মধ্যে চমৎকারভাবে উপস্থাপিত।

এখানে রয়েছে বঙ্কিমচন্দ্র, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর, জগদীশ চন্দ্র বসু, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, লালন, কাজী নজরুল ইসলাম, সুকান্ত, ড. মো. শহীদুল্লাহ, শিল্পী সুলতান, জিসি দেব, সুভাস বোস, কামাল আতাতুর্ক, মহাত্মাগান্ধী, রাজা রামমোহন রায়, মাও সে তুং, ইয়াসির আরাফাত, কর্নেল ওসমানী, তাজউদ্দিন আহমেদ, সিরাজ সিকদার প্রমুখের প্রতিকৃতি রয়েছে। ভাস্কর শামীম সিকদারেরও দুটি প্রতিকৃতি রয়েছে। আরও রয়েছে একটি হাতির চিত্তাকর্ষক ভাস্কর্য।

বাংলাদেশ সময়: ১২১০ ঘণ্টা, মার্চ ০৭, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।