ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

মশার জন্ম হল কিভাবে?

স্বপ্না দেবনাথ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪০ ঘণ্টা, মে ৬, ২০১১
মশার জন্ম হল কিভাবে?

অনেক অনেক দিন আগে ছিল এক দৈত্য। দৈত্যটি টপাটপ মানুষ ধরতো আর খেতো।

মানুষের মাংস ছিল তার খুব প্রিয়, আর মানুষের রক্ত পান করে সে আনন্দে আটখানা হয়ে যেত। সে মানুষের হৃদপিন্ড খেতে সবচেয়ে বেশি পছন্দ করত। এজন্য মানুষরা চিন্তা করলো দৈত্যকে যদি থামানো না যায় তবে সে আমাদের কাউকে বাঁচতে দেবে না। এজন্য মানুষরা একটি সভা ডাকল।

সভায় দৈত্যকে হত্যার জন্য আনেক ধরনের পরিকল্পনা হল। কিন্তু কোন যুক্তিই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য হচ্ছিল না। এমন সময় একজন হঠাৎ করে ওঠে দাঁড়িয়ে বলল, ‘আমি জানি কিভাবে ওই রাক্ষসটাকে হত্যা করতে হবে। ’ এই বলে সে দৈত্যটি শেষবার যেখান থেকে মানুষ ধরে ছিল সেখানে গেল। সেখানে সে মরার মতো পড়ে রইল। একটু পরেই দৈত্যটি সেখানে এলো। মানুষটাকে সেখানে শুয়ে থাকতে দেখে দৈত্যটি বলল, ‘এইসব মানুষগুলো আমার কাজ সহজ করে দিচ্ছে। এখন আমাকে আর তাদেরকে ধরে আনতে হবে না; সম্ভাবত তারা আমার ভয়ে আগেই মারা যাচ্ছে। হা! হা! হা!......... ’

তারপর দৈত্যটি মানুষটিকে ধরল এবং সে বলল, ‘ওহ, খুব ভাল, এটি এখনো গরম এবং তাজা আছে। একে দিয়ে একটি মজাদার খাবার খাওয়া যাবে। আর এ জন্য তার হৃদপিন্ড দিয়ে আমি রোস্ট খাওয়ার লোভ সামলাতে পারছি না। ’

দৈত্যটি মানুষটিকে ধরে তার কাঁধের উপর রাখল আর মানুষটি মরা মানুষের মতো ঝুলে রইল। মানুষটিকে নিয়ে গিয়ে সে ঘরের মাঝখানে ফায়ারপেলেসের (ঘর গরম রাখার জন্য যে জায়গায় আগুন ধরানো হয়) পাশে রাখল।

এমন সময় দৈত্যটি দেখল ফায়ারপেলেসে কোন কাঠ নেই। এজন্য সে কিছু কাঠ আনতে গেল। যখনই দৈত্যটি কাঠ আনতে গেল তখনই লোকটি ওঠে দৈত্যটির বড় চকচকে ছোরাটি কাছে নিয়ে রাখল। তারপর যেই না দৈত্যর ছেলেটি তার ঘরে ঢুকল অমনি তার গলায় লোকটি ছোরা ধরে বলল, ‘বল তোর বাবার জীবন কোথায়? তা না বললে আমি ছুরি দিয়ে তোর গলা কেটে ফেলব। ’

দৈত্যর ছেলেটি উচ্চস্বরে কেঁদে উঠল। সে বলল, ‘আমার বাবার জীবন তার বাঁ পায়ের গোঁড়ালিতে। ’

ঠিক তখনই দৈত্যটি ঘরে ঢোকার জন্য তার বাঁ পা ঘরের মধ্যে দিল। আর সাথে সাথে লোকটি তার ছুরিটি দৈত্যটির পায়ের গোঁড়ালির মধ্যে ঢুকিয়ে দিল। রাক্ষসটি তখন মাটিতে পড়ে গেল এবং মারা গেল। কিন্তু দৈত্যটি তখনো বলে চলল, ‘যদিও আমি মারা গেছি তবুও আমি মানুষকে খেয়েই যাব। ’

তখন লোকটি বলল, ‘তুই তা কখনো পারবি না শয়তান?’ এই বলে সে দৈত্যর দেহটি কেটে টুকরো টুকরো করল এবং টুকরোগুলো আগুনে পুড়িয়ে ফেলল। তারপর সে ওই ছাই নিয়ে বাতাসে ছুড়ে দিল।

তখন ঘটল এক আবাক কান্ড। প্রতিটি ছাইয়ের কণা এক একটি মশা হয়ে গেল। সেই ছাইয়ের আকাশ মশার আকাশে পরিণত হয়ে গেল। তখন লোকটি দৈত্যর হাসির শব্দ শুনতে পেল। সে শুনতে পেল, ‘আমি তোমাদেরকে সারাজীবন খেয়ে যাব। হু হু হু.............’

হঠাৎ লোকটি বুঝতে পারল যে একটি মশা তাকে কামড়াচ্ছে এবং তার গায়ে হুল ফুটিয়ে রক্ত খাচ্ছে। তারপর অনেক মশা তার গায়ে হুল ফুটিয়ে রক্ত পান করতে শুরু করল এবং সে তার গা চুলকাতে লাগল।

সেই থেকে মশা সৃষ্টি হল আর সেগুলো আমদের রক্ত খায় এবং মশা কামড়ালে আমাদের গা চুলকায়।

তবে বন্ধুরা তোমরা মশার হাত থেকে সাবধান থেকো। কারণ মাশা কামড়ালে কিন্তু ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসহ নানা ধরণের মারাত্মক রোগ হতে পারে।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।