ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

কিশোর গল্প (পর্ব-১)

ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান

সেই ভয়ংকর অনুভূতিটা আবার ফিরে এসেছে। গত তিন দিন ধরেই এটা হচ্ছে।

ঢাকার ব্যস্ততম রাজপথে দাঁড়ানো এখন অনিন্দ্য। কিন্তু তার মনে হচ্ছে কোনো এক অশরীরী তাকে ফলো করছে। এমন ব্যস্ত রাজপথেও যে ভৌতিক কোনো ব্যাপার ঘটতে পারে ধারণা ছিল না তার।

ভার্সিটি যাবে বলে বের হয়েছিল। কিন্তু মনটা খারাপ হয়ে গেছে। আজ আর যাবে না সিদ্ধান্ত নেয়। গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস ছিল। চিন্তা করে সে, কি কারণে তার সঙ্গে এমন হচ্ছে। কোনো কারণ খুঁজে পায় না। এতে তার অস্বস্তি আরও বেড়ে যায়।

গত তিনদিন আগে একটা বই কিনে এনেছিল নীলক্ষেত থেকে। সেই বইয়ের সাথে কি এর কোনো যোগসূত্র আছে, না অন্য কিছু। গতকাল সন্ধ্যা হবে হবে। তখন সে তাদের বাসার ছাদে । চারতলা বাসা। একদম উপরের তলায় শুধু ছাদ কমপ্লিট হয়েছে। এখনও দেয়াল তোলা হয়নি। সে ছিল তিনতলার ছাদে। এমন সময় দেখে বিশাল দুটো পা ঝুলে আছে চারতলার  ছাদ থেকে। মনে হচ্ছিল চারতলার ছাদে কেউ পা ঝুলিয়ে বসে আছে। কিন্তু এতবড় পা সাধারণ মানুষের হবে না।

আশ্চর্যজনক ব্যাপার দুটো পায়ের পাতায় আঙুল  চারটা করে। পা দুটো প্রায় তিনতলার ছাদ পর্যন্ত নেমে এসেছে। প্রথমে দেখার ভুল মনে করে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। আজ নিয়ে পরপর তিনবার ঘটলো এমন অদ্ভুত ঘটনা। একদম প্রথম দিন যেটা ঘটেছিলো সেটা হলো। নীলক্ষেত থেকে কিনে আনা বইটা নিয়ে। তার স্পষ্ট মনে আছে, সে বইটা পড়ে বালিশের পাশে শোবার আগে রেখেছিল। ঘুমানোর আগে শুয়ে শুয়ে বই পড়ার অভ্যাস আছে তার। কিন্তু সকালে উঠে দেখে বইটা টেবিলে। বাসার কেউ তার রুমে আসতে পারবে না। কারণ সে ঘুমানোর আগে রুমের দরজা বন্ধ করে ঘুমায়।

ব্যাপারটা অদ্ভুত লেগেছিল সেদিন তার কাছে। পরপর এমন রহস্যজনক ঘটনা অনিন্দ্যকে চিন্তায় ফেলে দিল। সে একটা রিকশা ডাক দেয়। বাসায় ফিরতে হবে। নাহ বাসায় যাবে না এখন। তার একটা ফ্রেন্ড আছে ওর বাসায় গিয়ে কিছুক্ষণ আড্ডা দিয়ে আসবে সে।
রিকশায় ওঠার আগমুহূর্তে ফুটপাথের দিকে চোখ যায়। একটা কালোমতো শুকনো লোক তার দিকে তাকিয়ে আছে। মধ্যবয়সী, ব্রিটিশ আমলে হিন্দু লোকেরা যে ধরনের শর্ট পাঞ্জাবি পরতো, তেমন একটা পাঞ্জাবি আর পাজামা পরা। কেমন অদ্ভুত লাগছে তাকে এই ড্রেসে। একটা অসামঞ্জস্যতা।

হুম তার চোখ দুটো অস্বাভাবিক। ভাটার আগুনের মতোই যেন জ্বল জ্বল করে জ্বলছে। যক্ষ্মারোগীদের এমন উজ্জ্বল চোখ হয়। চারদিকে তাকায় অনিন্দ্য। লোকজন রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে নিশ্চিন্ত মনে। তার মানে কারও চোখে পড়েনি এই অদ্ভুত লোকটা। পড়লে কিছুক্ষণের জন্যে হলেও থমকে দাঁড়াতো। হয়তো যান্ত্রিক শহরে সবাই যান্ত্রিক হয়ে গেছে। এসব ছাইপাস দেখার টাইম নেই কারও।

সে রিকশাওয়ালাকে তাগাদা দেয় চালানোর জন্য। রিকশা ছুটে চলে ...পিছন ফিরে আবার দেখে অনিন্দ্য। লোকটার পায়ে কোনো জুতো নেই... আরও অবাক হয় তার পায়ের আঙুল চারটা করে...।

[চলবে...]

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৭, ২০১৬
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।