ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৫৯)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৪৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৫৯) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
চলো কথাটা নোরাকে বলে আসি, জ্যাক বলে। ওরা তাই পাহাড়ের কাছে গিয়ে নোরাকে ডাকতে শুরু করে। 
নোরা! নোরা! কোথায় তুমি? 

কিন্তু নোরা জবাব দেয় না! সে গুঁটিশুটি মেরে ফার্ন ঝোপের আরো গভীরে চলে যায় এবং ভাবে কেউ তাকে খুঁজে পাবে না। তবে হঠাৎ-ই জ্যাক তার সামনে চলে আসে এবং আনন্দে চিৎকার করে ওঠে, ও, তুমি এখানে! মুরগিরা সব ফিরে এসেছে।

নোরা! ওরা জানতো ওটা ওদের খাবার সময়, দেখলে! এসো খাবার খাবে। আমরা তোমার জন্য খানিকটা রেখে দিয়েছি।

নোরা তার সঙ্গে সৈকতে যায়। পেগি তাকে চুমো খেয়ে বলে, এখন আর কোনো চিন্তা কোরো না। আমরা আবারও সবগুলো মুরগিকে নিরাপদেই ফিরে পেয়েছি।

নোরার বদলে, প্রতিদিন আমি মুরগির দেখাশোনা করলে ভালো হবে না, তোমার কী মনে হয়? মাইক জ্যাককে জিজ্ঞেস করে। কিন্তু জ্যাক মাথা নাড়ায়।  

না, সে বলে। ওটা নোরার কাজ- এবং দেখবে, এবার থেকে কাজটা সে খুব হিসেব করেই করবে, তাই না, নোরা?
হ্যাঁ, তাই করতে হবে, জ্যাক, তার ভাতের পুডিং খেতে খেতে, নোরা বলে এবং নিজেকে সে অনেক বেশি সুখী অনুভব করে।
আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি তাই করবো! অসতর্ক ছিলাম বলে খুবই দুঃখিত।
রহস্য দ্বীপ
ঠিক আছে, তিনজন একসঙ্গে বলে এবং ওরা সবাই নরম মনের আর একে অপরকে খুব ভালোবাসে, তাই সব ঠিক হয়ে যায়।
কিন্তু আমার জানতে ইচ্ছে করছে, পেগি বলে, সে আর নোরা তখন এঁটো থালা-বাসন পরিষ্কার করছে।
মুরগিরা তাহলে এমন চতুরের মতো নিজেদের কোথায় লুকিয়ে রেখেছিল?

ব্যপারটা বাচ্চারা খুব শিগগিরই জানতে পারে। কারণ, কিছুক্ষণ বাদে মাইক কিছু একটা আনতে উইলো বাড়িতে যাওয়ার পর, সে ওখানকার গুল্মের ওপর চকচকে উজ্জ্বল তিনটে ডিম দেখতে পায়! সে ওগুলো তুলে নিয়ে অন্যদের কাছে ছুটে আসে।  
ওই দুষ্ট মুরগিগুলো উইলো বাড়ির ভেতরে গিয়ে লুকিয়ে ছিল! তিনটে ডিম উঁচু করে ধরে, সে চিৎকার করে বলে।  

ভালো, ভালো, ভালো! বিস্ময়ে জ্যাক বলে। ভেবে দেখো আমরা সারাটা দ্বীপ ওদের কীভাবে আতিপাতি করে খুঁজলাম, আর বদমাশ মুরগিগুলো কিনা তখন হাতের কাছেই ছিল!

১২. পাহাড়ি গুহা
যতই দিন গড়ায়, ছেলে-মেয়েরা সবাই দ্বীপের বেহিসেবি সুখী জীবনে অভ্যস্ত হতে থাকে। একরাতে জ্যাক আর মাইক নৌকায় করে গিয়ে হ্যারিয়েট খালার খামারের পুরাতন সেই দুধের বালতিটা নিয়ে আসে, সঙ্গে বাগান থেকে বোঝাই সবজি। দুধের বালতি ভরে পাকা আলুবোখারাও আনে! এতসব দেখে মেয়েরা ভীষণ খুশি!

সঠিক আয়তনের বালতির কারণে ওরা এবার সহজেই ডেইজির দুধ সংগ্রহ করতে পারে। তবে বালতিটা কাজে লাগাবার আগে পেগি সেটা ভালো মতো ধুয়ে দেয়, কারণ আনার পর সেটা ধুলো ময়লাতে একেবারে মাখামাখি ছিল। জ্যাক বা মাইক ডেইজির দুধ দোয়াবার পর ওরা দুধের বালতিটিকে পাহাড় থেকে নেমে আসা ছোট্ট ঝরনার মাঝামাঝি একটা জায়গায় নিয়ে রাখে। বরফ শীতল জল দুধটাকে ঠান্ডা রাখে এবং গরমের দিনেও তা টকে যায় না।  

রহস্য দ্বীপজ্যাক দাদার খামার থেকে আনা বীজের প্যাকেটগুলো বের করে সবাইকে দেখায়। দেখো এটা হলো লেটুস বীজ, আর এখানে মূলা, সরিষা, ঝাল-শাক, আর লাল শিম! শিম বুনতে দেরি হলেও আমি হলফ করে বলতে পারি এই দ্বীপের উর্বর মাটিতে ওরা খুব দ্রুত বেড়ে উঠবে আর কিছু দিনের মধ্যেই আমরা ফলন পাবো।

সরিষা, ঝাল, শাক, আর মূলা খুব দ্রুত বেড়ে উঠবে! পেগি বলে। কী মজা! ভালো মতো সেচ না দিলে, উষ্ণ আবহাওয়াতে লেটুস খুব একটা বড় হয় না।
আমরা এসব কোথায় লাগাবো? মাইক জিজ্ঞেস করে।  

দ্বীপের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ছোট টুকরো জমিতে আমরা এসব চাষ করব। জ্যাক বলে। আর আমরা যদি বড় কোনো জমি প্রস্তুত করে সবজি বাগান বানাই, তবে আমাদের খোঁজে কেউ এখানে আসার পর বাগান দেখে সহজেই বুঝতে পারবে এখানে কেউ আছে! কিন্তু ছোট ছোট টুকরো জমিতে চাষ করলে কাউকে আসতে দেখলেই আমরা সেগুলোর ওপর সহজেই লতা-গুল্ম ছুড়ে দিতে পারবো।
জ্যাকের মাথায় সব সময়ই দারুণ সব বুদ্ধি, নোরা বলে। আমি জমি খুঁড়তে আর গাছ লাগাতে সাহায্য করবো।

ঠিক আছে সবাই মিলে কাজটা করবো, জ্যাক বলে। তাই ওরা সবাই মিলে ভালো ভালো জায়গা খুঁজে বের করে এবং সেখানকার মাটি খুঁড়ে, ওদের বহুমূল্য বীজ লাগায়। প্রতিদিন সেখানে সেচ দেওয়া এবং বেড়ে ওঠার সময় যাতে আগাছা বীজের শ্বাসরোধ করতে না পারে এসব দেখাশোনা করা পেগির কাজ।

চলবে....
ইচ্ছেঘুড়ি
বাংলাদেশ সময়: ২০৪১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।