ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৬৫)

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৩৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
রহস্য দ্বীপ (পর্ব-৬৫) রহস্য দ্বীপ

[পূর্বপ্রকাশের পর]
মাঝামাঝি আসার পর আমাদের আর কোন ঝামেলা পোহাতে হবে না, আনন্দে জ্যাক বলে। সবচেয়ে বড় কথা হলো ডেইজি এখন গুহার ভিতর যাওয়া পছন্দ করছে, আর সময় এলে তাড়াতাড়ি নেওয়ার সময় কোনো রকম ফোঁসফাঁসও করবে না।
জুলাই পেরিয়ে আগস্ট আসে। আবহাওয়া খুব ঝড়ো আর তপ্ত হয়ে ওঠে।

দু’তিনটে বজ্রঝড় হয় এবং ছেলে-মেয়েরা কয়েক রাতের জন্য উইলো বাড়িতে ঘুমায়। জ্যাক গুহার ভিতর ঘুমাবার জন্য তোড়জোড় শুরু করে।

কিন্তু সবাই বলে জায়গাটা খুব গরম আর বদ্ধ। ওরা তাই উইলো বাড়িতেই ঘাঁটি গাড়ে এবং মাথার ওপরকার ঘন সবুজ ছাদ আর মজবুত গুল্মে ছাওয়া তেজি বেড়া দেখে দেখে মনে মনে তৃপ্তবোধ করে।

শত শত বুনো রাজবেরি পাকে। দ্বীপের ছায়াময় প্রান্তর জুড়ে বুনো রাজবেরি দেখতে পাওয়া যায়। নিজেদের খামারের আশপাশে বাচ্চারা যেগুলো প্রায়ই দেখতে পেত সেই আগেকার মতো এগুলো আর পুঁচকে নয়, বরং অনেক বড়, রসালো আর মিষ্টি। এমনকি বাগানের গুলোর চেয়েও উৎকৃষ্ট।

মাখনের সঙ্গে খেতে খুব স্বাদের। চারপাশে ছড়ানো ছিটানো ঝোপ জঙ্গলের সব জায়গাতে রাজবেরি পেকে ওঠে, আর সব সময় বাচ্চাদের মুখ সেটা দিয়ে রাঙানো থাকে, কেননা নানান কাজে এদিক-ওদিক ছুটবার ফাঁকে ওরা তা ছিঁড়ে মুখে পুরে নেয়।

জ্যাক ডেইজির দুধ দোয়াতে যাওয়ার সময় রাজবেরি পাড়ে, আর মাইকও। পেগি ঝরনার জল আনতে যাওয়ার সময় রাজবেরি পাড়ে। নোরা মুরগিদের খাবার দিতে যাওয়ার সময়ও রাজবেরি পাড়ে।

বাদামও পাকতে শুরু করে, তবে সেগুলো তখনও খাবার উপযোগী হয়নি। জ্যাক হেজল-গাছের ভারী থোকার দিকে চেয়ে থাকে এবং পাকার অপেক্ষা করে। শিমের অবস্থা দেখতে যায়। ওগুলো পাড়ার উপযোগী হয়ে গেছে! ঝোপের ওপরে শিম ধরে আছে। সবুজ শিমগুলো কালোজামের ফুল আর ফলের সঙ্গে মিশে রয়েছে।  

আজ শিম খাবো! জ্যাক চেঁচায়। পেগি উইলো ডাল বুনে বেশ কয়েকটা ঝুড়ি বানায়, সেখান থেকে সে একটা উঠিয়ে নেয়। শিগগিরই শিম ভরে নিয়ে ফিরে আসে।

আরেকবার জ্যাকের মনে পড়ে তার দাদার খামারের একেবারে শেষ মাথার মাঠে সচরাচর মাশরুম হয়। আগস্টের শেষের দিকে এক ভোরে সে এবং মাইক এর খোঁজে নৌকায় করে বেরিয়ে পড়ে।  

চমৎকার একটা সকাল। মাইক মেয়েদেরও সঙ্গে নিতে চায়, তবে এভাবে দলবেঁধে যাওয়া মোটেই ঠিক নয়। কেউ দেখে ফেলতে পারে। সবে সূর্য উঠছে। পুবদিকে সূর্য উঁকি দেওয়ায় সারাটা আকাশ সোনালি হয়ে উঠেছে। পাশের ঝোপে ছোট্ট একটা হলদে পাখি উঁচু স্বরে গান গাইছে, পনির বাদে একটুকরো রুটি! এক ঝাঁক চড়াই গাছের ওপর পাগলের মতো কিচির মিচির করছে। ঘাসের উপর জমে বিন্দু বিন্দু ঘন শিশিরে ছেলেদের দু’জোড়া খালি পা পুরোপুরি ভিজে আসে। এক সময় হাঁটু পর্যন্ত ভিজে যায়, কিন্তু তাতে ওদের কিছু যায় আসে না। সকালের উষ্ণ রোদে চারপাশে কেবল নীল, সোনালি আর সবুজের ছড়াছড়ি।  

ওই তো মাশরুম! জ্যাক আনন্দে দু’তিনটা মাশরুম দেখিয়ে বলে। দেখো তরজাজা নতুন একটা, এই তো সবে শেষ রাতে হয়েছে। চলো! থলেতে ভরে নিই!

মাঠের ওপর অঢেল ব্যাঙের ছাতা। জ্যাক ছোটগুলো তোলে, কারণ সে জানে বড়গুলো খেতে তেমন মজা না, আর ওর ভেতর শূককীটও থাকতে পারে। আধঘণ্টার মধ্যে তাদের থলেটা ভরে আসে। এরই মধ্যে ওরা নৌকাটা যেখানে রেখে এসেছে সেখান থেকে রোদেলা মাঠের ওপর দিয়ে বেশ দূরে চলে এসেছে।  

থলে ভরা মাশরুম! জ্যাক দাঁত বের করে হাসে। এবার ওরা মাশরুম ভাজা, ডিম ভাজা, বুনো স্ট্রবেরি আর মাখন খেতে পারবে! ছেলেরা মাশরুম আনতে চলে গেলে মেয়েরা বুনো স্ট্রবেরির খোঁজে বের হয়।  

চলবে....
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২১, ২০১৭
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।