ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

দুষ্টু মেয়ের অদ্ভুত রূপকথা: জেন গুডল

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১৪৭ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
দুষ্টু মেয়ের অদ্ভুত রূপকথা: জেন গুডল জেন গুডল

ঢাকা: ইংল্যান্ডে জন্ম নেওয়া জেনের সবচেয়ে ভালো লাগে গাছের এক ডাল থেকে অন্য ডালে চড়ে বেড়াতে এবং ঘাসের উপর শুয়ে শুয়ে বই পড়তে। তাই বন্ধুরা মজা করে তাকে ডাকে ‘শিম্পাঞ্জি’।

বন্ধুদের এমন আচরণের কারণে শিম্পাঞ্জি নামের এই প্রাণীগুলো সম্পর্কে আরও আগ্রহী হয়ে ওঠে জেন। নিজের নোটবুক, ক্যামেরা আর বাইনোকুলার নিয়ে চলে আসে পূর্ব আফ্রিকার দেশ তানজানিয়ায়।

প্রাকৃতিক পরিবেশে শিম্পাঞ্জিরা কেমন করে থাকে তা নিজ চোখে দেখাই ছিল তার উদ্দেশ্য।

কিন্তু তানজানিয়ায় আসার পর প্রথম প্রথম হতাশ হতে হয় জেনকে। শিম্পাঞ্জিদের কাছে যাওয়া প্রায় অসম্ভব বলে মনে হয়। তাকে দেখা মাত্রই এরা দৌড়ে পালায়। বইনোকুলার চোখে লাগিয়ে দূর থেকে তাদের দেখা ছাড়া আর কোনো উপায় খুঁজে পায় না সে।

একদিন চমৎকার এক বুদ্ধি আসে জেনের মাথায়। সে এক কাঁদি কলা নিয়ে প্রতিদিন একই সময় একই স্থানে বসে থাকতে শুরু করে। এভাবে একদিন একটা অল্পবয়স্ক শিম্পাঞ্জি কলা খাওয়ার লোভে নিজেই এগিয়ে আসে জেনের কাছে। জেন তাকে কলা খেতে দেয়। শিম্পাঞ্জিটিও জেনের হাত থেকে কলা নিয়েই আবার পালিয়ে যায়।

জেন গুডলদ্বিতীয় দিন ওই শিম্পাঞ্জিটা আবার আসে জেনের কাছে। তবে এবার সঙ্গে এসেছে শিম্পাঞ্জিটার আরও কয়েকটা বন্ধুও। জেন সবাইকে কলা খেতে দেয়। এভাবে সপ্তাহখানেকের মধ্যে তারা সবাই জেনের বন্ধু হয়ে যায়।

ওই আমলে বিজ্ঞানীরা শিম্পাঞ্জিদের সম্পর্কে খুব বেশি কিছু জানতেন না। কেউ কেউ চোখে বাইনোকুলার লাগিয়ে দূর থেকে শিম্পাঞ্জিদের পর্যবেক্ষণ করছেন, অথবা খাঁচায় আটকে এদের নিয়ে গবেষণা চালিয়েছে। জেনই প্রথম যে কিনা একদম প্রাকৃতিক পরিবেশে শিম্পাঞ্জিদের সঙ্গে বসবাস করে তাদের সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়।

সে দিনের পর দিন শিম্পাঞ্জিদের সঙ্গে গাছে গাছে চড়ে বেড়ায়। সাংকেতিক ভাষায় এদের সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করে। এদের মতো একই খাবার খেতে থাকে জেনও।

মানুষের সঙ্গে শিম্পাঞ্জিদের অনেক মিল খুঁজে পায় জেন। যেমন- এরাও মানুষের মতোই সমাজবদ্ধ হয়ে বসবাস করে। তাছাড়া শিম্পাঞ্জিরা খুবই বুদ্ধিমান। এরা নিজেদের মধ্যে কথা বলার জন্য একধরনের সাংকেতিক ভাষা ব্যবহার করে। এমনকি প্রয়োজন হলে ছোটখাট হাতিয়ারও তৈরি করতে পারে। এসব হাতিয়ার ব্যবহার করে নিজেদের মধ্যে যুদ্ধে অংশ নেয়।  

একবার জেন একটা আহত শিম্পাঞ্জিকে বিপদ থেকে উদ্ধার করে। পরে শিম্পাঞ্জিটা সুস্থ হয়ে উঠলে সে জেনকে অনেকক্ষণ জড়িয়ে ধরে থাকে। যেন বিপদ থেকে উদ্ধার করার জন্য জেনকে ধন্যবাদ জানাচ্ছে সে।

জেনের মতে, শিম্পাঞ্জিরা হলো মানুষের জাত ভাই। পরে বিজ্ঞানীরা শিম্পাঞ্জির ডিএনএ গবেষণা করে দেখা যায়, এদের জিন সংকেত ৯৯ শতাংশই মানুষের অনুরূপ।

বাংলাদেশ সময়: ১৭৪১ ঘণ্টা, মার্চ ১৬, ২০১৮
এনএইচটি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।