ঢাকা, শনিবার, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ২৮ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

লেখার রীতির পরিবর্তনের কথা

ইমরুল ইউসুফ | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৩০ ঘণ্টা, নভেম্বর ২০, ২০১১
লেখার রীতির পরিবর্তনের কথা

পাহাড়ের গুহার দেয়াল যেমন ছিল প্রাচীন যুগের মানুষের প্রথম কাগজ, তেমনি পাথরের ছুঁচলো মুখই ছিল তার প্রথম কলম। পাথরের তৈরি এ কলমেই প্রথম লেখালেখি শুরু হয়।

তখন পাথর খোদাই করে অক্ষরগুলি লেখা হতো উপর থেকে নিচের দিকে।

এইভাবে একেকটি লাইন তৈরি হলে বাম দিক থেকে আরেকটি লাইন খোদাই করা হতো। এ লাইনগুলো ছিল ছোট ছোট। একটি পাথরে ছোট অনেকগুলো লাইন থাকতো। এগুলি পড়তে হতো ডান দিক থেকে বাম দিকে। পরে যখন মাটির চাকতিতে লেখা শুরু হলো তখন লেখার রীতির পরিবর্তন হয়।

আজ আমরা যেভাবে লিখি অর্থাৎ বাম থেকে ডানে, সেভাবেই শুরু হয় লেখালেখি। লাইনগুলো তখন সোজাসুজি লেখা হতো।

আরবি, ফার্সি, উর্দু ছাড়া অন্যান্য সবা ভাষারই লেখার রীতি হচ্ছে বাম থেকে ডান দিকে। তোমরা তো জানো আরবি, ফার্সি, উর্দু ভাষা লেখা হয় ডান থেকে বাম দিকে। অবশ্য চীনা ও জাপানী ভাষায় লেখা হয় উপর থেকে নিচ বরাবর।

ডানদিক থেকে বামদিক বা বামদিক থেকে ডানদিকে লেখার রীতি ছাড়াও প্রচীনকালে কোনো কোনো ক্ষেত্রে লাইনগুলো গোলাকৃতি করে লেখা হতো। আনুমানিক ১০৫ অব্দে চীনে কাগজ আবিষ্কৃত হওয়ার আগ পর্যন্ত মানুষ পাথর, পোড়া মাটির চাকতি, গাছের পাতা, গাছের ছাল কিংবা পশুর চামড়ায় লিখত।

পাথরের গায়ে বা ইটের চাকতিতে যারা অক্ষর খোদাই করে লিখত তারা হাতুড়ি, বাটালি ব্যবহার করতো। পাথর কিংবা ইটে লিখতে প্রয়োজন হতো তীক্ষè শলাকা। সবাই আবার এভাবে লিখতে পারতো না। এজন্য সৃষ্টি হলো বিশেষ শিল্পী গোষ্ঠী। তাদের কাজই ছিল পাথরের গায়ে, ইটের চাকতিতে, চামড়ায় লেখা। নির্দিষ্ট পারিশ্রমিকের বিনিময়ে তারা একাজ করতো।

একেক জন মানুষের হাতের লেখা ছিল একেক রকম। ফলে অক্ষরের মাত্রা, অক্ষর সাজানো, এমন কী অক্ষরের চেহারা একটু একটু করে পাল্টাতে লাগল। কারো লেখা ছিল জড়ানো, কারো লেখা ছিল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন।

ফলে বর্ণমালার ছাঁচেরও একটু একটু করে পরিবর্তন হতে শুরু করলো। আর সেই ধারাবাহিকতায় আমরা এখনো লিখে যাচ্ছি। লেখাগুলো পড়ে যাচ্ছি।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।