ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

শান্তিপুরের রাজা-রানি (শেষ পর্ব)  

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৩৮ ঘণ্টা, জুন ১৭, ২০১৯
শান্তিপুরের রাজা-রানি (শেষ পর্ব)   গ্রাফিক্স ছবি

শান্তিপুরের রাজা-রানি (পর্ব-৪)
রাজা-রানির অবর্তমানে কে রাজ্যের শাসনভার গ্রহণ করবে, কে হবেন রাজা বা রানি। দুই রাজ্যের রাজা ও রানি এসব নানান কথা চিন্তা করলেন। দুই রাজ্যের মন্ত্রী, সভাসদ ও গণ্যমান্য লোকদের পরামর্শ ক্রমে রাজা ও রানি উভয়েই সিদ্ধান্ত নিলেন যে, তাদের সন্তানদের বিয়ে মেনে নেবেন। অবশেষে রাজা ও রানির লোকজনেরা পার্শ্ববর্তী রাজ্য থেকে তাদের সন্তানদের খুঁজে বের করলো।

রাজা ও রানির অভিমতের কথা তাদের জানানো হলো। একথা শুনে রাজা রানির সন্তানেরা খুশি হলো।

অনেকদিন পর হলেও তাদের ইচ্ছা পূরণ হয়েছে। তারপর তারা নিজ নিজ রাজ্যে বাবা-মায়ের কাছে ফিরে গেলো। তাদের বাবা-মাও সন্তানদের কাছে পেয়ে খুশি হলো। সবার মতামত নিয়ে রাজা ও রানি একটি নির্দিষ্ট দিনে সন্তানদের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানের আয়োজন করলো।  

এ উপলক্ষে দুই রাজ্যের সব গণ্যমান্য ব্যক্তিদের দাওয়াত দেওয়া হলো। খুব ধুমধাম করে রাজা ও রানি সন্তানের বিবাহোত্তর অনুষ্ঠানটি সুসম্পন্ন করলেন। রাজা ও রানি আনুষ্ঠানিকভাবে সন্তানদের বিয়ে মেনে নেওয়ায় রাজ্যের লোকজনেরাও খুব খুশি হলো।  

কিছুদিন যেতে না যেতেই একদিন হঠাৎ নূরনগরের রানি অসুস্থ হয়ে মারা গেলেন। রানির অকাল মৃত্যুতে রাজ্যের সবাই খুব কষ্ট পেলো। রাজ্যের চারিদিকে শোকের ছায়া নেমে এলো। রানির অবর্তমানে রানির ছেলে নূরনগর রাজ্যের রাজা হলেন। তারপর নতুন রাজা খুব ভালোভাবে শাসনকার্য পরিচালনা করতে লাগলেন। নতুন রাজাকে পেয়ে প্রজারাও খুশি হলেন। রানির মারা যাওয়ার কিছুদিন পরেই এক দূরারোগ্য ব্যাধিতে হাকিমপুর রাজ্যের রাজা আক্রান্ত হলেন। কয়েকমাস পরেই হাকিমপুর রাজ্যের রাজাও মৃত্যুবরণ করেন। রাজার মৃত্যুতে রাজ্যের সবাই খুব কষ্ট পেলো। এতে রাজ্যে একটা শূন্যতার সৃষ্টি হয়। সারারাজ্যে শোকের ছায়া নেমে আসে। রাজার একমাত্র কন্যা বর্তমানে নূরনগর রাজ্যের রাজার স্ত্রী। রাজ্যের নিয়ম অনুসারে রাজার উত্তরাধিকার হিসেবে রাজার মেয়ে হলেন হাকিমপুর রাজ্যের রানি। নতুন রানিকে পেয়ে হাকিমপুর রাজ্যের সবাই খুশি হলেন।  

নূরনগর ও হাকিমপুর রাজ্যের নতুন রাজা ও রানি দুই রাজ্যকে একটি রাজ্যে পরিণত করার জন্য চেষ্টা করলেন। এতে তারা রাজ্যের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের মতামত নিতে শুরু করেন। এ কারণে তারা বেশ কয়েকটি সভাও করেন। সভায় লোকজনেরা দুই রাজ্যকে একটি রাজ্যে পরিণত করার পক্ষে মত দেন। তারপর দুই রাজ্যের মন্ত্রী, সভাসদ ও গণমান্য প্রজাদের নিয়ে নতুন রাজা ও রানি একটি নির্দিষ্ট দিনে সাধারণ সভা ডাকেন। নির্দিষ্ট দিনে সাধারণ সভা শুরু হয়।  

সভায় দুই রাজ্যের মন্ত্রী, সভাসদ ও গণমান্য প্রজারা উপস্থিত হলেন। তারা সবাই মত দিলেন যে, রাজ্য দু’টি এক হয়ে গেলে তাদের কোনো আপত্তি থাকবে না। অবশেষে সবার সামনে রাজা ও রানি নিজেদের রাজ্যকে বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এবং দু’টি রাজ্যকে ভেঙে একটি রাজ্য গঠন করেন। সবার মতামত নিয়ে নতুন রাজ্যের নাম দেওয়া হলো শান্তিপুর। আর শান্তিপুরের রাজা হলেন বিলুপ্ত নূরনগর রাজ্যের রাজা। আর রানি হলেন বিলুপ্ত হাকিমপুর রাজ্যের রানি।  

অর্থাৎ, রাজা আর রানি দুই রাজ্যেরই রাজত্ব পেলেন। ফলে দুই রাজ্যের দীর্ঘদিনের বৈরিতার অবসান ঘটলো। তারপর থেকে শান্তিপুরে কখনো কোনো অশান্তি, দুঃখ-দুর্দশা, বিশৃঙ্খলা, গোলযোগ দেখা দেয়নি। শান্তিপুরে সুখ-শান্তি ফিরে এলো। শান্তিপুরের রাজা ও রানির শাসন পরিচালনায় সবাই সুখে-শান্তিতে দিনাতিপাত করতে থাকলো।  

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৯
এএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।