ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ব্যাঙ ও বিড়ালছানা | সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৩২ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
ব্যাঙ ও বিড়ালছানা | সুমাইয়া বরকতউল্লাহ্

ডোবার ধারে বসে কয়েকটি ব্যাঙ ঘ্যাঙর ঘ্যঙর ডাকাডাকি করছিল। একটি বিড়ালছানা ছুটে এসে বলল, ব্যাঙভাই, তোমরা এত ডাকাডাকি করছ কেন? ব্যাঙ বলল, আমরা ডাকাডাকি করছি আকাশ থেকে পানি নামানোর জন্যে। ডোবার পানি কমে গেছে। খাবার পাই না ঠিকমতো। আমরা উপোস করছি। 

বিড়ালছানা বলল, উপোস করার দরকার নেই। চলে এসো আমার চাষির বাড়িতে।

পেটভরে খাইয়ে দেবো। ব্যাঙ বলল, তোমার নিজের বাড়ি নেই? চাষির বাড়ি যাবো কেন? বিড়ালছানা বলল, আরে এলেই দেখবে আমি যে কত আদরে আছি। ব্যাঙ বলল, আমরা বিকেলে আসছি।  

থপ্ থপ্ থপ্। ব্যাঙেরা লাফিয়ে চলে এলো চাষির বাড়ি। এত ব্যাঙ দেখে সবার চোখ বড় হয়ে গেলো। একি, ডোবার ব্যাঙ উঠোনে কেন!

বিড়াল বলল, ওদের ঘরে খাবার নেই। তাই ওদের দাওয়াত করে এনেছি। বাড়ির শিশুরা ব্যাঙ দেখে বেজায় খুশি। ওরা ছোটাছুটি করে নানান জাতের খাবার এনে দিল। ব্যাঙেরা পেটভরে খেলো।  

এমন সময় আকাশের মেঘগুলো পানি হয়ে নামতে শুরু করল। ব্যাঙেরা খুশিতে লাফিয়ে উঠে বলল, আমাদের দাওয়াত করার জন্য ধন্যবাদ। আমরা এবার যাই।  

পরের দিন বিড়ালছানা গেলো ডোবার ধারে। ব্যাঙগুলো টুপটাপ ডুব পাড়ছে। লাফালাফি করছে, খেলছে। ব্যাঙেরা বলল, বিড়ালভাই, এখন আর আমাদের কোনো সমস্যা নেই। আজ রাতে তোমার দাওয়াত। চলে এসো। বিড়াল বলল, ঠিক আছে, আমি আসবো।

বিড়ালছানা গেলো ব্যাঙের বাড়ি দাওয়াত খেতে। ডোবার পাড়ে কাদার ভেতরে ব্যাঙেদের ঘর। বিড়ালছানা কোনোমতে চলে গেলো ব্যাঙের বাড়ি। ভারি মজার খাওয়া খেলো। তারপর ব্যাঙের বাড়ি থেকে বিদায় নিয়ে খুশিমনে বেরিয়ে এলো বিড়ালছানা।  

ছানাটি চাষির বাড়িতে ঢুকতেই সবাই সবাই দূর দূর করে তাড়িয়ে দিল। কারণ কাদামাটি লেগে ছানাটি দেখতে এমন হয়েছে যে, কেউ তাকে চিনতেই পারেনি। ছানাটি মনের দুঃখে ফিরে এলো ডোবার ধারে। বলল, ব্যাঙভাই, আমার খুব বিপদ। চাষির বাড়ির লোকেরা আমাকে তাড়িয়ে দিয়েছে। এখন আমি কোথায় যাই।  

ব্যাঙেরা বলল, নিজের বাড়ি না থাকলে এমনই সমস্যা হয়। তবে আমরা থাকতে তোমার কোনো ভাবনা নেই। কারণ তুমিই একদিন আমাদের বিপদে সাহায্য করেছিলে। আমাদের উচিত তোমার বিপদে সাহায্য করা। এখন বিড়ালের সঙ্গে ব্যাঙদের খুব খাতির হয়ে গেলো। খুব ভালো আছে তারা।

বাংলাদেশ সময়: ১৭২৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ১৮, ২০১৯
এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।