কুষ্টিয়া: কুষ্টিয়ায় জালিয়াতি করে প্রায় ১০ কোটি টাকার জমি কুক্ষিগত করার অভিযোগে গ্রেফতার ভুক্তভোগীদের বাড়ির ২৩ বছরের বিশ্বস্ত কর্মচারী এসএম জিয়াউর রহমানের (৪১) দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
রোববার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে পিবিআই কুষ্টিয়া চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জিয়াউরকে সাতদিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে বিচারক ফজলে এলাহী দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর রাজধানীর সবুজবাগের বাসা থেকে জিয়াউর রহমান ও তার প্রথম স্ত্রী সুমনাকে (৩২) গ্রেফতার করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
এ ঘটনায় তাদের নামে একটি মামলা দায়ের করা হয়। গ্রেফতারের সময় প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ততার বিষয়টি স্বীকার করেন।
এসএম জিয়াউর রহমান নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে।
পিবিআই কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার শহীদ আবু সরোয়ার রিমান্ডের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
উল্লেখ্য, জালিয়াতি করে অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী জোবায়দা নাহার শেখ নামে এক নারী ও তার বোন সরকারি কর্মকর্তা জামিলা নাহার শেখের প্রায় ১০ কোটি টাকার জমি কুক্ষিগত করার অভিযোগে ৯ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় নয়জনের নামোল্লেখসহ অজ্ঞাত চারজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।
এর মধ্যে গ্রেফতারকৃতরা হলেন-কুষ্টিয়া সদর উপজেলার দুর্বাচারা গ্রামের বাসিন্দা মৃত শাহ উজির উদ্দিনের ছেলে এবং মনোহরদিয়া ইউনিয়ন ভূমি কর্মকর্তা (তহসিলদার) শাহ মো. মেজবাহুর রহমান (৫৫), নড়াইল জেলার মাধবপাশা গ্রামের হামিদুল শেখের ছেলে এসএম জিয়াউর রহমান (৩৯) এবং তার স্ত্রী নড়াইলের পিরতলী গ্রামেরর মাহতাব উদ্দিনের মেয়ে সুমনা খাতুন (৩০)।
কুষ্টিয়া দেওয়ানী আদালতের কৌসুলি অ্যাডভোকেট আ আ স ম আকতারুজ্জামান মাসুম জানান, সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় জালিয়াত চক্রের দৌরাত্ম বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে শহরের জিরো পয়েন্টে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর বাসভবনের প্রায় ২০ কোটি টাকা মূল্যের সরকারি জমি নিজেদের দাবি করে দখল করে নেওয়ার চেষ্টা এর জ্বলন্ত উদাহরণ। গত ১০ মাসের মধ্যে জালিয়াত চক্রের জাল দলিলে অন্যের জমি দখলের প্রতিকার চেয়ে অন্তত ডজনখানেক মামলা হয়েছে। সেগুলো এখন বিচারাধীন। এসব জাল দলিলের সবগুলোরই কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস থেকে উৎপত্তি হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিস সূত্রে জানা যায়, কমিশন কেস নং ১৫ তাং ১১/০৩/২০২২ দলিল নং ২৫৩৩/২০২২ দাতা জোবায়দা নাহার শেখ ও জামিলা নাহার শেখ এবং গ্রহীতা শাহ মো. মেজবাহুর রহমান ১ কোটি ৯ লাখ ৭০ হাজার টাকার দলিল হয়। কমিশন কেস নং ১৬, তাং ১১/০৩/২০২২ দলিল নং ২৫৩৪/২০২২ দাতা জামিলা নাহার শেখ ও জোবাইদা নাহার শেখ এবং গ্রহীতা শাহ মো. মেজবাহুর রহমান, শামসুল ইসলাম, ইউসুফ হাসাইন ও মো. সাদ্দম খাঁ। দলিল মূল্য ১৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। কমিশন কেস নং ১০, তাং ০৪/০২/২০২২ দলিল নং ১১৪৮/২০২২, দাতা জামিলা নাহার শেখ ও জোবায়দা নাহার শেখ এবং গ্রহীতা শামসুল ইসলাম, ৪ লাখ টাকা মূল্যের দলিল সম্পাদন করেন।
আরও পড়ুন:
ভূমি কর্মকর্তাসহ গ্রেফতার ৩, আতঙ্কিত জমির মালিকরা
সেই ভূমি কর্মকর্তার তিন দিনের রিমান্ড
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৮, ২০২২
এসআই