ঢাকা, শনিবার, ১৩ পৌষ ১৪৩১, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

দুদকের ২৬-২৭ ও আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫-১৬৬ ধারা সম্পূর্ণ আলাদা

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৭, ২০২৩
দুদকের ২৬-২৭ ও আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫-১৬৬ ধারা সম্পূর্ণ আলাদা

ঢাকা: দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) আইন, ২০০৪ এর ২৬ ও ২৭(১) ও আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ ধারা সম্পূর্ণ পৃথক এবং স্বতন্ত্র। তাই দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের মামলার বিচারকাজ স্বাধীনভাবেই চলবে।

প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বে আপিল বেঞ্চ এ রায় দেন। গত ২৫ অক্টোবর দেওয়া রায়ের পূর্ণাঙ্গ অনুলিপি সম্প্রতি সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়।

জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও  তথ্য গোপনের অভিযোগে দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শফিউল আলম ২০০৭ সালের ১৬ আগস্ট রমনা থানায় মামলাটি দায়ের করেন। পাঁচ কোটি ৯৭ লাখ ১৩ হাজার ২৩৪ টাকা জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন ও ৩৩ লাখ ৪৮ হাজার ৫৮১ টাকার তথ্য গোপনের অভিযোগ আনা হয়।  

মির্জা আব্বাসের আইনজীবী সগীর হোসেন লিয়ন জানান, ১৯৯০ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত আয়কর নিয়ে একটি মামলা হয়। সেই মামলায় মির্জা আব্বাসের দণ্ড হয়। আপিলের পর সেই দণ্ডের রায় বাতিল হয় এবং তিনি খালাস পান। একই রকম ফ্যাক্টসে দুদক একটি মামলা করে। আমরা বলেছি একই বিষয়ে দুইবার মামলা চলতে পারে না। কিন্তু বিচারিক আদালত ২০১৮ সালের ১৪ মে এ আবেদন খারিজের পর হাইকোর্টে আবেদন করি। এরপর হাইকোর্ট বিভাগেও ২০১৮ সালের ১৮ নভেম্বর আবেদন খারিজ হয়। পরে আপিল বিভাগে আবেদন করি।  

গত বছরের ২৫ অক্টোবর আপিল বিভাগও মির্জা আব্বাসের আবেদন খারিজ করে দেন।  

রায়টি লিখেন আপিল বিভাগের বিচারপতি ওবায়দুল হাসান। রায়ে আপিল বিভাগ বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ও ২৭(১) ধারায় অনুসন্ধান বা প্রাথমিক তদন্তের জন্য নোটিশ জারির বিধানের কথা বলা আছে।

আয়ের উৎসের সঙ্গে ব্যক্তির সম্পদের অসঙ্গতি পাওয়া গেলে দুদক আইনের ২৭(১) ধারা অনুসারে কমিশন ব্যক্তির সে সম্পদ নিরুপণ করতে বা আয়ের উৎস জানতে প্রাথমিক অনুসন্ধান চালাতে পারে।

দুদক আইন প্রণয়নের উদ্দেশ্য হচ্ছে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা। আর আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ প্রণয়ন করা হয়েছে, আয়কর আদায় ও আয়কর ফাঁকি রোধ করতে। আয়কর সংক্রান্ত নথিতে ভুয়া বা মিথ্যা তথ্য যাচাই-বাছাই এবং আয় গোপন করার শাস্তির কথা বলা হয়েছে এই অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ ধারায়। মূলত আয়কর অধ্যাদেশের ১৬৫ ও ১৬৬ শাস্তিমূলক ধারা। এ দুই ধারায় যে অপরাধের কথা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ পৃথক ও স্বতন্ত্র।  

আপিল বিভাগের মতে, দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ ও ২৭(১) ধারা অনুযায়ী মামলাটির (মির্জা আব্বাসের) বিচারকাজ স্বাধীনভাবেই চলবে। এছাড়া আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ১৬৫, ১৬৬ ধারার অধীনে একটি মামলায় মির্জা আব্বাসকে খালাস দেওয়া হলেও এ মামলার ক্ষেত্রে তা কোনোভাবেই প্রভাব রাখে না।

মামলাটি বর্তমানে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এ সাক্ষ্যগ্রহণ পর্যায়ে রয়েছে।  

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৭, ২০২৩
ইএস/আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।